X
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

নায়করাজের মৃত্যুতে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে শোক প্রস্তাব গৃহীত

বিনোদন রিপোর্ট
২৮ আগস্ট ২০১৭, ১৭:২৩আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০১৭, ০০:০৭

  রাজ্জাক (১৯৪২-২০১৭ ) বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ্জাকের মৃত্যুতে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সোমবার (২৮ আগস্ট) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নিয়মিত বৈঠকে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়।  

নায়করাজের পাশাপাশি যশোর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা খান টিপু সুলতান এবং জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলটের বাবা সাবেক ফুটবলার শামসুল আলম মোল্লার মৃত্যুতেও শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে সর্বসম্মতিক্রমে।

দেশের এ তিন খ্যাতিমান ব্যক্তির মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। বৈঠকের পর সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন তিনি।


গত ১৯ অাগস্ট খান টিপু সুলতান, ২১ আগস্ট নায়করাজ এবং ২৭ আগস্ট শামসুল আলম মোল্লা মারা যান।

নায়করাজের মৃত্যুর পরপরই শোক প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৃথক বিবৃতিতে তারা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনাও জানান।

বাংলা চলচ্চিত্রকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন রাজ্জাক। তার জন্ম পশ্চিমবঙ্গের টালিগঞ্জে। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল আব্দুর রাজ্জাক। কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় সরস্বতী পূজা চলাকালীন মঞ্চনাটকে অভিনয়ের জন্য তাঁর গেম টিচার রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁকে বেছে নেন নায়ক অর্থাৎ কেন্দ্রীয় চরিত্রে। শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা নাটক বিদ্রোহীতে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়করাজের অভিনয়ে সম্পৃক্ততা।

১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাড়ি জমান রাজ্জাক। প্রথম দিকে তিনি তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে ‘ঘরোয়া’ নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হন। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি আব্দুল জব্বার খানের সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। সালাউদ্দিন প্রোডাকশন্সের ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে নিজ মেধার পরিচয় দেন। পরবর্তীকালে ‘কার বউ’, ‘ডাক বাবু’, ‘আখেরী স্টেশন’-সহ আরও বেশ ক'টি ছবিতে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয়ও করেন। পরে বেহুলা চলচ্চিত্রে তিনি নায়ক হিসেবে ঢালিউডে উপস্থিত হন সদর্পে। তিনি প্রায় ৩০০টি বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র।
১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেশ দাপটের সঙ্গে ঢালিউডে সেরা নায়ক হয়ে অভিনয় করেন রাজ্জাক। এর মধ্য দিয়েই তিনি অর্জন করেন নায়করাজ রাজ্জাক খেতাব। অর্জন করেন একাধিক সম্মাননা। তিনি বেশ ক’বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়াও তিনি জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করেছেন।

নিজের প্রযোজনা সংস্থা রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন থেকে বেশকিছু ছবি নির্মাণ করেছিলেন রাজ্জাক। এর মধ্যে আছে ‘আকাঙ্ক্ষা’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘পাগলা রাজা’, ‘বেঈমান’, ‘আপনজন’, ‘মৌ চোর’, ‘বদনাম’, ‘সৎ ভাই’, ‘চাঁপাডাঙার বৌ’, ‘জিনের বাদশা’, ‘ঢাকা-৮৬’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘মরণ নিয়ে খেলা’, ‘সন্তান যখন শত্রু’, ‘আমি বাঁচতে চাই’, ‘কোটি টাকার ফকির’ প্রভৃতি।
রাজ্জাক অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে— ‘স্লোগান’, ‘আমার জন্মভূমি’, ‘অতিথি’, ‘কে তুমি’, ‘স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা’, ‘প্রিয়তমা’, ‘পলাতক’, ‘ঝড়ের পাখি’, ‘খেলাঘর’, ‘চোখের জলে’, ‘আলোর মিছিল’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘ভাইবোন’, ‘বাদী থেকে বেগম’, ‘সাধু শয়তান’, ‘অনেক প্রেম অনেক জ্বালা’, ‘মায়ার বাঁধন’, ‘গুণ্ডা’, ‘আগুন’, ‘মতিমহল’, ‘অমর প্রেম’, ‘যাদুর বাঁশী’, ‘অগ্নিশিখা’, ‘বন্ধু’, ‘কাপুরুষ’, ‘অশিক্ষিত’, ‘সখি তুমি কার’, ‘নাগিন’, ‘আনারকলি’, ‘লাইলী মজনু’, ‘লালু ভুলু’, ‘স্বাক্ষর’, ‘জজসাহেব’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘দেবর ভাবী’, ‘রাম রহিম জন’, ‘আদরের বোন’, ‘দরবার’, ‘সতীনের সংসার’ প্রভৃতি।

/এসআই/এম/জেএইচ/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
কবিগুরুর  ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী: গঠিত হলো সোসাইটি, দেশজুড়ে বর্ণিল আয়োজন
কবিগুরুর ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী: গঠিত হলো সোসাইটি, দেশজুড়ে বর্ণিল আয়োজন
দুর্গম চর থেকে সিনেমার নাম ভূমিকায় এই শিশু
দুর্গম চর থেকে সিনেমার নাম ভূমিকায় এই শিশু
আচমকা এলো দেড় মিনিটের উসকানিমূলক ‘তুফান’!
আচমকা এলো দেড় মিনিটের উসকানিমূলক ‘তুফান’!
৮ নন্দিত শিল্পীকে নিয়ে আসিফ ইকবালের ‘ঐশ্বর্য’
৮ নন্দিত শিল্পীকে নিয়ে আসিফ ইকবালের ‘ঐশ্বর্য’
কঙ্গনার দাবি: বলিউডের খান-কাপুরদের চেয়েও জনপ্রিয় তিনি
কঙ্গনার দাবি: বলিউডের খান-কাপুরদের চেয়েও জনপ্রিয় তিনি