X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অবশেষে উন্মুক্ত হলো সুচিত্রা সেনের বাড়ি

ইমরোজ খোন্দকার বাপ্পি, পাবনা
০৭ এপ্রিল ২০১৭, ১৬:২৩আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০১৭, ১৯:২১

সুচিত্রা সেন অবশেষে সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বাংলা চলচ্চিত্রের তথা উপমহাদেশের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের পাবনার পৈত্রিক বাড়ি।

এই মহানায়িকার ৮৬তম জন্মদিন (৬ এপ্রিল) উপলক্ষে এদিন সকাল ১১টায় পাবনা শহরের হেমসাগর লেনে সুচিত্রা সেনের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িতে তার জন্মদিনের কেক কাটা হয়। এর পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রুহুল আমিন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রলয় চাকীসহ উপস্থিত অতিথিরা সুচিত্রার বাড়িতে স্বল্প পরিসরে স্মৃতি সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন।
এ সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সংগ্রহশালাটি ঘুরে দেখেন। প্রাথমিকভাবে এ সংগ্রহশালায় সুচিত্রা সেনের বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সুচিত্রার জন্মদিনে কেক কাটা হয় সেই বাড়িতে সংগ্রহশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর পরই মহানায়িকার স্মৃতিধন্য এই বাড়ি দেখতে ভিড় করছেন দেশী-বিদেশী পর্যটকরা। বাংলা চলচ্চিত্রের সম্রাজ্ঞী সুচিত্র সেনের শৈশব ও কৈশরের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি সীমিত পরিসরের সংগ্রহশালা করায় খুশি হলেও সুচিত্রা ভক্তদের দাবি পূর্ণাঙ্গ একটি সংস্কৃতি ইনিষ্টিটিউট গড়ার।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পর্দায় মোহনীয় উপস্থিতি, অনন্য সুন্দর দু’চোখ আর ঠোঁট বাকানো হাসি দিয়ে কোটি দর্শকের মন কাড়া মহানায়িকা সুচিত্রার বাড়ি যে পাবনায় তা সবারই জানা। সুচিত্রা সেনের পাবনার পৈত্রিক বাড়ি স্বাধীনতা বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের কবল থেকে দখলমুক্ত করা হয় ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই। হাইকোর্টের নির্দেশে সেখানে সংগ্রহশালা তৈরির নির্দেশও দেয়া হয়। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সংগ্রহশালার কাজ থেমে থাকায় অরক্ষিত বাড়িটি পরিণত হয়েছিল মাদকসেবীদের আখড়ায়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে মহানায়িকার বাড়ির বেহাল দশার কথা আলোচিত হলে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে পাবনার সহকারি কমিশনার (ভূমি) সরকার অসীম কুমার জানান, বাড়িটি দখলমুক্ত করার পর থেকে জেলা প্রশাসন তালা বদ্ধ করে রাখায় সেখানে মাদক সেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়। বিষয়টি জানার পর জেলা প্রশাসন খুবই স্বল্প পরিসরে সংস্কার করে সীমিত পরিসরের সংগ্রহশালা করায় বাড়িটি সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে রক্ষনা বেক্ষনের জন্যে সামান্য পরিমানে টিকিটের ব্যবস্থা করা হয় বলেও তিনি জানান।
এদিকে সীমিত পরিসরের এই সংগ্রহশালা দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন দেশ বিদেশের দর্শনার্থীরা। মহানায়িকার শৈশব কৈশরের স্মৃতিধন্য এ বাড়ি দেখে দারুণ খুশি সুচিত্রা ভক্তরা।
আফগানিস্তানের পর্যটক ফেরজান আফসার বলেন, ‘সুচিত্রা সেন শুধুমাত্র ভারত কিংবা বাংলাদেশের অভিনেত্রী নন, তিনি এই উপমহাদেশ তথা পুরো পৃথিবীরই একজন কিংবদন্তি শিল্পী। তার বাড়িটি ঘুরে দেখার সৌভাগ্য হওয়ায়, জীবনটা ধন্য বলে মনে করছি।’
সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক বাড়ির সামনের অংশ পাকিস্তানের পর্যটক মজিবুল জিয়া বলেন, ‘সংস্কৃতির কোনও দেশ নেই, কোন সীমা পরিসীমাও নেই। সুচিত্রা সেনের হিন্দি সিনেমাগুলি আমি দেখেছি, সত্যিই তিনি একজন কালজয়ী অভিনয়শিল্পী।’   
জয়পুরহাট থেকে ঘুরতে আসা মুন্নুজান বলেন, ‘আমার নিকটাত্মীয়ের বাড়ি পাবনা হওয়ার সুবাদে বহুবার এখানে এলেও ভেতরে ঢুকতে পারিনি। আজ গেট খোলা পেয়ে ভেতরে প্রবেশের পর সত্যিই ভালো লেগেছে।’
এখানে ঘুরতে আসা ঢাকার ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামান্না তাসনিম বলেন, ‘আমি এ যুগের মেয়ে হলেও সুচিত্রা সেন আমার আইডল, তাকে আমার খুবই ভাল লাগে। তার অধিকাংশ সিনেমাই দেখেছি আমি। পত্রিকার মারফত জেনেছি তার বাড়ি পাবনায়। আজ তার বাড়িতে দাঁড়িয়ে আছি, এ অনুভূতি প্রকাশ করার মতো নয়।’
পাবনা ড্রামা সার্কেলের সভাপতি ফারুক হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সুচিত্রা সেনের বাড়িটি জামায়াতের দখলমুক্ত হয়েছে আমাদের আন্দোলনের ফলে। সেখানে একটি চলচিত্রকেন্দ্রিক সংস্কৃতি কেন্দ্র বা ইনিষ্টিটিউট গড়ে তোলার প্রত্যাশা করি।’
প্রসঙ্গত, ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল জন্ম নেয়া মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের শৈশব ও কৈশর কেটেছে পাবনার পৌর এলাকার হেমসাগর লেনের এই বাড়িতে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর স্বপরিবারে কলকাতা চলে যান তারা।
সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা /এমএম/

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
অবশেষে মুক্তির বার্তা
অবশেষে মুক্তির বার্তা
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!