সিনেমা মুক্তির আগে সাধারণত প্রিমিয়ার শোয়ের আয়োজন করা হয়। এটাই রীতি। অন্যদিকে গানের অ্যালবামের বেলায় দেখা যায় মোড়ক উন্মোচনের আনুষ্ঠানিকতা। তবে এবার দেখা গেল ভিন্ন কিছু। প্রিমিয়ার শো হয়ে গেল একটি অডিও গানের অ্যালবামের!
কাজটি করলেন নির্মাতা, গীতিকার ও সুরকার এনামুল করিম নির্ঝর। তার কথা ও সুরে গানের অ্যালবাম ‘কানসূতা ০০২’ মুক্তি পেয়েছে আজ (১ সেপ্টেম্বর)। এ উপলক্ষে গতকাল (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর ছায়ানট মিলনায়তনে গানশালা’র আয়োজনে অ্যালবামটির প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নন্দিত চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার।
যেখানে শ্রোতা ও শিল্পীদের উপস্থিতিতে গান-কথার আসর বসে। এতে এনামুল করিম নির্ঝরের লেখা ও সুরে কামরুজ্জামান সুজনের সংগীতায়োজনে পরিবেশিত হয় ফাহমিদা নবী, সুজন ও সুকন্যার গান।
গানের এই প্রিমিয়ারে উপচে পড়া দর্শক টানা তিনঘণ্টা গান আর আড্ডায় মেতে ওঠেন ছায়ানট মিলনায়তনে। ফেরদৌস বাপ্পির উপস্থাপনায় অতিথিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে অ্যালবামের গানগুলো শিল্পী ও শ্রোতারা শোনেন। শিল্পী ও গান সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে শ্রোতারা তাদের প্রতিক্রিয়া ও মতামত বিনিময় করেন।
অ্যালবামের প্রিমিয়ার শো করা প্রসঙ্গে এনামুল করিম নির্ঝর বলেন, ‘সিনেমার প্রিমিয়ার হলে গানের কেন হবে না! সেই প্রশ্ন থেকেই এই কাজটি করা। যে অ্যালবামটি মুক্তি পাচ্ছে সেটির গানগুলো বিশেষ শ্রোতাদের ডেকে শোনানো উচিত বলে মনে করছি। যেমনটা সিনেমার বেলায় ঘটে। এটা হওয়া উচিত।’
অ্যালবামটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গানগুলো তৈরিতে সংশ্লিষ্ট সকলেই যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন। আমার মনে হয়েছে, এই সৃজনশীল জায়গাটাতে আমরা যদি নানান পরীক্ষা-নীরিক্ষা না করি, আমাদের ভবিষ্যতরা পাবে কী? সৃজনশীল মানুষ যারা তাদের মেরুদণ্ড যদি সোজা না হয়, ভাবনার ব্যাপারটা যদি স্বচ্ছ না হয়, ভবিষ্যৎ আসলেই শূন্য হবে বলে আমার ধারণা। সে জায়গা থেকে আমি আমার মতো করে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
এদিকে প্রিমিয়ারের প্রধান অতিথি মুস্তাফা মনোয়ার বলেন, ‘এখনকার শিল্পীদের মধ্যে বড্ড বেশি রেষারেষি। সে জায়গায় শিল্পী-শ্রোতাদের নিয়ে এই যে মেলবন্ধন- এটা খুব জরুরি ছিল। নির্ঝর সবসময় একটা নতুন কিছু করতে চায়। এই নতুন কিছু করতে চাওয়ার বিষয়টা কিন্তু সবার মধ্যেই থাকতে হবে। হোক, না হোক পরের থাকা। আমি কিছু করবো সেটার মধ্যে নতুনত্ব থাকা উচিত।’
জয়নুল আবেদিনের চিত্রকর্মের কথা উদাহরণ টেনে তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ভিক্ষের সময় জয়নুল এক হাঁড়ি ভাত রান্না করেননি। লঙ্গরখানায় যাননি। ঘরে বসে এমন কিছু করেছেন যা আমরা এখনও দেখছি। তাই, কিচ্ছু করার দরকার নেই। শিল্পী আপন মনে গান করে যাক। তাতেই চলবে। মনে রাখতে হবে, শিল্পীর দায়বদ্ধতা অনেক বড়, অনেক উঁচুতে।’
অনুষ্ঠানে শ্রোতারা অ্যালবামের গান শুনে নিজেদের মুগ্ধতা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে পরিবেশিত ১৫টি গানের এই অ্যালবাম পাওয়া যাবে জিপি মিউজিক, বাংলালিংক ভাইব, রবি স্প্ল্যাশ, ভারতের টাইমস মিউজিক ও গানশালার ইউটিউব চ্যানেলে। এছাড়াও তরুণ নির্মাতাদের নির্মাণে গানগুলোর মিউজিক ভিডিও পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হবে গানশালার ইউটিউব চ্যানেলে।
‘কানসূতা ০০২’ অ্যালবামটি এনামুল করিম নির্ঝরের এক নির্ঝরের গান প্রকল্পের উদ্যোগে প্রকাশিত ২য় অ্যালবাম। এর আগে গত ৬ এপ্রিল প্রকাশিত হয় ‘কানসূতা ০০১’ অ্যালবামটি। সে অ্যালবামে গান করেন আরমীন মূসা, অর্ক ও জয়িতা।
এ আয়োজনের এক্টিভিটি পার্টনার হিসেবে ছিলো শাহ সিমেন্ট।
