X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

এপার-ওপারে বিজয়ের সেই ক্ষণ

বিনোদন রিপোর্ট
১৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৮:০০আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৭:৪৯


নাসির উদ্দীন ইউসুফ ও সুজেয় শ্যাম। ছবি- সংগৃহীত ১৯৭১ সাল। পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে দেশের ভেতরে লড়ে চলেছেন মুক্তিযোদ্ধা। ডিসেম্বর আসতে আসতেই মুক্তি বাহিনীর হাতে চলে আসে দেশ। অন্যদিকে সীমান্তের ওপারে স্বাধীন বাংলা বেতারের গানসহ বেশ কিছু কাজ চলছিল মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে। মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ যোগাতে একের পর এক গান বাঁধা হয়েছে, সেগুলো পরিবেশন করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের এই দুই প্রেক্ষাপটে অংশ নিয়েছেন দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক শিল্পী। ১৯৭১ সালের বিজয় মুহূর্তে অর্থাৎ ১৬ ডিসেম্বরের সে অবিস্মরণীয় স্মৃতিচারণ করেছেন গেরিলাযোদ্ধা-চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ ও ওপারে স্বাধীন বাংলা বেতারের সুরযোদ্ধা সুজেয় শ্যাম। তাদের স্মৃতিচারণ নিয়েই বিজয় দিবসের আয়োজন-

নাসির উদ্দীন ইউসুফ। ছবি-সংগৃহীত
নাসির উদ্দীন ইউসুফ:
আমি রাস্তায় ছিলাম। তখন আমি সাভার ডেইরি ফার্মের সামনে অবস্থান করছিলাম। আমার দায়িত্ব ছিল মিত্র বাহিনীকে পথ দেখানো। তাদের খবরাখবর রাখা। তারা যেন ঠিক মতো ঢাকায় ঢুকতে পারে- সে ব্যবস্থা করা। মিত্র বাহিনীর সুবিধার্থে আমাদের সেকশনটি কাজ করছিল। আমাদের সেকশন কমান্ডার ছিলেন জামাল। তিনি সামনে ছিলেন। তার সঙ্গে আমি রেডিও অফিস পর্যন্ত যাই। তিনি আমাকে বলেন, কাজটি তুমি পু্রোপুরি শেষ করো। মানে মিত্র বাহিনীর সৈন্যদের থাকা-খাওয়াটা দেখা। সেগুলো করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। রাত আটটায় ঢাকায় প্রবেশ করি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে দেখি সব শেষ। পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করেছে। তখন আমার সঙ্গে জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে দেখা হয়।
এটা ঠিক আমরা আগের দিন অর্থাৎ ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুনছিলাম যে, আগামীকাল এমন কিছু ঘটতে পারে। কিন্তু আমরা শিওর ছিলাম না। ১৬ তারিখে সকালে প্রস্তুতি ছিল ঢাকায় ঢোকার। আর তখন তো আনন্দ করার মতো অবস্থা ছিল না।
একটা ঘটনা বলি, আমি যখন রাতে মায়ের কাছে পল্টনের বাসায় ফিরলাম; মা আমাকে দেখে কেঁদেছেন। আমার ভাইরা পাকিস্তানির বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছিল। তাদের টর্চার করা হয়েছে। যখন মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলাম তখন শত শত লোক আমাকে দেখতে আসে। তাদের অনুরোধে জিপ-৩ রাইফেল ২৮ রাউন্ড গুলি আকাশে ছুড়ি। এটাই ছিল আমার বিজয়ের প্রকাশ।


সুজেয় শ্যাম। ছবি- সংগৃহীত
সুজেয় শ্যাম:

প্রতিদিনের মতো সেদিনও (১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১) গান তৈরি করতে আমরা বসেছি। দেশ নিয়ে অনেক কথাই হয়। আমরা তখনও জানি না, দেশে আসলে কী অবস্থা! আমরা আমাদের কাজটা করে যাই। এরইমধ্যে একজন আমার কাছে এসে বললেন, নতুন গান দরকার, বিজয়ের গান। বিজয়ের গান তো আমাদের কাছে নেই। চিন্তায় পড়ে গেলাম, এত কম সময় বিজয়ের গান কোথায় পাওয়া যায়? সেখানেই উপস্থিত শহীদুল ইসলাম বললেন, অসুবিধা নেই, আমি লিখে দিচ্ছি। তখনই লেখা হলো ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’। গানটি সুর ও অন্যান্য কিছু কাজ করতে করতে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেল। এরইমধ্যে আমাদের ওখানে উপস্থিত হলেন তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলী।
দেশ স্বাধীন হয়েছে এটি প্রথম জানতে পারলাম সৈয়দ নজরুল ইসলামের কাছ থেকে। এরপর অজিত রায়ের নেতৃত্বে আমরা অংশ নিলাম ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’ গানে। আমরা গাইলাম স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম গানটি।

/এম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!