X
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
৫ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা ও মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে কাঞ্চন: বেশি আর নগণ্য কি এক শব্দ হলো (ভিডিও)

ওয়ালিউল মুক্তা
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৫:৫৩আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২৩:১৪

ইলিয়াস কাঞ্চন (ছবি: সংগৃহীত) রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ও তাদেরকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সম্প্রতি মানবন্ধন করে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)। এ আয়োজনে সংগঠনের প্রধান ইলিয়াস কাঞ্চনের একটি বক্তব্য সমালোচিত হয়। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একাত্তরের স্বাধীনতা আমি দেখেছি। সেই সময় আমরা দৌড়ের ওপর থেকেছি। আমাদের মা-বোনের ইজ্জত পাকিস্তানিরা হনন করেছে। আমাদের ভাইদের হত্যা করেছে। কিন্তু তার চেয়েও অনেক বেশি ভয়াবহতা, এত বেশি ভয়বহতা আমার জীবনে দেখিনি।’
সম্প্রতি এ ভিডিওটি বাংলা ট্রিবিউনের হাতে এলে জনপ্রিয় এই অভিনেতা সঙ্গে সেদিনের পুরো বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। তার সে কথোপকথন হুবুহু তুলে ধরা হলো-

বাংলা ট্রিবিউন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে আপনার একটি বক্তব্য সমালোচিত হচ্ছে। ভিডিওতে কিন্তু এ অভিযোগের সত্যতা আছে।

ইলিয়াস কাঞ্চন: অভিযোগের সত্যতার কথা বলছেন, কিন্তু এখানে ‘নগন্য’ শব্দটি নাই। ‘মনে হয় যেন তারচেয়েও বেশি’ বাক্যটা বলেছি। এখানে ‘মনে হয়’ শব্দগুলো আছে। একটা শব্দ যদি এদিক-ওদিক হয়ে যায় তখনই কিন্তু অন্যরকম হয়ে যায়। ভিডিওটি আপনি দেখুন। তারপর কথা বলুন। ‘ওদের থেকে একাত্তরের বর্বরতা নগণ্য’- এটা সেই বক্তব্যে নেই। বলেছি ‘বেশি’ শব্দটি। ‘বেশি’ আর ‘নগন্য’ কি এক শব্দ হলো?

বাংলা ট্রিবিউন: এটা কি আদৌতে বেশি। নৃশংসতার মাত্রা যদি বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে আমাদের ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিলেন। রোহিঙ্গাদের সংখ্যা কত লাখ হবে বলে মনে করেন?
ইলিয়াস কাঞ্চন: এটা সংখ্যার বিষয় নয়, বর্বরতার বিষয়। এ বিষয় যদি বোঝাতে হয়, তাহলে তো ক্লাস নিতে হবে। গতকাল একুশে টিভিতে টক শোতে দেখলাম- এ কথাটিই বলেছেন। একাত্তরের পরে এ ধরনের বর্বরতা আর দেখা হয়নি। সেখানে তারা বলছেন— আমাদের কিন্তু যাওয়ার জায়গা ছিল, অস্ত্র পাওয়ার জায়গা ছিল, ট্রেনিং নেওয়ার স্থান ছিল, আমাদের একটা সরকারও ছিল। এদের কিন্তু কিছুই নেই। এদের কিন্তু কোনও নেতা নাই। আমরা দেশে ফিরবো, লড়বো, জয়লাভ করবো— এমন একটা লক্ষ্য ছিল। এদের কিন্তু তাও নাই। আমাদের দেশ স্বাধীন করার একটা প্রত্যয় ও আশা ছিল। ওদের ক্ষেত্রে কিন্তু ঘটনাটা তা নয়।

বাংলা ট্রিবিউন: ১৯৭১ সালের সঙ্গে বর্তমানের ভয়াবহতার পার্থক্য নিয়ে বলুন।
ইলিয়াস কাঞ্চন: একাত্তরের ভিডিও দেখার সুযোগ পাইনি। তাই আমাদের কিন্তু ওই ভয়াবহতা দেখার সুযোগ নাই। এদের কিন্তু আঙুল কাটা থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাটার লোমহর্ষক দৃশ্য দেখছি। এত যন্ত্রণা দেওয়ার পরই মাথা কাটা হয়েছে। তারপর পেট ছিড়েছে। আবার কালকে একটা ভিডিও দেখলাম— একজনকে মেশিন দিয়ে চামড়া ছিড়ে ফেলছে। তারপর আঙুল ঢুকিয়ে চোখ বের করে ফেলছে। এটা মানুষের পর্যায়ের পড়ে?

বাংলা ট্রিবিউন: রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতার প্রতিবাদে আপনি মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন, বিশ্বনেতাদের ভিডিও বার্তায় আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া অন্য কোনও কার্যক্রমের সম্পৃক্ত হয়েছেন?
ইলিয়াস কাঞ্চন: গতকাল কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়েছিলাম। এটি হলো কুতুপালং ১ নম্বর ক্যাম্প। তাদের মাঝে কিছু ত্রাণ দিয়ে গতকালই ঢাকায় ফিরেছি।

বাংলা ট্রিবিউন: সেখানে কী দেখলেন?
ইলিয়াস কাঞ্চন: তাদের এমন অবস্থা আমরা যে চার কেজি ওজনের ব্যাগ তুলে দেবো, সেটিও তারা নিতে পারছেন না। কারণ মিয়ানমানের সেনাবাহিনী তাদের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, হাত পাতার সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছেন অনেকে।

বাংলা ট্রিবিউন: পরবর্তীতে আর কোনও উদ্যোগ নেবেন?
ইলিয়াস কাঞ্চন: কিছুদিন আগে বন্যার জন্য ত্রাণ দিলাম। এবার রোহিঙাদের পাশে দাঁড়ালাম। এগুলো সব আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকেই করা হয়েছে। নিসচা এরকম উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে।
ইউটিউবে আপলোড হওয়া ইলিয়াস কাঞ্চনের ভিডিওটি: 



 

/এম/জেএইচ/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
‘সরলতার প্রতিমা’ খ্যাত গায়ক খালিদ আর নেই
‘সরলতার প্রতিমা’ খ্যাত গায়ক খালিদ আর নেই
দেশের প্রেক্ষাগৃহে আসছে নোলানের কালজয়ী দুই ছবি
দেশের প্রেক্ষাগৃহে আসছে নোলানের কালজয়ী দুই ছবি
পরীর টলিউড অধ্যায় শুরু
পরীর টলিউড অধ্যায় শুরু
নিজের যে স্বভাব লুকিয়ে রাখেন সারা
নিজের যে স্বভাব লুকিয়ে রাখেন সারা
চাঁদরাতে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে নাটক
চাঁদরাতে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে নাটক