X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার- ২০১৬

পুরস্কার নিতে আমি যাব, সম্ভবত: ফারুক

মাহমুদ মানজুর ও ওয়ালিউল বিশ্বাস
০৫ এপ্রিল ২০১৮, ১৮:৫৫আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০১৮, ১৩:৩২

পুরস্কার নিতে আমি যাব, সম্ভবত: ফারুক অবশেষে বরফ গলার আভাস দিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের নন্দিত নায়ক ফারুক। দিন কয়েক আগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬-এর খসড়া তালিকা প্রকাশ হয়েছিল। সেখানে আজীবন সম্মাননা ক্যাটাগরিতে ‘যৌথভাবে’ নাম এসেছিল তার। এতেই ক্ষোভ ঝরে পড়লো তার কণ্ঠে।
তখন বলেছিলেন, ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে আমার কোনও আগ্রহ নেই। আমাকে যৌথভাবে লাইফটাইম পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে—এ নিয়ে আমার প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে। এই ক্ষোভের যৌক্তিক কারণ হলো এর আগে ১৯বার আমাকে জাতীয় পুরস্কারে সেরা অভিনেতার পুরস্কার দিতে গিয়েও বাদ দেওয়া হয়েছে। আমার অপরাধ আমি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করি।’
পুরস্কার নিতে আমি যাব, সম্ভবত: ফারুক তবে এবার, আজ (৫ এপ্রিল) জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন একটু অন্যভাবে। এমন, ‘এটা আমার জন্য একটা ফাঁদের মতো হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে এ পুরস্কার দেবেন। তাই এ অনুষ্ঠানে না যাওয়াটা তাকে অসম্মান করা। আমি আবারও বলছি, পুরস্কারের প্রতি আমার আগ্রহ নাই। শুধু আপাকে (প্রধানমন্ত্রী) সম্মান জানাতেই সেখানে আমি যাব, সম্ভবত।’
এদিকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার গেজেট আকারে প্রকাশ হওয়ার পর নিজের অনুভূতি জানালেন বরেণ্য অভিনেত্রী ববিতা। তিনি বাংলা ট্রিবিউন বললেন, ‘আমি ভীষণ আনন্দিত।
লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট মানে সারা জীবনের কাজের সম্মান আর স্বীকৃতি। এবার আমাকে এই সম্মাননা জানানো হচ্ছে বলে সত্যিই আমি আনন্দিত আর উচ্ছ্বসিত। আমি যা পরিশ্রম করেছি তার সার্থকতা এটা। আমি এর পুরস্কার সংশ্লিষ্ট সবাইকে ও আমার ভক্তদের ধন্যবাদ দিতে চাই। তাদের ভালোবাসা ছাড়া আমার এ প্রাপ্তি হতো না।’
পুরস্কার নিতে আমি যাব, সম্ভবত: ফারুক আরও প্রতিক্রিয়া জানান ‘আয়নাবাজি’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ নির্মাতা হিসেবে নির্বাচিত অমিতাভ রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ছবি মানুষের জন্য বানাই। পুরস্কার পেলে তো অবশ্যই ভালো লাগে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার মানে অন্যরকম বিষয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বিজ্ঞ বিচারকরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন। তাই ভালোলাগার পরিমাণটা বেশি। আমি ধন্যবাদ জানাই আমার ছবির সঙ্গে জড়িত প্রতিটি মানুষকে। এই সম্মাননা সবার।’
পুরস্কার নিতে আমি যাব, সম্ভবত: ফারুক একই ছবিতে অভিনয়ের জন্য চঞ্চল চৌধুরী নির্বাচিত হলেন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, অভিনয়ের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি। নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছি। আমি বলতে চাই, এ পুরস্কার আমার ভক্তদের। কৃতজ্ঞতা জানাই ‘আয়ানাবাজি’ টিমকে। যাদের সাপোর্ট ছাড়া এটি সম্ভব হতো না।’’
পুরস্কার নিতে আমি যাব, সম্ভবত: ফারুক এদিকে নিজের পরিচালিত ‘কৃষ্ণপক্ষ’ ছবির একটি গান গাওয়ার জন্য এবার শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছে মেহের আফরোজ শাওন। তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমি বলে রাখি, নির্মাতা হিসেবে এখনই এত বড় পুরস্কার পাওয়ার প্রত্যাশা আমি করি না। তবে এ গানটির (যদি মন কাঁদে) জন্য দর্শকের এত বেশি ভালোবাসা পেয়েছি, পুরস্কার আমার আগেই পাওয়া হয়ে গেছে। তারপরও রাষ্ট্র এ স্বীকৃতি দিচ্ছে। এটা অন্যরকম প্রাপ্তি। এ পুরস্কারের কৃতিত্ব আমি দেব গানটির গীতিকার (হুমায়ূন আহমেদ) ও সুরকারকে (এসআই টুটুল)। তাদের চমৎকার লেখা ও সুর না হলে এ পুরস্কার পেতাম না। বরং আমি না পেয়ে যদি তারা স্বীকৃতিটা পেতেন- তবে আমার চেয়ে বেশি খুশি আর কেউ হতেন না।’
পুরস্কার নিতে আমি যাব, সম্ভবত: ফারুক একনজরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৬ তালিকা:
আজীবন সম্মাননা: যৌথভাবে পাচ্ছেন চলচ্চিত্রের দুই কিংবদন্তি ববিতা ও ফারুক।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র: অজ্ঞাতনামা, প্রযোজক ফরিদুর রেজা সাগর।
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: ঘ্রাণ, প্রযোজক এস এম কামরুল আহসান।
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: জন্মসাথী, প্রযোজক একাত্তর মিডিয়া লি: ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
শ্রেষ্ঠ পরিচালক: অমিতাভ রেজা চৌধুরী, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা প্রধান চরিত্র: চঞ্চল চৌধুরী, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্র: যৌথভাবে তিশা, ছবি- অস্তিত্ব ও কুসুম শিকদার, ছবি- শঙ্খচিল।
শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রাভিনেতা: যৌথভাবে আলীরাজ, ছবি- পুড়ে যায় মন ও ফজলুর রহমান বাবু, ছবি- মেয়েটি এখন কোথায় যাবে।
শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রাভিনেত্রী: তানিয়া আহমেদ, কৃষ্ণপক্ষ।
শ্রেষ্ঠ খল-অভিনেতা: শহীদুজ্জামান সেলিম, অজ্ঞাতনামা।
শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী: আনুম রহমান খান সাঁঝবাতি, শঙ্খচিল।
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: ইমন সাহা, মেয়েটি এখন কোথায় যাবে।
শ্রেষ্ঠ নৃত্যপরিচালক: হাবিব, নিয়তি।
শ্রেষ্ঠ গায়ক: ওয়াকিল আহমেদ, ছবি- দর্পণ বিসর্জন, গান- অমৃত মেঘের বারি।
শ্রেষ্ঠ গায়িকা: মেহের আফরোজ শাওন, ছবি- কৃষ্ণপক্ষ, গান- যদি মন কাঁদে।
শ্রেষ্ঠ গীতিকার: গাজী মাজহারুল আনোয়ার, ছবি- মেয়েটি এখন কোথায় যাবে, গান- বিধিরে ও বিধি।
শ্রেষ্ঠ সুরকার : ইমন সাহা, গান- বিধিরে ও বিধি।
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: তৌকীর আহমেদ, অজ্ঞাতনামা।
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: রুবাইয়াত হোসেন, আন্ডার কনস্ট্রাকশন।
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: অনম বিশ্বাস ও গাউসুল আলম, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: ইকবাল আহসানুল কবির, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক: উত্তম গুহ, শঙ্খচিল।
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: রাশেদ জামান, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা: যৌথভাবে সাত্তার, নিয়তি ও ফারজানা সান, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ মেকাপম্যান: মানিক, আন্ডার কনস্ট্রাকশন।
২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরাদের দেওয়া হচ্ছে এই পুরস্কার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিগগিরই বিজয়ীদের হাতে ট্রফি তুলে দেবেন বলে জানা গেছে।

/এমএম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
প্রেম নাকি বিয়ে, মুখ খুললেন ইলিয়ানা
প্রেম নাকি বিয়ে, মুখ খুললেন ইলিয়ানা
এফডিসিতে মারামারি: যৌথ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হলো
এফডিসিতে মারামারি: যৌথ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হলো
সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্ত, রাফীর সিনেমাটি প্রদর্শনের অযোগ্য!
সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্ত, রাফীর সিনেমাটি প্রদর্শনের অযোগ্য!
সৌন্দর্যের সংজ্ঞা বদলাতে চান ম্রুনাল
সৌন্দর্যের সংজ্ঞা বদলাতে চান ম্রুনাল