স্টুডিওর চার দেয়াল থেকে টিভি অনুষ্ঠানকে বের করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে ‘ইত্যাদি’ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরার পাশাপাশি প্রায় দুই যুগ ধরে বিদেশি নাগরিকদের দিয়ে লোকজ সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নিয়মিতভাবে তুলে ধরছে।
‘ইত্যাদি’র চরিত্রানুযায়ী বিদেশিদের দিয়ে করানো নানান ঘটনার পরিসমাপ্তি ঘটে চমৎকার একটি বার্তার মাধ্যমে। বিদেশিরা মনে করেন, এটি তাদের জীবনে একটি নতুন অভিজ্ঞতা ও আনন্দের মাধ্যম।
ঢাকায় বসবাসরত অর্ধশতাধিক বিদেশিদের নিয়ে এবারও হাজির হচ্ছেন হানিফ সংকেত। প্রতিবারের মতো এ বছরও বিদেশিরা নিজেরাই গ্রুপ তৈরি করেন ‘ইত্যাদি বিদেশি পর্ব-২০১৯’-এর জন্য। এবারের পর্বে অংশগ্রহণ করেছেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫০ জন নাগরিক। এদের মধ্যে অর্ধেক নৃত্যে এবং বাকিরা অভিনয়ে।
হানিফ সংকেত বলেন, ‘মাত্র কয়েকদিনের পরিচয়ে বিদেশিদের সাথে যে আত্মিক বন্ধন গড়ে ওঠে, তা কখনোই ভোলার নয়।’
স্পেনের নাগরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোসা বোরাজো বলেন, ‘ইত্যাদির মহড়া ও শুটিং শেষ হলে খুব মিস করি। হানিফ সংকেতের ধৈর্যের প্রশংসা করি। ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস নিতে গিয়ে যখন কোনও কারণে অধৈর্য হয়ে পড়ি, তখন হানিফ সংকেতের কথা মনে পড়ে।’
ডাচ নাগরিক লেইসবেথ বলেন, ‘আমি অনেকের কাছে ইত্যাদির গল্প শুনেছি। এখন শুটিংয়ে এসে বুঝলাম এখানে না এলে আমি অনেক কিছু মিস করতাম। বেশি ভালো লাগে আমাদের পর্বটিতে একটা সামাজিক বক্তব্য থাকে।’
ব্রিটিশ নাগরিক ক্রেইগ বলেন, ‘ইত্যাদি টিম খুবই ভালো, অর্গানাইজড। আমি ইত্যাদিকে ভালোবাসি। এই নিয়ে চারবার অংশ নিলাম। হানিফ সংকেতের সাথে কাজ করলে বোঝা যায়, যে মানুষটি কোনও দিন অভিনয় করেনি, তাকেও তার পক্ষে শিল্পী বানানো সম্ভব। তার প্রমাণ আমরা।’
আমেরিকান নাগরিক স্যাম বলেন, ‘অনুষ্ঠানটি প্রচারের পরদিন রাস্তায় বেরুলে অনেকেই আমাকে চিনতে পারেন। চিৎকার করে বলেন, হেই ইত্যাদি! আমি খুব এনজয় করি।’
বিদেশিদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে হানিফ সংকেত বলেন, ‘এরা অপেশাদার। তবে অনেক পেশাদার শিল্পীরও এদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। বিশেষ করে ওদের সময়জ্ঞান, নিষ্ঠা, একাগ্রতা, কষ্ট করা, সহিষ্ণুতা, আন্তরিকতা দেখে আমি মুগ্ধ। যেহেতু দর্শকরা এই পর্বটি অনেক পছন্দ করেন, তাই আমরাও অনেক যত্ন নিয়ে এই পর্বটি করার চেষ্টা করি। আশা করি প্রতিবারের মতো এবারও এই পর্বটি দর্শকদের অনেক আনন্দ দেবে।’
প্রতিবারের মতো এবারও ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’ একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচার হবে ঈদের পরদিন রাত ১০টা ২০ মিনিটে। অনুষ্ঠানটি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।
