শুরু হচ্ছে দুই বাংলার তারকাদের লড়াই

‘আমি আসলে যা করতে চেয়েছিলাম, তা করতে পারিনি। প্লিজ আমাকে আর একবার তোমরা নাচটা দেখাতে সুযোগ দাও। না হয় আমাকে তোমরা নম্বর নাইবা দিলে। কিন্তু নাচটা আরেকবার করার সুযোগ দাও!’
এই অনুরোধটি স্টার জলসার ‌‘মা’ সিরিয়ালের ঝিলিক চরিত্রের অভিনেত্রী তিথির। তিনি নাচতে গিয়ে পায়ের আঙুল কেটে ফেলেন। ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে। কিন্তু সেদিকে তার খেয়াল নেই। তার একটাই আবেদন, নাচটি ঠিকমতো বিচারকদের সামনে দেখাতে পারেননি। তাই আরেকবার সুযোগ চাইছেন তিনি। বিচারকরা খুবই কঠিন। সিদ্ধান্ত থেকে সরবেন না। তিথির কান্না কি পারবে দুই বিচারকের মন গলাতে?
ঢাকার অভিনেত্রী ভাবনা মূলত নাচের মেয়ে। তার জন্য নাচ খুব কঠিন কিছু নয়। কিন্তু ২৩ নম্বর পর্বে একটি নাচ করতে গিয়ে মঞ্চেই অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন। তবে নাচ শেষ করেছেন তার আগেই। তারপর সবাই দৌড়ে গেলেন। তাকে পানি পান করানো হলো। নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে তার। তারপর...?
ওপরের ঘটনা দুটি কোনও গল্প থেকে নেওয়া নয়। নাচের লড়াইয়ের রিয়েলিটি শো ‘বাজলো ঝুমুর তারার নূপুর’- এর শুটিং স্পটে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার দুটি চিত্র এমনই ছিল। এমন আরও অনেক অনেক মধুর আর কষ্টের গল্প জমে আছে নাগরিক টিভির এই বিশেষ আয়োজনে।
অপেক্ষার পালা শেষ! আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে প্রচার শুরু হচ্ছে ‘বাজলো ঝুমুর তারার নূপুর’ অনুষ্ঠানটি। নাচের এই প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানটি প্রতি সোম, মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় প্রচার হবে। এমনটাই নিশ্চিত করেন চ্যানেলটির অনুষ্ঠান প্রধান কামরুজ্জামান বাবু।
বাংলাদেশ ও কলকাতার টেলিভিশন-চলচ্চিত্র শিল্পীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে ও উভয় বাংলার সংস্কৃতির ঐতিহ্যের ধারা দুই বাংলার টেলিভিশন দর্শকদের মাঝে তুলে ধরার জন্যই এমন আয়োজন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। প্রতিযোগিতামূলক বিশেষ এই অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় যুক্ত আছে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড। পাওয়ার্ড বাই সোহানা ইলেকট্রনিক্স। আর সহযোগিতায় আছে মমতাজ হারবাল লিমিটেড।
‘বাজলো ঝুমুর তারার নূপুর’-এর মূল প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে অংশগ্রহণ করেছেন ছয়জন করে মোট ১২ জন তারকা। বাংলাদেশ থেকে যোগ দিয়েছেন টিভি অভিনেত্রী ঈশানা, ভাবনা, জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া, স্পর্শিয়া, অমৃতা ও সাফা কবির। আর কলকাতা থেকে রিমঝিম, সোহিনী, এনা সাহা, লাভলী, তিথি ও প্রীতি।
এই রিয়েলিটি শোয়ে আরও প্রতিযোগিতা করেছেন বাংলাদেশ থেকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি, টিভি অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা ও জাকিয়া বারী মম। আর কলকাতা থেকে অংশ নিয়েছেন জি বাংলার ‘রাশি’ সিরিয়ালের প্রধান চরিত্র গীতশ্রী, চিত্রনায়িকা পায়েল ও টিভি অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা।
প্রতিটি পর্বে প্রধান বিচারক হিসেবে আছেন বাংলাদেশের নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এবং কলকাতার নায়িকা শতাব্দী রায়।
বিভিন্ন পর্বে বাংলাদেশ থেকে অতিথি বিচারক হিসেবে যুক্ত হয়েছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী, চিত্রনায়ক ফেরদৗস, সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীর, অভিনেতা তৌকীর আহমেদ ও সজল। অপরদিকে কলকাতা থেকে সংগীতশিল্পী জোজো, অনিন্ধ, শ্রীলেখা মিত্র এবং নৃত্যবিশারদ তনুশ্রী শংকর।
‘বাজলো ঝুমুর তারার নূপুর’-এর প্রতিটি পর্ব যৌথভাবে উপস্থাপনা করেছেন কলকাতার সৌরভ এবং বাংলাদেশের মাসুমা রহমান নাবিলা।
মোট ৭২টি অ্যাপিসোডে এই অনুষ্ঠান ধারণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে নাগরিক টিভির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান কামরুজ্জামান বাবু বলেন, ‘প্রায় তিন বছর ধরে অনুষ্ঠানটি নিয়ে নানারকম গবেষণা ও যোগাযোগের কাজ করা হয়েছে। তারকা শিল্পীদের প্রতিযোগী হিসেবে পাওয়াটা ছিল খুবই চ্যালেঞ্জের একটি কাজ। আর দুই বাংলার তারকাদের লড়াইতে অংশ নেওয়ার মাধ্যম ছিল নাচ, যা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ ছিল। কেননা, প্রত্যেক শিল্পীকেই এই নাচের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে মহড়ায় অংশ নিতে হয়েছে। পুরো অনুষ্ঠানটি সাফল্যের সঙ্গে করা সম্ভব হয়েছে একমাত্র শিল্পীদের সহযোগিতার কারণে। আমরা মনে করি দর্শকরা নতুন ধরনের একটি অনুষ্ঠান পেতে যাচ্ছে।’
অনুষ্ঠানটি নিয়ে বিস্তারিত জানাতে ১৩ অক্টোবর দুই বাংলার তারকাদের নিয়ে ঢাকায় একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।