X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

টিভি চ্যানেলগুলোকে সরাসরি দায়ী করলেন শিল্পীরা

বিনোদন রিপোর্ট
০৩ নভেম্বর ২০১৮, ১৬:১০আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:৫৬

বক্তব্য রাখছেন অভিনয়শিল্পীরা দেশের টিভি নাটকের মানের অবনতির জন্য টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে দায়ী করলেন অভিনয়শিল্পীরা।  এমন অভিযোগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করলেন, কম পয়সায় নাটক কেনার প্রবণতাকে।
তাদের মতে, চ্যানেলগুলো কম পয়সায় পচা আলু কিনে খাওয়াচ্ছে দর্শকদের।
২ নভেম্বর বিকালে ‘অভিনয় শিল্পী সংঘ’ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে এক সেমিনারে মুক্ত আলোচনার আয়োজন করেন। সেখানেই শিল্পীদের বক্তব্যে এমন কথা উঠে আসে।
এ সময় ‘পেশাদারিত্বের সংকটে দেশের টেলিভিশন নাটক ও অভিনয়শিল্পী’ শীর্ষক প্রবন্ধ পড়েন সংঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান। এটা নিয়েই আলোচনায় অংশ নেন অভিনয়শিল্পীরা।
অতিথির আসনে নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা প্রবন্ধে টিভি নাটকের দুরবস্থার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, টেলিভিশন ও টেলিভিশন নাটককে শিল্প ঘোষণা না করা, সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব, নাটকের মান নিয়ন্ত্রণে চ্যানেলের ব্যর্থতা কিংবা উদাসীনতা, মধ্যস্বত্বভোগীদের হস্তক্ষেপ, নাটকের মূল্য কমে যাওয়া, নাটকে চরিত্রাভিনেতাদের হারিয়ে যাওয়াকে। এ ছাড়া ত্রিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়া, নির্মাণে নিম্নমুখী প্রতিযোগিতা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাবকেও একইভাবে দায়ী করা হয়েছে।
শিল্পীদের মতে, দেশে নির্মিত ৮০ শতাংশ নাটক গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে। নাটকের মান খারাপ হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ শিল্পী ও নির্মাতাদের অপেশাদারি মনোভাব। এর ফলে দেশের দর্শকরা বিনোদিত হতে চোখ রাখছে ভারতীয় বাংলা চ্যানেলগুলোতে।
মান খারাপ হওয়ার কারণ হিসেবে সামনে আনা হয়, বাজেট।
বাজেট কম থাকায় সেসব নাটকে শিল্পী থাকছেন কম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অপেশাদার কলাকুশলী দিয়ে নাটক করিয়ে নেওয়ার কারণে কাজ খারাপ হচ্ছে। এমনকি যথেষ্ট বাজেট না থাকায় ভালো চিত্রনাট্য দিয়েও নাটক করা সম্ভব হচ্ছে না।
মুক্ত আলোচনায় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘চ্যানেল বা অ্যাজেন্সির লেজুড়বৃত্তি না করে নিজেদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত একজনও কাজ করব না, সে রকম মনোভাব থাকতে হবে। নিজেরা যখন অধিকারের বিষয়ে সচেতন হব তখনই এ সমস্যা দূর করা সম্ভব।’
অতিথির আসনে সিনিয়র শিল্পীরা আজাদ আবুল কালাম বলেন, ‘দেশে অনেক চ্যানেল। কিন্তু এতে আসলে কী প্রচার হবে, তার কোনও নীতিমালা নেই। এর দায় কর্তৃপক্ষের। সবাইকে কেন টেলিভিশন চ্যানেল খোলার অনুমতি দিতে হবে? অন্যদিকে আমরা অভিনয়শিল্পীরা নিজেকে দক্ষ করে তোলার বদলে ভিখিরির মনোভাব নিয়ে টিভি কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিচ্ছি।’
মোশাররফ করিম বলেন, ‘নাটকের পেছনে যারা কাজ করছে, তাদের যথাযথ সম্মানী দিতে হবে। আর এ জন্য নাটকের বাজেট বাড়াতে হবে। এটা চ্যানেলগুলোর ভাবা দরকার! নইলে তাদের দিক থেকেও দর্শকরা মুখ ফিরিয়ে নেবেন।’
অনুষ্ঠানে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। নাটকের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ, বাজেট বৃদ্ধি, শিল্পী নির্বাচনে পরিচালকদের স্বাধীনতা, পে চ্যানেল বাস্তবায়ন, বিদেশি অনুষ্ঠান আমদানি ও প্রচারের নীতিমালা করা হলে টিভি নাটকের আজকের এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব বলে জানান বক্তারা।
সেমিনারে অভিনয়শিল্পীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, নাট্যকার সংঘ, অভিনয়শিল্পী সংঘ ও ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ অভিনেতা আবুল হায়াত ও ড. ইনামুল হক, টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মামুনুর রশীদ, নাট্যকার সংঘের সভাপতি মাসুম রেজা, সেক্রেটারি জেনারেল এজাজ মুন্না, ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক, অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি শহিদুল আলম সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব নাসিম প্রমুখ।
জানানো হয়, সেমিনার থেকে পাওয়া প্রস্তাবগুলো নিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে আবারও আলোচনায় বসবেন তারা। সেখান থেকেই সমাধান খুঁজে বের করা হবে। বক্তব্য রাখছেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ, পাশে অভিনেত্রী বন্যা মির্জা ও অন্যরা

/এম/এমএম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
প্রেম নাকি বিয়ে, মুখ খুললেন ইলিয়ানা
প্রেম নাকি বিয়ে, মুখ খুললেন ইলিয়ানা
এফডিসিতে মারামারি: যৌথ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হলো
এফডিসিতে মারামারি: যৌথ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হলো
সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্ত, রাফীর সিনেমাটি প্রদর্শনের অযোগ্য!
সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্ত, রাফীর সিনেমাটি প্রদর্শনের অযোগ্য!