X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন মিজু আহমেদ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
২৮ মার্চ ২০১৭, ২৩:২২আপডেট : ২৯ মার্চ ২০১৭, ১৪:০৯

কুষ্টিয়ায় মিজু আহমেদের জানাজায় অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা মিজু আহমেদ। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বাদ মাগরিব জানাজা শেষে কুষ্টিয়া পৌর গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। প্রয়াত এই গুণী শিল্পীর ইচ্ছা অনুযায়ী মা-বাবার কবরের পাশেই সমাহিত করা হলো তাকে।

মিজু আহমেদের জানাজায় অংশগ্রহণ করেন শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন, জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, শাহীন সরকারসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।

জানাজার আগে মিজু আহমেদের ছোট ছেলে আশরাফুল আহমেদ তার বাবার আত্মার শান্তি কামনা করে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

এর আগে মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৫টায় মিজু আহমেদের মরদেহবাহী গাড়ি তার নিজ বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়ায় পৌঁছালে আত্মীয়-স্বজন ও ভক্ত-অনুরাগীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। শেষবারের মতো একনজর প্রিয় মানুষটিকে দেখতে ভক্তদের ঢল নামে এখানে। ছুটে আসেন কুষ্টিয়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

প্রসঙ্গত, ‘মানুষ কেন অমানুষ’ নামের একটি ছবির কাজ করতে কমলাপুর থেকে ট্রেনে চড়ে সোমবার (২৭ মার্চ) রাতে দিনাজপুর যাচ্ছিলেন মিজু আহমেদ। পথিমধ্যে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশনে নামিয়ে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতে তার লাশ রাখা হয় পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালের হিমঘরে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় পান্থপথে মিজু আহমেদের বাসায় তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় দীর্ঘদিনের কর্মস্থল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) আরেকটি জানাজা হয়। এখানে অংশ নেন কাজী হায়াৎ, আহমেদ শরীফ, ইলিয়াস কাঞ্চন, টেলিসামাদ, মিশা সওদাগর, ওমর সানি, অমিত হাসান, আমিন খান, সাইমন সাদিক, জায়েদ খানসহ চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা-প্রযোজক ও অন্যান্য কলাকুশলীরা। এরপর কুষ্টিয়ায় নিয়ে আসা হয় তার লাশ।

৬৩ বছর বয়সে থেমে গেলো মিজু আহমেদের জীবনের রেলগাড়ি। ১৯৫৩ সালের ১৭ নভেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্মেছিলেন তিনি। তার বাবা বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম আবুল মোহাম্মদ। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মিজু ছিলেন সবার ছোট। তার বড় ভাই মরহুম লতিফুর রহমান, মেজ ভাই অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান।

চলচ্চিত্রে মিজু আহমেদ নামে পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম মিজানুর রহমান। শৈশব থেকেই তিনি থিয়েটারের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। যুক্ত ছিলেন কুষ্টিয়ার স্থানীয় নাট্যদল নূপুরের সঙ্গে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। 

১৯৭৮ সালে ‘তৃষ্ণা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন মিজু আহমেদ। পরবর্তী কয়েক বছরে ঢালিউডে অন্যতম খলনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন নিজেকে। অসাধারণ অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯২ সালে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

মিজু আহমেদ অভিনীত ছবির তালিকায় আরও উল্লেখযোগ্য- মহানগর (১৯৮১), সারেন্ডার (১৯৮৭), চাকর (১৯৯২), সোলেমান ডাঙ্গা (১৯৯২), ত্যাগ (১৯৯৩), বশিরা (১৯৯৬), আজকের সন্ত্রাসী (১৯৯৬), হাঙ্গর নদী গ্রেনেড (১৯৯৭), কুলি (১৯৯৭), লাঠি (১৯৯৯), লাল বাদশা (১৯৯৯), গুন্ডা নাম্বার ওয়ান (২০০০), ঝড় (২০০০), কষ্ট (২০০০), ওদের ধর (২০০২), ইতিহাস (২০০২), ভাইয়া (২০০২), হিংসা প্রতিহিংসা (২০০৩), বিগ বস (২০০৩), আজকের সমাজ (২০০৪) ইত্যাদি।
অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন মিজু আহমেদ। প্রয়াত অভিনেতা রাজীবকে নিয়ে তার গড়া প্রযোজনা সংস্থা ফ্রেন্ডস মুভিজ থেকে বেশ কয়েকটি ছবি তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘আসামি গ্রেফতার’,‘চালবাজ’ প্রভৃতি। 

/এমএম/জেএইচ/

আরও পড়ুন-
মিজু আহমেদকে সতীর্থদের শেষ বিদায়

চলে গেলেন মিজু আহমেদ

 

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
অবশেষে মুক্তির বার্তা
অবশেষে মুক্তির বার্তা
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!