X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

শুভ জন্মদিন: কিংবদন্তি রুনা লায়লা

বিনোদন রিপোর্ট
১৭ নভেম্বর ২০১৭, ০০:০১আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ০০:৫০

রুনা লায়লা/ ছবি: সাজ্জাদ হোসেন টানা পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে গানে গানে উপমহাদেশ মাতিয়ে রেখেছেন রুনা লায়লা। বাংলা, উর্দু, হিন্দি, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, গুজরাটি, বালুচ, ফারসি, আরবি, স্প্যানিশ, ফরাসি কিংবা ইংরেজি, এমন অনেক ভাষার গান পাওয়া গেছে তার কণ্ঠে। আজ (১৭ নভেম্বর) এই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গায়িকার ৬৫তম জন্মদিন।
এ উপলক্ষে বেশ কয়েকটি আয়োজন করা হয়েছে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে।
যেখানে রুনা লায়লা না গাইলেও থাকছে তার গাওয়া গান। গাইবেন দেশের কয়েকজন শিল্পী।
ইতোমধ্যে দর্শকরা হয়তো শুনতে পাচ্ছেন দেশ টিভিতে ‘মিউজিক্যাল নাইট’ অনুষ্ঠান। রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে থেকে এটি সরাসরি প্রচার হচ্ছে। গায়িকা হিসেবে আছেন লুইপা। তিনি রুনা লায়লাকে সম্মান ও তার জন্মদিনের প্রথম প্রহরে শুভেচ্ছা জানিয়ে দুটি গান গাইবেন।
এছাড়া শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকালবেলা থাকছে চ্যানেল আইতে ‘গানে গানে সকাল শুরু’ অনুষ্ঠান। সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে শুরু হতে যাওয়া সরাসরি প্রচার হওয়া এ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন কণ্ঠশিল্পী কোনাল ও ‘ক্ষুদে গানরাজ’-এর শিল্পীরা। এতে রুনা লায়লার গাওয়া গানগুলো গাইবেন তারা।
এছাড়া সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে বিটিভির সরাসরি গানের অনুষ্ঠানে গাইবেন দিনাত জাহান মুন্নী। এ শিল্পী জানালেন, এতে রুনা লায়লার জনপ্রিয় ৭টি গান শোনাবেন তিনি।
এদিকে রুনা লায়লা জানান, জন্মদিন উপলক্ষে বাইরের কোনও অনুষ্ঠান কিংবা আনুষ্ঠানিকতায় তিনি অংশ নিচ্ছেন না। তবে নিজ বাসায় পরিবার ও কাছের বন্ধুদের নিয়ে জন্মোৎসবের আয়োজন হবে এদিন সন্ধ্যায়।

মঞ্চে রুনা লায়লা প্রসঙ্গত, কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লার শুরুটা হয়েছিল প্রথমে নাচ দিয়ে। পাকিস্তানের করাচিতে বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টসে চার বছর নাচ শেখেন তিনি। মা আমিনা লায়লা মেয়েকে নাচ শেখানোর জন্য এখানে ভর্তি করেন।
করাচির একজন উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন বাবা এমদাদ আলী। তবে নাচ ভুলে অজান্তেই গানের ভুবনে ঢুকে পড়েন। বড় বোন দিনা লায়লা গান শিখতেন। বাসায় তাকে গান শেখাতে আসতেন একজন ওস্তাদ। বোন যখন গান করতেন, তার আশপাশেই থাকতেন রুনা। ওস্তাদজি বোনকে যা শেখাতেন, তা তিনি শুনে শুনেই শিখে নিতেন। পরে গুনগুন করে গাইতেন। মেয়ের প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন বাবা-মা। পরে মেয়েকে গান শেখানো শুরু করেন।
এরপর একদিন হঠাৎ করেই সুযোগ আসে মঞ্চে গাইবার। করাচিতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা ওল্ড বয়েজ অ্যাসোসিয়েশন। এখানে গান করার কথা ছিল রুনার বড় বোন দিনা লায়লার। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন দিনা। শেষে বড় বোনের জায়গায় তার গান গাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেদিন ধুমধাম গেয়ে মাত করেছিলেন। সবাই মুগ্ধও হয়েছিলেন।
মাত্র সাড়ে ১১ বছর বয়সে শুরু হয় সিনেমার প্লেব্যাকে গাইবার। সিনেমার নাম ছিল ‘জুগনু’। উর্দু ছবি। পুরো এক মাস চর্চা করেন। ছবির সংগীত পরিচালক ছিলেন মনজুর হোসেন যিনি তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। ১৯৬৫ সালের জুন মাসে ‘জুগনু’ ছবিতে প্রথম তার গান গাওয়া। দ্বিতীয় গানটিও একই ছবির।
এরপর রুনা লায়লা প্রথম বাংলা গান রেকর্ডিং করেন পাকিস্তান রেডিওর ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিসে। পরে ষাটের দশকে বাংলা ছবিতে গান করার জন্য আমন্ত্রণ পান রুনা। চিত্রপরিচালক নজরুল ইসলাম আর সংগীত পরিচালক সুবল দাস ‘স্বরলিপি’ ছবির গান রেকর্ডিং করতে যান লাহোরে। তারা ছবির একটি গান রুনাকে দিয়ে গাওয়ানোর পরিকল্পনা করেন। তখন তিনি দারুণ ব্যস্ত। তবে শুনে রাজি হয়ে যান। লাহোরের বারী স্টুডিওতে রেকর্ডিং করা হয় গানটি। গানটির শিরোনাম ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’। একই গানে আরও কণ্ঠ দিয়েছিলেন মাহমুদুন নবী।  তারপর একজন রুনা লায়লা শুধুই কিংবদন্তি হয়ে ওঠার গল্প শুরু।
সুরকার নিসার বাজমির ১০টি করে তিন দিনে মোট ৩০টি গান রেকর্ডের পর রুনা লায়লা নাম লেখান গিনেস বুকে। ১৮টি ভাষায় গান গাওয়া, নিজের সংগীতজীবন নিয়ে নির্মিত ‘শিল্পী’ ছবিতে অভিনয় করা- এসব মিলিয়ে রুনা লায়লা হয়ে ওঠেন উপমহাদেশের অন্যতম সংগীত কিংবদন্তি হিসেবে।
তরুণকালে রুনা লায়লা একনজরে রুনা লায়লা
জন্মদিন: ১৭ নভেম্বর ১৯৫২
জন্মস্থান: সিলেট
স্বামী: চিত্রনায়ক আলমগীর
বাবা: এমদাদ আলী
মা: আমিনা লায়লা
ভাই-বোন: দুই বোন এক ভাই (বোন- দীনা লায়লা, ভাই- সৈয়দ আলী মুরাদ)
উচ্চাঙ্গ সংগীতে দীক্ষা: ওস্তাদ হাবিব উদ্দিন খান ও আবদুল কাদের পিয়ারাং
গজলে দীক্ষা: পণ্ডিত গোলাম কাদির (মেহেদী হাসানের ভাই)
দর্শকের সামনে প্রথম গান: ৬ বছর বয়সে
গানে প্রথম পুরস্কার: ৯ বছর বয়সে
প্রথম প্লেব্যাক: পাকিস্তানি চলচ্চিত্র ‘জুগনু’তে (বয়স সাড়ে ১১)
বিভিন্ন ভাষায় গান: ১৮টি
এখন পর্যন্ত গানের সংখ্যা: প্রায় ১০ হাজার
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার: সর্বোচ্চ ৭বার


রুনা লায়লার যা কিছু প্রিয়:
প্রিয় সুরকার: সুবল দাস, আলাউদ্দিন আলী, আলম খান
প্রিয় গায়ক-গায়িকা: সুবীর নন্দী ও সাবিনা ইয়াসমিন
প্রিয় স্টাইলিশ গায়িকা: ইরানি গায়িকা গগশ খানম
নিজের গাওয়া প্রিয় গান: যখন আমি থাকবো নাকো
নিজের গাওয়া গান যাদের ঠোঁটে বেশি পছন্দ: পাকিস্তানের রানী, শবনম, এ দেশের শাবানা, ববিতা
যে গানের অনুরোধ বেশি আসে: দমাদম মাস্ত কালান্দার
প্রিয় ছবি: মহানগর (বাংলা), শিন্ডলার্স লিস্ট (ইংরেজি) গুলজার-অমিত কুমারের সঙ্গে রুনা-আলমগীর দম্পতি

/এম/এমএম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
রসায়ন পরীক্ষায় ১০ জনের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’!
রসায়ন পরীক্ষায় ১০ জনের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’!
শাকিবের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা অন্যরকম: চঞ্চল
শাকিবের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা অন্যরকম: চঞ্চল
‘লম্বা’ নায়িকা প্রসঙ্গে কৃতির ব্যাখ্যা
‘লম্বা’ নায়িকা প্রসঙ্গে কৃতির ব্যাখ্যা
জানা-অজানা ১০ তথ্যে সত্যজিৎ রায়
প্রয়াণ দিনে স্মরণজানা-অজানা ১০ তথ্যে সত্যজিৎ রায়
রাজকুমার: নাম নিয়ে নায়িকার ক্ষোভ!
রাজকুমার: নাম নিয়ে নায়িকার ক্ষোভ!