X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১
৩ পেরিয়ে বাংলা ট্রিবিউন

এই জীবনের অর্থ কোথায়

বাপ্পা মজুমদার
১৩ মে ২০১৭, ০০:০১আপডেট : ১৩ মে ২০১৭, ০০:৫৯

প্রকৃতির সবেচেয়ে সত্য শব্দটির নাম মৃত্যু! তাহলে এই জীবনের অর্থ কোথায়? এটিও এক চিরন্তন প্রশ্ন। এ প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টায় আমরা ব্যস্ত অবিরত। আমাদের কাছে (আমরা যারা সমমনা) এর উত্তর- আমাদের রেখে যাওয়া কাজ কিংবা সৃষ্টি উদ্ভাবন। ব্যক্তিগত জীবন সেখানে একেবারেই গৌণ বলে আমি মনে করি।

লাকী আখন্দ আমাদের ব্যক্তিগত জীবন সফল না অসফল- তার বিচারের ভার কারও ওপরেই নয়। সেটা নিতান্তই ব্যক্তিগত। এবং বিষয়টিকে সে পর্যায়ে রাখাটাই শ্রেয়। আমাদের ধর্তব্য তাই হওয়া উচিত- যা আমাদের সমাজ, পারিপার্শ্বিকতা, সাহিত্য, বিজ্ঞান, সংগীত তথা আমাদের রাজনীতি-সংস্কৃতির পরিমণ্ডলে কী প্রভাব রাখছে। তা জনমনে কল্যাণকর কিনা! যদি হয় তাহলে সেটাই আমাদের বাঁচিয়ে রাখবে।

ইতিহাসের রাস্তায় এর স্থান হবে কিনা তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু সুস্থ চর্চা, সার্বিকভাবেই সকলের জন্য কল্যাণকর হবে এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।

এর উদাহরণ আমাদের চারপাশেই আছে। কতটুকু তার দৃষ্টিগোচর তা দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে। আমার কাছে এর জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ সদ্য প্রয়াত সর্বজন শ্রদ্ধেয় লাকী আখন্দ। ভেবে দেখুন, এ মানুষটির সৃষ্টি আজও কত জীবন্ত! তার সুর-সংগীতায়োজন আজও কীভাবে আমাদের আন্দোলিত করে। এখনও কী আধুনিক! কতগুলো প্রজন্ম ধরে আমরা তার করে যাওয়া সৃষ্টিগুলোকে কত যত্নে আর ভালোবাসায় লালন করে আসছি। এখনও সদ্য কথা বলতে পারা শিশুটিও আধো আধো উচ্চারণে গেয়ে উঠতে চায়- ‘মামুনিয়া’, ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’, ‘কে বাঁশি বাজায় রে’ গানগুলো।

কী বিস্ময়! বিস্মিত হই, আরও ভালোবেসে ফেলি তার সৃষ্টিকে। এ মানুষগুলো এভাবেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বেঁচে থাকবেন। বেঁচে থাকার সার্থকতা এখানেই। এ আমার বিশ্বাস। তার এমন মৃত্যুই আমার কাম্য। যেখানে শারীরিক মহাপ্রস্থান ম্লান হয়ে যায় সৃষ্টির কাছে।

এরকম একজন সৃষ্টিশীল মানুষের প্রতি রাষ্ট্র ও সমাজের করার আছে অনেক কিছুই; যা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে অত্যন্ত জোরালোভাবে। তার উপযুক্ত সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন- যা শুধু দেখানোর জন্য নয়। বিশ্বাস নিয়ে তাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান দেওয়ার। এবং অবশ্যই তা তার জীবদ্দশায়, শুধু মৃত্যুর পরে নয়।

বাপ্পা মজুমদার ‘মরণোত্তর পুরস্কার’ বা ‘মরণোত্তর সম্মাননা’ বিষয়টির প্রতি আমার ব্যক্তিগতভাবে ঘোরতর আপত্তি আছে। বরং জীবদ্দশায় এ সম্মাননা তাকে আরও উৎসাহিত করে। তার সৃষ্টির প্রতি তিনি আরও  দায়বদ্ধতা অনুভব করেন। যা তার পরবর্তী সৃষ্টিকে আরও সৃষ্টিশীল অর্থে প্রভাবিত করে।

সমাজ ও সংস্কৃতিতে তার আশাজাগানিয়া প্রভাব ফেলে। আমরা সকলে সমষ্টিগতভাবে উপকৃত হবো তবেই। এই চর্চা এখন আরও বেশি প্রয়োজন বলে বিশ্বাস করি।

জীবন সুন্দর! অনেক বেশি সুন্দর! মৃত্যুও সুন্দর হোক। যে মৃত্যু সৃষ্টিশীলতার কাছে ম্লান হয়ে আরও  জীবন্ময়ী হয়ে ওঠে- এই প্রার্থনা!

বাংলা ট্রিবিউনের প্রিয় বন্ধুদের জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

লেখক: সংগীতশিল্পী

/এমএম/

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি মিশা, সম্পাদক ডিপজল
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি মিশা, সম্পাদক ডিপজল
জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
কান উৎসব ২০২৪জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
ভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!