X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

তিনি ছিলেন সত্যিকারের ‘লড়াকু’ চলচ্চিত্রকার

বিনোদন ডেস্ক
০৪ এপ্রিল ২০১৭, ১৩:৫৮আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০১৭, ১৫:২৮

তিন দশকের শহীদুল ইসলাম খোকন বাংলা চলচ্চিত্রের ‘লড়াকু’ চলচ্চিত্র নির্মাতা শহীদুল ইসলাম খোকন। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) তার না ফেরার দেশে যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হলো।

গেল বছর এমন দিনে সকাল সোয়া ৮টা নাগাদ উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন খোকন। মুখগহ্বরের মোটর নিউরো ডিজিসে (এএলএস) আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। এই গুণী নির্মাতার উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারও এগিয়ে আসে তখন।
বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের অন্যতম গুণী ও মেধাবী নির্মাতা হিসেবে সব মহলের স্বীকৃতি পেয়েছেন শহীদুল ইসলাম খোকন। অভিনয়ও করেছেন অনেকগুলো ছবিতে। তবে চলচ্চিত্র পরিচালনাতেই স্বাচ্ছন্দ্য এবং সফল ছিলেন তিনি।
আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে নব্বইয়ের দশকজুড়ে তার নির্মিত চলচ্চিত্র শাসন করেছে ঢালিউড। মাসুদ পারভেজের (নায়ক সোহেল রানা) পরিচালনায় ‘দস্যু বনহুর’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার মধ্য দিয়ে ১৯৭৫ সালে তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে পদার্পণ করেন। মাসুদ পারভেজের সঙ্গেই ১০ বছর সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার পর ১৯৮৫ সালে ‘রক্তের বন্দী’ চলচ্চিত্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার।
শহীদুল ইসলাম খোকনের প্রথম এবং দ্বিতীয় ছবি ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ হয়। কিন্তু নবাগত নায়ক রুবেলকে নিয়ে ১৯৮৬ সালে মুক্তি পাওয়া তার তৃতীয় ছবি ‘লড়াকু’ ছিল ব্যাপক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র। তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর খোকন রুবেলকে নিয়েই নির্মাণ করেন ‘বীরপুরুষ’, ‘বজ্রমুষ্টি’, ‘বিপ্লব’, ‘উত্থান পতন’, ‘সন্ত্রাস’, ‘টপ রংবাজ’, ‘শত্রু ভয়ংকর’, ‘অপহরণ’, ‘সতর্ক শয়তান’, ‘দুঃসাহস’, ‘লম্পট’ ‘রাক্ষস’, ‘যোদ্ধা’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’, ‘ঘাতক’, ‘ভণ্ড’, ‘নরপিশাচ’, ‘পাগলা ঘণ্টা’ ইত্যাদি।
তার নির্মিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে ‘ম্যাডাম ফুলি’,‘বাঙলা’, ‘টাকা’, ‘স্বপ্নপূরণ’, ‘বিষদাঁত’। সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল ‘চেহারা’। এতে অভিনয় করেছিলেন শাকিব খান ও রেসি।
প্রয়াত বরেণ্য অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদিকে তিনিই বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে সফলভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছিলেন। নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে কমেডি ঘরানার চলচ্চিত্র ‘ভণ্ড’ নির্মাণ করেও তিনি গতানুগতিক ধারাকে ভেঙে দিয়েছিলেন। চলচ্চিত্রের প্রতি অদম্য ভালোবাসার টানে ১৫ বছর আগে ‘পালাবি কোথায়’ চলচ্চিত্র নির্মাণের সময় অর্থ সংকটের কারণে উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের নিজ বাড়ি বিক্রি করে দেন খোকন। যুদ্ধবিরোধীদের নিয়ে চলচ্চিত্র ‘ঘাতক’, নারী জাগরণের চলচ্চিত্র ‘পালাবি কোথায়’ এবং বাংলা ভাইকে নিয়ে চলচ্চিত্র ‘লাল সবুজ’ নির্মাণ করেছেন খোকন।
বিশিষ্ট এ নির্মাতা বাচসাস, প্রযোজক পরিবেশক সমিতিসহ অনেক সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পুরস্কার লাভ করেছেন।
শহীদুল ইসলাম খোকনের জন্ম ১৯৫৬ সালের ১২ই জুন বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ইমামকাঠি গ্রামের মিয়াজি বাড়িতে। সমাজের নানা সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং সমাজবিরোধী শক্তির অপচেষ্টাকে চলচ্চিত্রে বরাবরই তুলে ধরেছেন তিনি।
‘উত্থান পতন’, ‘সন্ত্রাস’ ও ‘বিষদাঁত’ চলচ্চিত্র তিনটিতে অভিনয়ও করেন খোকন। এছাড়া শহিদুল ইসলাম সাচ্চু পরিচালিত ‘ভেগাবন্ড’ ও সৌরজয় চৌধুরী পরিচালিত ‘অবশেষে নাটকে পরিণত হলো’ নামে দুটি নাটকেও অভিনয় করেন তিনি।
ঢালিউডের সত্যিকারের ‘লড়াকু’ এই চলচ্চিত্রকারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে বাংলা ট্রিবিউন পরিবার।
/এমএম/

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
জেফারকে সিনেমায় নিয়েছে ফারুকীকন্যা ইলহাম!
জেফারকে সিনেমায় নিয়েছে ফারুকীকন্যা ইলহাম!
ঈদে আরিয়ানের একমাত্র নির্মাণ ‘তখন যখন’
ঈদে আরিয়ানের একমাত্র নির্মাণ ‘তখন যখন’
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!