লায়লা হাসান। এ দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ভিন্ন এক পরিচ্ছেদের নাম। চিরসবুজ এ নৃত্য-অভিনয়শিল্পী জীবনের ৬৯টি বসন্ত পার করে আজ ৭০-এ পা দিলেন। আজ (৮ আগস্ট) জন্মদিন তার।
নাচ, নাটক, সংগঠন ও চলচ্চিত্রে সমানতালে এগিয়ে গেছেন তিনি। আজকের দিনটিও ব্যস্ততায় কাটবে তার।
কেমন করে কাটাবেন এ জন্মদিনটি?
উত্তরে...
লায়লা হাসান: সকাল সাড়ে ১০টায় আরটিভিটিতে ‘তারকালাপ' অনুষ্ঠানে থাকব। এর ঠিক পরপরই উপস্থিত হতে হবে চ্যানেল আইয়ের ‘তারকা কথন’ অনুষ্ঠানে। এ দুটি আয়োজনই সাজানো হয়েছে আমার জন্মদিন উপলক্ষে। এরপর সোজা বাসায়। হয়তো বাসায় সংগঠনের লোকজন ভিড় করবেন। এছাড়া পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সময় কাটাতে হবে।
পরিবারের সদস্যদের জন্য ভিন্ন কিছু থাকছে?
লায়লা হাসান: বাসায় আমি কেকের আয়োজন করতাম না। কিন্তু নাতি-নাতনিদের আবদারে এ জিনিসটি এখন আমার জন্মদিনেও থাকে। সাধারণত বাঙালি খাবার-দাবার তৈরি করা হয়। তবে নাতি-নাতনিদের কথাও তো মাথায় রাখতে হবে। দেখা যায়, তারা মধ্যরাতে ফুল, কেক নিয়ে তারা হাজির। ব্যস, উৎসব শুরু।
সেই যে শুরু আপনার কাজ করা। আসলে আপনার কাজের শুরুটা কত সালে! ষাটের দশক? নির্দিষ্ট করে কোন সালটা হবে?
লায়লা হাসান: ১৯৬৫ হবে। বিটিভি শুরু হলো ১৯৬৪ সালের শেষ সপ্তাহে। বিটিভির শুরু থেকেই কাজ করছি। ডিআইটির ছোট ভবনে নির্মিত বিটিভির অসাধারণ কাজ হলো উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের লেখা 'মুখরা রমণী বশীকরণ' নাটক। নাটকটির প্রযোজক ছিলেন মুস্তাফা মনোয়ার। কঙ্কাবতীর ঘাটে, রক্তকরবী, ছুটি, মায়ার খেলা, রাজা রাণী- আরও অনেক কাজ করেছি। তবে নাচ নিয়েই বেশি সময় পার করেছি।
বিটিভির কাজ বলতে অনেকে আপনাকে ১৯৮০ সালের দিকে ‘রুমঝুম’-এর উপস্থাপিকা হিসেবে বেশি স্মরণ করেন।
লায়লা হাসান: না, এটা তো অনেক পরে করা। তবে এর আলাদা একটা গুরুত্ব আছে। নাচ নিয়ে এটিই প্রথম প্রতিযোগিতামূলক আয়োজন। দেশের অনেক শিল্পীই এর মাধ্যমে উঠে এসেছে। অনুষ্ঠানটি এখনও উপস্থাপনা করছি আমি! মাঝে কিছুদিন বন্ধ ছিল।
তবে অনেকেই উল্টাপাল্টা করে ফেলেন। ধরে নেয়, এটাই আমার প্রথম নাচের অনুষ্ঠান। আমার বিয়ে হয় ১৯৬৫ সালে। একবার তো এক জায়গায় লিখে ফেলল- আমার বিয়ে ৫৬ সালে! উল্টো করে দিয়েছে সংখ্যা! মানে আমার জন্ম ৪৭ সালে আর বিয়ে ৫৬ সালে! মাত্র ৯ বছরে বিয়ে! কী অদ্ভুত অবস্থা!
নাচ নিয়ে আপনার অবদান অনস্বীকার্য। যদি অভিনয়ের কথা জানতে চাই। কতগুলো নাটকে অভিনয় করেছেন?
লায়লা হাসান: এটা তো বলা মুশকিল। খুব বেশি হবে না হয়তো। আর বিভিন্ন সংগঠনকেই নিয়মিত সময় দিয়ে চলেছি। এগুলোতে যুক্ত থাকতেই ভালো লাগে।
এখন কোন সংগঠনগুলোতে যুক্ত আছেন?
লায়লা হাসান: খেলাঘর, সেক্টর কমান্ডার ফোরামের নারী পরিষদ, উদীচী, এশিয়াটিক সোসাইটিতে যুক্ত আছি। বাংলা একাডেমি ও ওয়েস্ট বেঙ্গল ডান্স ফেডারেশনের আজীবন সদস্য হিসেবে আছি। তবে খেলাঘর ও সেক্টর কমান্ডার ফোরাম নিয়েই বেশি ব্যস্ত।
লায়লা হাসানের সঙ্গে কথার এখানেই শেষ নয়। একুশে পদকপ্রাপ্ত এ মানুষটি জানালেন নবীনদের কাছে তার প্রত্যাশার কথা। চান, নবীনরা আরও বিনয়ী হোক, কাজের প্রতি আন্তরিক থাকুক।
বাংলা ট্রিবিউন পরিবারের পক্ষ থেকে বর্ষীয়ান এ শিল্পীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
/এম/