জন্মস্থান জামালপুরে বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হলো বাংলা চলচ্চিত্রের প্রতিথযশা নির্মাতা আমজাদ হোসেনকে। মৃত্যুর আগে সেখানেই তার ‘শেষ ঠিকানা’ হোক- এমন আশা ব্যক্ত করে গেছেন তিনি।
আজ (২৩ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে জামালপুর পৌর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
বাংলা ট্রিবিউন এর জামালপুর প্রতিনিধি জানান, বেলা ১১টার দিকে জামালপুর হাইস্কুল মাঠে আমজাদ হোসেনের জানাজা হয়েছে। সেখানে তাকে এক নজর দেখার জন্য উপচে পড়া ভিড় ছিল। বেশ কিছু সংঘটন থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এর আগে গতকাল (২২ ডিসেম্বর) ঢাকায় আদাবর, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বিএফডিসি, এটিএন বাংলা ও চ্যানেল আইয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সন্ধ্যায় জামালপুরের উদ্দেশে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়।
১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই নির্মাতা।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রখ্যাত এই চলচ্চিত্রকারকে ২৭ নভেম্বর দিবাগত রাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে। গত ১৮ নভেম্বর সকালে নিজ বাসায় ঘুমের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার রাজধানীর একটি হাসপাতাল থেকে জরুরি ব্যবস্থায় ব্যাংককে নেওয়া হয়েছিল তাকে।
গুণী এই পরিচালক ১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া শিশুসাহিত্য রচনার জন্য তিনি ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুইবার অগ্রণী শিশুসাহিত্য পুরস্কার এবং ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, স্বাধীনতা পদকসহ একাধিক রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
আমজাদ হোসেন ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি সাহিত্যের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। পঞ্চাশের দশকে ঢাকায় এসে সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সঙ্গে জড়িত হন তিনি।
তার নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমণি’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’, ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ প্রভৃতি।
ছবি: বিশ্বজিৎ দেব