আজ (সোমবার) মহান মে দিবস। প্রতিবছরের মতো এবারও গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর ব্যস্ত থাকবেন গান ও কথামালায়। দিনভর টিভি ও মঞ্চ অনুষ্ঠানে পাওয়া যাবে তাকে। কথা বলবেন মেহনতি মানুষ ও তাদের জন্য তৈরি গান নিয়ে। এসব বিষয়ে রবিবার সন্ধ্যায় মুখোমুখি হয়েছেন বাংলা ট্রিবিউন-এর।
বাংলা ট্রিবিউন: এবারের মে দিবসে আপনার অনুষ্ঠান সূচি কেমন?
ফকির আলমগীর: আজকের দিনের প্রধান আয়োজন হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। মে দিবসের এই বিশেষ আয়োজন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটা শুরু হবে বিকাল ৩টায়। এরপর আরও একটি সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নেব। এছাড়া দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাটবে বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে।
বাংলা ট্রিবিউন: প্রতি বছরই এই দিনে টিভিতে অনুষ্ঠানগুলোতে অনেক কথাই আলোচনা হচ্ছে। আসলেই খেটে খাওয়া মানুষদের জীবনমানে কোনও পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করেন?
ফকির আলমগীর: অবশ্যই। একসময় শ্রমিক ভাইয়েরা রক্ত দিয়েছেন। আন্দোলন করেছেন। যার ফলে দেশে দেশে শ্রমিকের অনেক অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আজ আমরা মে দিবস পালন করি। কেউ হয়তো উৎসবের মতো করে দিবসটা কাটায়। কিন্তু এটা ঠিক যে, আমরা স্মরণ করছি, তাই না? অন্তত তাদের কথা বিশেষভাবে ভাবছি। এই ভাবনটাকে ছোট করে দেখার অবকাশ নেই।
বাংলা ট্রিবিউন: তা হয়তো ঠিক। কিন্তু নিজের পূর্ণ অধিকারের বিষয়ে শ্রমিকদের মধ্যে কি আদৌ কোনও সচেতনতা তৈরি হয়েছে?
ফকির আলমগীর: ‘আমরা জানি না শোকের সাগরে অথৈ জোয়ারে ভেসে যেতে, আমরা জানি না হতাশার কাছে পরজয়কে টেনে নিতে।’
কেন দুঃখি, দরিদ্র মানুষই শুধু তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলবে? কেন সামাজিক, রাজনৈতিক শক্তি তাদের পাশে দাঁড়ায় না- এ কথা আমি বহুবার বলেছি। ট্রেড ইউনিয়নকে ক্ষমতা দিতে হবে, নারী শ্রকিকদের মর্যাদা দিতে হবে, শ্রমিকদের তাদের ন্যায্য অধিকার দিতে হবে- এগুলো খুব দরকার। সেই দরকারের কথাই আমি বলে আসছি গানে-কথায়। তাছাড়া শুধু শ্রমিকদের মধ্যে সচেতন হতে হবে কেন? অন্যদেরও তো সচেতনতা জরুরি।
বাংলা ট্রিবিউন: সম্প্রতি হাওর অঞ্চলে বিপর্যয় ঘটে গেল। এর আগে ছিল রানা প্লাজা বিপর্যয়ের দিবস। আপনার অনুষ্ঠানগুলোতে এগুলো নিয়েও কথা বলবেন?
ফকির আলমগীর: অবশ্যই। আমি অলরেডি বলছি। এ পর্যন্ত রেকর্ডেড যত অনুষ্ঠান হয়েছে, সেখানে হাওরের কান্নার কথা তুলে ধরেছি। রানা প্লাজার শ্রমিদের সহযোগিতার কথা বলেছি। শিল্পী কিন্তু সহায়ক হিসেবে কাজ করবেন। নেতা শ্রমিকদের জন্য সরাসরি কাজ করবেন। আবার শ্রমিক বান্ধব সরকারও হতে হবে। তবেই এগুলো কাটিয়ে উঠবে।
বাংলা ট্রিবিউন: কোন কোন টিভি অনুষ্ঠানে আজ আপনাকে পাওয়া যাবে?
ফকির আলমগীর: আমার সকাল শুরু হবে ‘চায়ের চুমুক’ দিয়ে। এটিএন বাংলায় এটি সরাসরি সম্প্রচার হবে। সকাল ১০টায় একুশে টিভির ‘একুশের সকাল’, চ্যানেল আইতে থাকছে প্রামাণ্যচিত্র ‘ওরা কাজ করে’। এছাড়া সন্ধ্যাবেলায় ‘শুভ সন্ধ্যা’ ধরনের চারটি অনুষ্ঠান চারটি চ্যানেলে হবে। রাতে দেশ টিভিতে ‘সোজা কথা’ টক শো’তে থাকছি। এটি রাত পৌঁনে ১২টা থেকে শুরু হবে।
বাংলা ট্রিবিউন: জানা গেছে মে দিবস উপলক্ষে আপনার গানের অ্যালবাম আসছে। সেটার কী অবস্থা?
ফকির আলমগীর: মহান মে দিবসকে উপলক্ষ করে কলেরগান মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে প্রকাশ হচ্ছে মিশ্র অ্যালবাম ‘চল মজদুর’। অ্যালবামের গান লিখেছেন গোলাম মোর্শেদ। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন বাসুদেব ঘোষ। এছাড়া হেমাঙ্গ বিশ্বাস স্মারক গ্রন্থ বের হচ্ছে। নাম ‘সুরমা নদীর গাংচিল’। এটি অনন্যা প্রকাশনী থেকে বের হচ্ছে। তাই গান, অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এবার লেখাতেও আমাকে পাওয়া যাবে।
ফকির আলমগীরের কণ্ঠে ‘জন হেনরি’:
/এম/এমএম/