X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

যেমন হলো ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব

বিনোদন রিপোর্ট
১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০৫আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০৫

উৎসবের সমাপনী মঞ্চে অতিথি, জুরি ও পুরস্কারজয়ীরা সফলতার সঙ্গে পর্দা নামলো সপ্তদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। ১৮ জানুয়ারি বিকালে জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যবনিকা ঘটলো এবারের আসরের।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক। এছাড়াও দেশ-বিদেশের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে অনুষ্ঠান অলঙ্কৃত করেন।
অনুষ্ঠানে সেরাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সপ্তদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার। আর তাই, সমাপনী এই অনুষ্ঠান ঘিরে দেশ-বিদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা, কলাকুশলী এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ছিল আলোচনা আর উদ্দীপনা।
নয় দিনব্যাপী জমকালো এই উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন দেশ-বিদেশের ১৩০ জনেরও বেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এসে কেমন লাগলো, জানতে চাইলে বিদেশি অনেক অতিথিই ব্যক্ত করেছেন মুগ্ধ হওয়ার অনুভূতি। চীন থেকে প্রথমবারের মতো আসা নির্মাতা হুয়ো মাং বলেন, ‘পরিবেশ আর সমাগম ভালো। দর্শকদের উপস্থিতিও অনেক ভালো। রেইনবোর আয়োজনে আমি পুলকিত।’     
২০১৬ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করছেন কলকাতার নির্মাতা দেবানিক কুণ্ডু। উৎসবের সব কিছুতেই খুশি তিনি। তবে দর্শকের সংখ্যা নিয়ে কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘ভারতের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রত্যেকটা দিন উপচে পড়া দর্শক থাকে। এখানে সেটা পাচ্ছি না। এমনকি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র বিভাগের শিক্ষার্থীরাও দর্শক হয়ে আসছে কম, এটা অপ্রত্যাশিত।’  
শ্রীলঙ্কার অভিনেত্রী দুলিকা মারাপানি বলেন, ‘উৎসবটা খুব ভালো লেগেছে। এবারই প্রথম এলাম। এসেই আমি অভিভূত। সবার ব্যবহার খুব ভালো লেগেছে। এখানকার মানুষ খুব সহজেই মানুষকে আপন করে নিতে পারে।’
খুব তাড়াতাড়িই যেন কেটে গেল উৎসবের দিনগুলো। রাজধানীর পাঁচটি ভেন্যুতে একযোগে বসেছিল সপ্তদশ এই আসর। প্রদর্শিত হয়েছে ৭২টি দেশের প্রায় ২১৮টি চলচ্চিত্র। বিভিন্ন ভাষা আর সংস্কৃতির ছবি ছিল এই তালিকায়। উৎসবের ভেন্যুগুলো ছিলো- জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তন, জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তন ও সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, অলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ঢাকা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা, যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমা।
উৎসবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় ‘পঞ্চম নারী নির্মাতা সম্মেলন’ আর চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ক সেমিনার ‘ওয়েস্ট মিটস ওয়েস্ট’। এছাড়া, আলোচিত ছবিগুলো প্রদর্শনের আগে পরিচালককে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রেজেন্টেশন পর্ব।
উৎসব সফল করতে নিরলস তৎপরতা ছিল আয়োজক ‘রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ’-এর। এ কয়দিনে কাজ করেছেন প্রায় দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। এদের বেশিরভাগই তরুণ, শিক্ষার্থী। উৎসবের মূল ভেন্যু জাতীয় গণগ্রন্থাগারেই শুধু কাজ করেছেন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। বিভিন্ন টিমে ভাগ হয়ে কাজ করেছেন তারা।
জাঁকজমক এই উৎসবে মূল প্রাঙ্গণ গণগ্রন্থাগারের নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে প্রতিদিনই বসেছে দেশি-বিদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জমজমাট আড্ডা। চায়ের কাপের চুমুকে উঠেছে আলোচনার ঢেউ। এসব আলোচনায় উঠে এসেছে চলচ্চিত্রের সাম্প্রতিক বৈশ্বিক গতি প্রকৃতি আর ভবিষ্যৎ করণীয়। চলচ্চিত্রপ্রেমী আর সংশ্লিষ্টরা একসঙ্গে কীভাবে এই মাধ্যমটিকে আরও শক্তিশালী করে বিশ্বব্যাপী শান্তি ও সমৃদ্ধি আনয়নে কাজে লাগাতে পারেন, সেসব শুধু উৎসবের আনুষ্ঠানিক ইভেন্টগুলোতেই নয়; এই ইস্যুগুলো আলোচিত হয়েছে তাদের আড্ডা আর গল্পের মধ্যেও।
এদিকে, বৃহৎ এই আয়োজনে দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীর অংশগ্রহণও ছিল ব্যাপক। প্রতিদিন সকাল থেকেই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দর্শকের সংখ্যা। এদের মধ্যে তরুণদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
সব মিলিয়ে টানা নয় দিনের ‘সপ্তদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’ ছিল দর্শকময়। কয়েকটি ছবি; যেমন, আইসোলেশন, দেবী, কমলা রকেট, রং বেরঙের কড়ি, হৃদয়ে রংধনু, এক যে ছিল রাজা, বোতল ভূত, রাইজিং সাইলেন্স আর খেজদির প্রদর্শনীতে হলগুলো হয়ে ওঠে হাউসফুল। একইসঙ্গে, বিভিন্ন সংস্কৃতির চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরাও সংস্পর্শ পেয়েছেন অন্য সংস্কৃতির চলচ্চিত্রকারদের।

/এস/এমএম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
কান উৎসব ২০২৪জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
ভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা