২০১২ সালের এই দিনে (১৯ জুলাই) দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ পরপারে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তার চলে যাওয়ার দিনটি বিশেষভাবে স্মরণ করছেন ভক্ত ও পরিবারের সদস্যরা।
এদিন সকাল ১১টায় গাজীপুরের নন্দন কানন নুহাশ পল্লীতে লেখকের সমাধিতে প্রথমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, সঙ্গে ছিলেন দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিত। আরও ছিলেন স্বজন ও ভক্তরা।
শ্রদ্ধা জানানোর পর কথা বলেন শাওন ও হুমায়ূনের ছোট বোন সুফিয়া হায়দার। সুফিয়া জানান, বিখ্যাত এ লেখকের স্মৃতি রক্ষার্থে জাদুঘর তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ঢাকার পল্লবীতে হুমায়ূন আহমেদের যে দোতলা বাড়ি রয়েছে সেটি স্মৃতি জাদুঘর করা হবে।’
অপর একটি জাদুঘর নির্মাণের কথাও জানান শাওন। পাশাপাশি তিনি ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণের কথাও তুলে ধরেন। মেহের আফরোজ শাওন বলেন, ‘ক্যানসার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার যে স্বপ্ন ছিল তা আমার একার পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এদেশের গুণীজন, নীতিনির্ধারক যারা রয়েছেন, হুমায়ূন আহমেদের পাঠক, ভক্ত শুভাকাঙ্ক্ষী, দর্শক যারা রয়েছেন এজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। নুহাশ পল্লী হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে প্রিয় স্থান। তিনি সবুজকে যেভাবে ভালবাসতেন সেভাবেই নুহাশ সাজানো গোছানো রয়েছে আজও। সবুজ বৃক্ষের ছায়ায় তিনি শুয়ে আছেন। এখানেই গড়ে তোলা হবে হুমায়ূন জাদুঘর। নেত্রকোণায় তার যে স্কুলটি রয়েছে সেটির জেএসসি ও এসএসসির ফলাফল শতভাগ ভালো। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এ প্লাস পেয়েছে। এ দুটি স্বপ্ন তার ভালভাবেই বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে আমার মনে হয়েছে।’
শাওন আরও বলেন, ‘আমি তার অপর স্বপ্ন (ক্যানসার হাসপাতাল) বাস্তবায়নে সকলকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।’
শাওন গভীরভাবে অনুরোধ করে বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের এ স্থানটি (নুহাশ পল্লী) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বছরের বিভিন্ন সময়ে অগণিত দর্শক-ভক্ত-পাঠক নুহাশ পল্লীতে আসেন। এখানে যাতায়াতের রাস্তাটি গত তিন বছর যাবত মানুষের চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তাটি চলাচল উপযোগী করতে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকসহ সকলের প্রতি অনুরোধ জানাই।’
এদিক হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে বেশ কিছু কর্মসূচি চলছে বুধবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকে। এ বিষয়ে গাজীপুরের হিমু পরিবহনের প্রধান সমন্বয়কারী নাসরিন সুলতানা বেবী বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহে ৫শ বনজ, ফলজ ও ঔষুধি গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে। এছাড়াও হিমু পরিবহনের পক্ষ থেকে কোরআন খতম চলছে। ক্যানসার সচেতনতায় সারাদেশব্যাপী লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। নেত্রকোণায় হুমায়ূন আহমেদের শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে বিভিন্ন সময় প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। নুহাশ পল্লীর শোক বইতে ভক্ত-দর্শনাথীদের স্বাক্ষর সংগ্রহ চলছে। আগামী তিন দিন এ কর্মসূচি চলবে।’
প্রসঙ্গত, জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি।
/এম/এমএম/