X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০
ঈদ আয়োজন

যেমন ছিল নায়করাজের ঈদের দিনলিপি

ওয়ালিউল মুক্তা
০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১২:০৪আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:০৮

রাজ্জাক (ছবি: সংগৃহীত) শুধু পরিবার নয়, নায়করাজ রাজ্জাককে ছাড়া এবার মনমরা ঈদ কাটবে দেশীয় চলচ্চিত্র অঙ্গনের। সদ্য প্রয়াত যশস্বী এ অভিনেতার ঈদের দিনগুলো কেমন ছিল, উৎসবটি কীভাবে কাটতেন তিনি, এসব স্মৃতি জানালো ‘রাজ’পরিবার।

ঈদের সময়গুলোতেও রাজ্জাকের মধ্যে ছিল পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা। আয়োজন শুরু হতো কোরবানির ঠিক একদিন আগে। বিপুল উৎসাহ নিয়ে খুব সকালে চলে যেতেন গরুর হাটে। সঙ্গে থাকতেন ছেলে বাপ্পারাজ ও সম্রাট এবং তাদের মামা ও রাজলক্ষ্মী অফিসের দু’একজন কর্মচারী।

নিজে দেখেশুনে গরু বাছাই ও আঙুলগুনে দরদাম করতেন নায়করাজ। কেনার আগে সঙ্গের মানুষগুলোর মন্তব্য জেনে নিতেন। সবাই মাথা নেড়ে একই মত দিলে তবেই তিনি পছন্দের গরু নিয়ে বাসায় ফিরতেন।

রাজ্জাকের ঈদের দিনের শুরুটা হতো নামাজ পড়ে। ধর্মপ্রাণ এ মানুষটি খুব ভোরে ছেলেদের ঘুম থেকে ডেকে তুলতেন। এরপর গোসল সেরে পাঞ্জাবি পরে আতর-সুরমা মাখতেন। ছেলেদেরও পরম স্নেহে মেখে দিতেন। এরপর সবাই মিলে রওনা দিতেন ঈদগাহের দিকে।

ছেলে সম্রাট বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘সবাইকে নিয়েই ঈদের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে ভালো লাগতো আব্বার। আমরা একসঙ্গে নামাজ আদায় করতাম। এরপর বাবা বুকে টেনে কোলাকুলি করতেন। আবার একসঙ্গেই আমরা কোরবানির কাজে অংশ নিতাম।’

নায়করাজ কখনও ঈদের জামাতে অংশ নেননি, এমন স্মৃতি পরিবারের সদস্যদের নেই বললেই চলে। শুধু বছর দুয়েক আগে ব্যতিক্রম হয়েছিল। ওইবার বেশ অসুস্থ হয়ে ছিলেন তিনি।

গরু কোরবানির কাজ রাজ্জাকই দেখভাল করতেন। মাংস ভাগ ও বন্টন করতেন নিজেই। কোথায় কোথায় ও কোন কোন বাসায় যাবে, সবকিছুর পরিকল্পনা হতো তার মাধ্যমে। চেয়ার পেতে বসে সবকিছু সমন্বয় করতেন। কাছের মানুষ, প্রতিবেশী, গরিব কেউ যেন কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে মনোযোগ থাকতো তার।

ঈদের দিন কী খেতেন নায়করাজ, পছন্দের ফর্দতে কোনও খাবার থাকতো কিনা, এমন প্রশ্নগুলোর উত্তরে মিললো বেশ চমকপ্রদ তথ্য। তার প্রিয় খাবার ছিল করলা ভাজি ও ভাত! ঈদের দিনেও তার সহধর্মিণী লক্ষ্মী এ খাবার পরিবেশন করতেন টেবিলে।

সম্রাটের সেলফিতে চলতি বছরের রোজায় পরিবারের সঙ্গে রাজ্জাক বিরিয়ানি-কাচ্চি বা ভারী খাবার মোটেও পাতে তুলতেন না রাজ্জাক। আগে সেভাবে গরুর মাংস না খেলেও শেষের বছরগুলোতে বেশ খেতেন। এছাড়া দেশি মুরগি আর মাছ তার পছন্দের ছিল।

শুধু খাবার নয়, টেবিলজুড়ে মানুষ থাকলেও খুব খুশি হতেন রাজ্জাক। সবার সঙ্গে গল্প করতে করতে খাবার মুখে নেওয়া ছিল তার প্রিয় কাজগুলোর একটি। তাই ঈদের দিন ছাড়াও ‘রাজ’পরিবারের খাবার টেবিল মুখর থাকতো ছেলে, ছেলের বৌ, নাতি-নাতনি ও লক্ষ্মীর সঙ্গে তার কথা এবং খোশগল্পে।

রাজ্জাক (ছবি: সংগৃহীত) শুধু ঈদ নয়, পরের সময়গুলোও রাজ্জাকের পরিবারের সদস্যদের জন্য ছিল আনন্দের। ঘুরতে খুব ভালো লাগতো নায়করাজের। ঈদের ছুটিতে বেড়িয়ে আসতেন কাছের কোথাও দর্শনীয় স্থান। বেশি পছন্দ ছিল কক্সবাজার বা কুমিল্লার দিককার জায়গাগুলো। এছাড়া জন্মস্থান পশ্চিমবঙ্গও তাকে খুব টানতো। হাতে ফাঁকা সময় জড়ো হলেই ছেলে আর নাতি-নাতনিদের নিয়ে ছুটতেন পড়শি দেশে।

উত্তরসূরিরা ‘নায়ক’ পরিচয় পাশে রেখে ভ্রমণপ্রিয়, রসিক আর বন্ধুপরায়ন রাজ্জাককেই এগিয়ে রাখলেন যেন! পরিবারের কোনও সদস্যের মন খারাপ হলে অস্থির হয়ে উঠতেন তিনি। আবার হাসি-আনন্দেও মেতে থাকতেন ছেলেমেয়েদের সঙ্গে। দুষ্টুমিতে নাতি-নাতনিদের আম সাবাড় করতেন হরহামেশা। রাজলক্ষ্মী নামের বাড়িটিকে যেন ‘আনন্দ প্রাসাদে’ পরিণত করেছিলেন তিনি।

বাড়ির নাম কেন ‘লক্ষ্মী কুঞ্জ’? এ প্রসঙ্গে নায়করাজ একবার বলেছিলেন, ‘যখন বাইরে যাই, তখন লক্ষ্মীকে (স্ত্রী) সঙ্গে করে নিয়ে যাই। আর যখন ঘরে ফিরি, তখন লক্ষ্মীর কাছেই ফিরি।’

/এম/জেএইচ/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!