X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১
উঠেছে পঞ্চমীর চাঁদ

চরিত্রের মাপে শুধু পোশাক পাল্টাই

জয়া আহসান, কলকাতা থেকে
১৩ মে ২০১৮, ১২:১২আপডেট : ১৪ মে ২০১৮, ০০:২৭

চরিত্রের মাপে শুধু পোশাক পাল্টাই কলকাতা কিংবা টলিউড ক্যারিয়ারে জয়া আহসান চার পেরিয়ে পাঁচ-এ পা রাখলেন এ বছর। ২০১৩ সালে সেখানে মুক্তি পায় ‘আবর্ত’। সেই থেকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। বরং কলকাতার সাম্প্রতিক নায়িকাদের মধ্যে তার অবস্থান এখন সবার আগে। চলতি বছরে নায়িকা কিংবা অভিনেত্রী হিসেবেও টলিউডে তার ব্যস্ততা সবচেয়ে বেশি। যদিও পুরো যাত্রা অতোটা সহজ ছিলো না। সেই কথাগুলোই বাংলা ট্রিবিউন-এর জন্মদিনের আয়োজন ‘উঠেছে পঞ্চমীর চাঁদ’ বিভাগে নিজের ভাষায় বলেছেন জয়া আহসান। 

সম্ভবত ২০১২ সাল। আমি তখন মাহফুজ আহমেদের ধারাবাহিক ‘চৈতা পাগল’-এর শুটিং করছিলাম। ওই সময়ে অরিন্দম শীল নামে একজন কলকাতা থেকে ফোন করেছিলেন। তিনি বললেন, ‘আমি কলকাতা থেকে বলছি। আমার নাম অরিন্দম। আমি একজন অ্যাকটর। এবার একটা সিনেমা বানাতে চাই।’ তখন কলকাতার কাজ আমি ওভাবে দেখতাম না। তাই প্রথম কলের পর উনাকে ঠিক চিনতে পারিনি। পরে বাসায় ফিরে গুগল করে তাকে দেখলাম। তার কাজ সম্পর্কে খানিক জানলাম।
একদিকে ফিল্ম। তার ওপরে আরেক দেশে গিয়ে কাজ করা। একটু দ্বিধাগ্রস্ত হলাম। পরে যখন উনার সঙ্গে ওভার ফোনে আরও কয়েকবার কথা বললাম, সিনেমা নিয়ে ওনার প্ল্যান, আমার প্রতি আগ্রহ আর ছবির চিত্রনাট্য মিলিয়ে মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিলাম কলকাতা যাওয়ার। কারণ, আমি যে ছবিগুলা বহু বছর ধরে করতে চাই, যে ছবিগুলোকে মন থেকে বিশ্বাস করি, সেটি খুঁজে পেয়েছিলাম অরিন্দম শীলের তখনকার মুঠোফোন আলাপে।
তো যখন সম্মত হলাম কাজটি আমরা করবো, এরপর শুরু হলো আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ। তখন তো ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইবারের এমন সহজ প্রচলন ছিল না। আমি নিজেও এসব বিষয়ে খুব একটা উৎসাহী ছিলাম না। মনে পড়ে, অরিন্দম দা আর আমি প্রচুর পয়সা খরচ করলাম ওভারসিস কলের পেছনে। পাণ্ডুলিপিটা গোছাতে লাগলাম আমরা। পরিচালক হিসেবে উনারও সেটা ছিল প্রথম কাজ। ফলে তার মধ্যেও আমার মতো আগ্রহ আর চেষ্টা ছিল কাজটি কেমন করে সর্বোচ্চ ভালোর দিকে নেওয়া যায়। মজার বিষয় হচ্ছে, উনি তখনও আমাকে সামনাসামনি দেখেননি। আমার নাটকগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে দেখে সিলেক্ট করেছেন মাত্র।
চরিত্রের মাপে শুধু পোশাক পাল্টাই আমাকে নাটকে দেখলেন আর ফোন দিলেন কাস্ট করার জন্য তা নয় কিন্তু। উনি তখন বলেছেন এবং পরে কলকাতা গিয়ে জেনেছি, প্রায় পুরো ভারতজুড়েই উনি উনার চারুকে (আবর্ত’র অন্যতম চরিত্র) খুঁজেছিলেন। যাহোক, পরে কী ভেবে যেন আমাকেই তার মনে ধরে। চারু চরিত্রের জন্য নাকি আমাকেই লাগবে উনার! এরপর ২০১৩ সালের দিকে কলকাতা শহরে পা রাখলাম, কাজটা করলাম শতভাগ সততা নিয়ে। তবে এটা জানি না কাজটা ঠিক মতো করতে পেরেছি কিনা। পর্দায় অরিন্দম দা তার চিত্রনাট্যের চারুকে সত্যি সত্যি খুঁজে পেয়েছে কিনা জানি না। তবে আমি সেই চারুকে দিয়ে পেয়েছি অনেক কিছুই। আজ এখানে (টালিগঞ্জে) আমার যতটুকু পরিচিতি অবস্থান তার পুরোটাই কিন্তু সেই চারু আর অরিন্দম শীলের মাধ্যমে। এর জন্য আমি কৃতজ্ঞ।
সেই তো ঢাকা টু কলকাতা জার্নি শুরু। পাঁচটা বছর দেখতে দেখতে কেটে গেল। এখানকার কাজের প্রসেসটা খুব ভালো ছিল। বাংলাদেশ থেকে টালিগঞ্জে কাজ করার যে গেটওয়ে সেটা প্রপার ওয়েতে হয়েছে আমার। কারণ, দেখি তো রোজ অসংখ্য মুখ এই শহরে আসে বিভিন্ন দেশ আর শহর থেকে, কিন্তু আশাভঙ্গ হয় বেশিরভাগেরই। এটা অবশ্যই বেদনার। আমিও সমব্যথী। কিন্তু এটাও কেন জানি বলতে ইচ্ছে করছে, যে কোনও কিছুর শুরুটা খুব জরুরি বিষয়। সেটি সিলেক্ট করে নেওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে হিসেবে আমার ‘আবর্ত’ করাটা ঠিক সিদ্ধান্তই ছিল বলে মনে হচ্ছেÑ টালিগঞ্জে চার পেরিয়ে পাঁচ বছরের সীমানায় দাঁড়িয়ে।
আমি না আসলে কখনোই কাজের পেছনে দৌড়াইনি। এবং আমি চাইনি একই কাজ বারবার করতে। যেমন, ২০১৩ সালে ‘আবর্ত’ মুক্তির পরে ওখান থেকে যে অফারগুলো পাচ্ছিলাম, খেয়াল করলাম সবাই আমাকে চারু বানাতে চায়! কিন্তু আমি সেটি একদমই রিপিট করতে দিইনি। সে যত ভালো অফারই হোক। বলতে পারেন এটাই আমার ক্যারেক্টারÑ ঘাড় ত্যাড়াও বলতে পারেন। টালিগঞ্জে এসে এই বিষয়টা একটু বেশি চোখে পড়েছে। মানে এরা রিপিট কাস্টের প্রতি বেশি আগ্রহী। এতোটা আমাদের ঢাকাতেও নেই কিন্তু। এর মধ্যদিয়েও আমি গোঁ ধরে বসে ছিলাম। এরপর মাঝে প্রায় দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে আমাকে। ২০১৫-এর দিকে হুট করে অফার দিলেন ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী। ততদিনে তিনি ‘ফড়িং’ বানিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন। অফার করলেন নতুন চরিত্রের, নতুন চ্যালেঞ্জের। সাদরে নিলাম। করলাম ‘একটি বাঙালি ভ‚তের গপ্পো’। ব্যাক টু ব্যাক পেলাম সৃজিতের ‘রাজকাহিনী’। এই ছবিগুলোতে আমার অবস্থান ও উপস্থিতি ছোটই। কিন্তু আমার উদ্দেশ্য ছিল আলাদা। সেটা হলো, আমি রিপিট কাস্ট করবো না- সেটা যত বড়ই হোক। আরেকটি হলো, যত ছোট ক্যারেক্টারই হোক, আমি সেই ছোট সময়ের মধ্যেই নিজেকে প্রমাণ করে দেখাবো। দেখাতে পেরেছি কি? আমি না, উত্তর দিচ্ছেন-দেবেন দর্শকরা।
আগেও বলেছি, আমি ইন্ডিয়ায় এসে হা-ভাতের মতো কাজ করতে চাইনি। বাংলাদেশেও করিনি। করবো না কোথাও। অহংকার নয়, এটাই আমার নিয়ম। যাহোক, আবর্ত’র পর টানা দুটো বছর বসে ছিলাম। ২০১৫-তে করলাম ‘একটি বাঙালি ভূতের গপ্পো’ আর ‘রাজকাহিনী’। দুটো ছবিই আমার কলকাতা ক্যারিয়ারের বড় বাঁক বদল করে। এটাও ঠিক, সৃজিতের ‘রাজকাহিনী’ আমাকে রাতারাতি নিয়ে ফেলেছে অন্য এক আলোতে। যে ছবির একটি দৃশ্যের জন্য আমার দেশেই অনেক সমালোচিত বা নিন্দিত হয়েছি। হ্যাঁ, বাংলাদেশের দর্শক, টিভি পর্দা, আলো-বাতাস, মিডিয়ার মধ্যদিয়েই আমি জয়া আহসানের আসল জন্ম। সেই বোধ থেকেই বলছি, বাংলাদেশে তখন যেভাবে সমালোচিত হয়েছি ঠিক তার উল্টোটা দেখলাম কলকাতায়, অবাক বিস্ময়ে। ইন্ডিয়া অথবা কলকাতার দর্শক-সমালোচকদের ভাষ্যে ‘রাজকাহিনী’র সবচেয়ে পাওয়ারফুল এবং প্রশংসিত দৃশ্য ছিল ওটাই! তো এটা আসলে ডিপেন্ড করে দেশ-সংস্কৃতি-সমাজের ওপর।
এটাও বলতে ইচ্ছে করছে, আমি আসলে অভিনেত্রীই হতে চেয়েছি, এখনও চাই। অভিনয়ের জন্যই আমার এই বোহেমিয়ান জীবন। পর্দায় তারা যাকে দেখেন সে তো জয়া আহসান না। কখনও চারু, কখনও পদ্মা, কখনও রুবিনা। আমি এই চরিত্রগুলোর আড়ালেই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখছি। কারণ, আমাকে তো অভিনয়টাই করে যেতে হবে, বাঁচার জন্যে। মানুষ সকাল-সন্ধ্যা নিয়ম করে পোশাক যেভাবে পাল্টায়, আমিও চরিত্রের মাপে পোশাক পাল্টাই।
যাহোক ২০১৬ সালে এসে ফিরে গেলাম আবার অরিন্দম শীলের ইউনিটে। যেখান থেকে শুরু করলাম কলকাতার জীবন। করলাম ‘ঈগলের চোখ’। একই বছর ফিরে গেলাম ইন্দ্রনীলের ইউনিটেও। করলাম ‘ভালোবাসার শহর’। রিলিজ পেয়েছে ২০১৭ সালে। একই বছর আমি টালিগঞ্জে নতুন করে নিজেকে প্রমাণ করতে সমর্থ হই কৌশিক গাঙ্গুলীর ‘বিসর্জন’ দিয়ে।
বলে রাখি, ভুলে যাবো। এদের (কলকাতার মানুষের) মন আসলে বড়। এরা শিল্পীকে শিল্পী হিসেবেই দেখে। এটা আমার পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। এটা বিশাল বড় একটা বিষয়। এখানে আমি যে কত ভালোবাসা পাই, সেটা আসলে সরাসরি না দেখলে বলে বোঝানো যাবে না। এভাবেই কাজ করে যেতে চাই, সেটা যেখানেই যাই। তবে এই পর্যায়ে একটু আক্ষেপ নিয়েই বলতে চাই, আমি যে ছবিগুলো বাংলাদেশে করতে চাই ঠিক সেগুলো আর দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারি না। বলতে পারেন, সেই অভাববোধ থেকেই প্রযোজনায় এলাম, আমার সি-তে সিনেমার ব্যানারে ‘দেবী’ ছবিটা বানালাম।
আপনারা হয়তো ভাবেন, আমি অভিনয়ের জন্য জুতোর সোল ক্ষয় করিনি, দ্বারে দ্বারে ঘুরিনি। সব এমনি এমনি পেয়ে গেছি, আমি অনেক ভাগ্যবতী ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু বছরের পর বছর ভালো একটা কাজের জন্য যে তীর্থের কোকিলের মতো অপেক্ষা করেছি, সেটাও তো বিবেচনায় নেওয়া দরকার। আমি হার্ডওয়ার্ক বিশ্বাস করি, সঙ্গে কয়েক চামচ ভাগ্য। কারণ, আমি না করতে পারি, যে কাউকে সরাসরি বলতে পারি- না এটা না, ওটা।
মাঝে মাঝে ঢাকা থেকে অভিযোগ অনুযোগ পাই আমি কলকাতার হয়ে গেলাম কিনা! আমি ঢাকাকে ভুলে গেলাম কিনা ইত্যাদি। দেখুন, আমি যখন ঢাকায় শুটিং করি তখন আউটডোরে যাই না? সেটা পূবাইলও হতে পারে আবার প্যারিসও হতে পারে। তো আমি কাজের জন্য কলকাতায় এখন। এটা আমার কাছে আউটডোরই। কাজ শেষ করেই তো ঢাকায় ফিরছি। এখন আমার দেশের অডিয়েন্স যদি স্বেচ্ছায় আমাকে শেকড় ছিন্ন করে দেয়, সেই গাছ তো বাঁচবে না। আমি বাংলাদেশি। আমি সবুজ। আমি যতদিন বাঁচি গর্ব নিয়েই সবুজ পাসপোর্ট ব্যবহার করতে চাই।
চরিত্রের মাপে শুধু পোশাক পাল্টাই এটাও সত্যি, কলকাতা এখন আমার বাড়িঘরের মতোই হয়ে গেছে। সবার সঙ্গে মিশে ভীষণ আরাম পাই। কলকাতা আমার অন্যতম প্রিয় শহর। ছুটি পেলে আমরা বন্ধুরা মিলে মাঝে মাঝে গঙ্গার পাড়ে যাই। সঙ্গে গিটার নিই। নৌকা ভাড়া করি। গঙ্গায় ভাসতে ভাসতে গানবাজনা করি। মজা করি। এটা আমার খুব প্রিয়।
এখানে সবচেয়ে ভালো লাগে, এরা উপাসনার মতো ছবি দেখে। ছবি দেখবেই। একজন অভিনেত্রীর কাছে এরচেয়ে সুন্দর দৃশ্য আর কিইবা হতে পারে। আরও ভালো লাগে কলকাতার মেইনস্ট্রিম ছবি এখন দেখে না কেউ। এখন এখানকার মেইনস্ট্রিম ছবি হলো বিসর্জন, রাজকাহিনী, পোস্ত, হামি, উমা’র মতো ছবিগুলো! যেগুলোকে আগে বলা হতো বিকল্পধারার চলচ্চিত্র। যেটা আমার দেশে এখনও তৈরি হইনি।
বলেই ফেলি, মে-জুন-জুলাই মাসে কলকাতায় আমি থাকতেই চাই না। প্রচণ্ড গরম। এ সময় মনে হয় একটা ওভেনে ঢুকে বসে আছি! তাই এই সময় এলে আমি ঢাকায় পালাতে চাই। ঢাকায় এবার প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকার বৃষ্টিকে খুব মিস করি। অথচ এই মে মাসেই আবার ‘বিজয়া’র কাজ করতে হচ্ছে। এটা করেই আমি জুনের প্রথম সপ্তাহে ফিরবো ঢাকায়- আমার প্রথম সন্তান ‘দেবী’র কাছে। ছবিটি বাংলাদেশের সবার কাছে পৌঁছে দিতে চাই। জানেন তো, এরই মধ্যে কলকাতায়ও ‘দেবী’কে নিয়ে প্রচুর ফিসফাসফিস শুরু হয়ে গেছে। এরাও ছবিটি খুব করে দেখতে চায়। তো লজিক্যাল প্রসেসে যদি এখানেও দেখানো যায়, আমি প্রস্তুত।
মজার কথা, সেদিন ‘দেবী’র পরিবেশক প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রধান কর্তা আবদুল আজিজ ভাই বললেন, এবার ঢাকায় এলে আমার পাসপোর্ট সিজ করে নেবেন! দেবী’র প্রমোশন-রিলিজ দিয়ে তারপর নাকি আমাকে ছাড়বেন! আমিও তো তা-ই চাই। সেটাই হওয়া উচিত। বাট থাকতে তো পারবো না। ‘বিজয়া’র সেটে ঢোকার আগে কৌশিক দা ছুটি দিচ্ছেন বড়জোর ১০ দিন। ফলে আমার ‘দেবী’ কিংবা ঢাকার বৃষ্টিকে ফেলে মে মাসের শেষটা কাটবে এখানেই- প্রিয় কলকাতার অসহ্য গরমে! চরিত্রের মাপে শুধু পোশাক পাল্টাই অনুলিখন: মাহমুদ মানজুর

/এমএম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
অবশেষে মুক্তির বার্তা
অবশেষে মুক্তির বার্তা
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!
নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি জয়া
নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি জয়া