X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

জন্মদিনে উন্মুক্ত হলো আইয়ুব বাচ্চুর অপ্রকাশিত গান

বিনোদন রিপোর্ট
১৬ আগস্ট ২০১৯, ১৫:৫৮আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০১৯, ১৩:৩৪

আইয়ুব বাচ্চু (১৬ আগস্ট ১৯৬২-১৮ অক্টোবর ২০১৮) অ্যালবামে প্রকাশের জন্য ২০০৫ সালে রেকর্ড করা হয়েছিল আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া গান ‘ভাবসূত্র’। তবে সেটা তখন হয়নি।
আজ (১৬ আগস্ট) এই কিংবদন্তির জন্মদিনে বিকাল ৪টায় টানা ১৪ বছর পর সেই গান প্রকাশ করলো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সাউন্ডটেক।
‘ভাবসূত্র’-এর কথা লিখেছেন মারজুক রাসেল। সুর-সংগীতায়োজন করেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু নিজেই। এটির রি-মাস্টারিং করেছেন আনিসুজ্জামান আনিস।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সাউন্ডটেকের কর্ণধার সুলতান মাহমুদ বাবুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গানটি অনেক আগে তৈরি করা। সেদিন হঠাৎ মারজুক রাসেল আমাকে বিষয়টি মনে করিয়ে দেন। এরপর খোঁজাখুঁজি করে এটি বের করেছি। নতুনভাবে মাস্টারিংও করতে হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ফুটেজ স্বল্পতার কারণে ভিডিও তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তাই লিরিক্যাল ভিডিও হিসেবে এটি এসেছে।
এদিকে গানটি প্রকাশ করে ইউটিউবের ফুটনোটে বিস্তারিত জানালেন গীতিকবি মারজুক রাসেল। তিনি সেখানে যেমনটা লিখেছেন তার হুবহু তুলে ধরা হলো—
‘‘২০০৪-এ ‘ফিসফাসফিস’ টাইটেলের একটা অ্যালবাম আয়োজন করছিলাম। লেবেল সাউন্ডটেক। কণ্ঠশিল্পী: আইয়ুব বাচ্চু, আসিফ ও পান্থ কানাই। গানের কথা আমার। সুর-সংগীত বাচ্চু ভাই ও টিটোর। দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যেকের ৪টা―মোট ১২টা গান [বাচ্চু ভাইর ৪টা এবি কিচেনে, আসিফ ও পান্থ কানাইর ৮টা সাউন্ড গার্ডেন স্টুডিওতে] রেকর্ড করে ২০০৫-এর ১০ জানুয়ারি অ্যালবামটা টেকনিক্যাল কোনও কারণে ১১টা গান নিয়ে রিলিজ হয়। ১টা গান থেকে যায়; ‘ভাবসূত্র’ টাইটেলের আনরিলিজড ওই গানটার সুর-সংগীত-কণ্ঠ বাচ্চু ভাইর। অ্যালবাম রিলিজের পর দিন-মাস-বছর যায়, আনরিলিজ গানটার কথা সংশ্লিষ্ট সবাই ভুলে যাই। কবিতা-গানের চেয়ে ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় বেশি জড়ায়ে যাওয়ার ভিতরেও মাঝে-মাঝে গানটার কথা মনে পড়তো, আবার ভুইলাও যাইতাম; আবার মনে পড়তো, ভুইলা যাইতাম। এইরকম ‘ভোলা’-‘মনে পড়া’ চলতে-চলতেই বাচ্চু ভাই যেদিন প্রয়াত হলেন, সেদিন [১৮ অক্টোবর, ২০১৮] থেকে তাঁর সঙ্গে গান নিয়ে কাটানো অম্লমধুর অনেক স্মৃতি, মন-খারাপ ও ‘ভাবসূত্র’ গানটার কথা যতক্ষণ সজাগ থাকতাম ততক্ষণ মনে হইতে থাকলো। সাউন্ডটেকের বাবুল ভাইয়ের [সুলতান মাহমুদ বাবুল] সাথে যোগাযোগ করে আনরিলিজ গানটার কথা জানালাম। উনি কয়েক দিন টাইম নিয়ে প্রায় ১৪ বছর আগের DAT [Digital Audio Tape] খুঁজে বের করে জানালেন। আমার খোঁজে DAT-Player আছে কিনা, জানতে চাইলেন। DAT-Player আছে, চেনাজানা এমন একটা জায়গায় DAT পাঠানোর পর সেখানে ১০/১২ দিনেও কোনও কাজ হইলো না। এরমধ্যে একবার এলআরবি’র মাসুদের কাছে ওই সময়ের প্রসঙ্গ এনে গানটার কথা বললাম; তিনি বললেন, স্টুডিও লকড, খুললে জানানো যাবে হয়তো! যাই হোক, শেষে বন্ধু দূরে [গায়ক, রেকর্ডিস্ট] খোঁজ দিলো আনিস ভাই’র [প্রমিথিউসের আনিসুজ্জামান আনিস]। ফাঙ্গাস-টাঙ্গাস পড়ে প্রায়-বাতিল হয়ে যাওয়া DAT-টা টেকনিক্যাল ও তাঁর উদ্ভাবিত নানান পদ্ধতিতে ফাঙ্গাসমুক্ত করে গানটার এডিট ও রি-মাস্টারিং করে দিলেন আনিস ভাই। আনিস ভাইকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ সুলতান মাহমুদ বাবুল ভাই ও সাউন্ডটেক কর্তৃপক্ষকে। বাচ্চু ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে গানটা শ্রোতাদের কাছে যাচ্ছে জেনে একাধারে মন-খারাপ ও ভালো লাগা―দুইটাই হচ্ছে।‘’

ভাবসূত্র:

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৮ অক্টোবর এলআরবি’র প্রধান ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চু পৃথিবীর মায়া ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যান।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড এলআরবি’র দলনেতা আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গায়ক, গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। গিটারের জাদুকর হিসেবে আলাদা সুনাম ছিল তার। ভক্তদের কাছে তিনি ‘এবি’ নামেও পরিচিত।

১৯৬২ সালের এই দিনে (১৬ আগস্ট) চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৭৮ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের মাধ্যমে সংগীত জগতে তার পথচলা শুরু হয়। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সোলস ব্যান্ডে লিড গিটারিস্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে এলআরবি ব্যান্ড গঠন করেন আইয়ুব বাচ্চু। এর প্রথম অ্যালবাম ‘এলআরবি’ বাজারে আসে ১৯৯২ সালে। এটাই দেশের প্রথম ডাবল অ্যালবাম। এলআরবির ‘র অন্য অ্যালবামগুলো হলো ‘সুখ’ (১৯৯৩), ‘তবুও’ (১৯৯৪), ‘ঘুমন্ত শহরে’ (১৯৯৫), ‘ফেরারি মন’ (১৯৯৬), ‘আমাদের’ (১৯৯৮), ‘বিস্ময়’ (১৯৯৮), ‘মন চাইলে মন পাবে’ (২০০১), ‘অচেনা জীবন’ (২০০৩), ‘মনে আছে নাকি নাই’ (২০০৫), ‘স্পর্শ’ (২০০৮), ‘যুদ্ধ’ (২০১২) ও ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’ (২০১৬)।
১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘রক্তগোলাপ’ তার প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। তার সাফল্যের শুরুটা হয় দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ময়না’র (১৯৮৮) মাধ্যমে। ১৯৯৫ সালে বাজারে আসে তার তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’। এর প্রায় সব গানই জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে ‘কষ্ট কাকে বলে’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘অবাক হৃদয়’, ‘আমিও মানুষ’ গানগুলো। তার অন্য একক অ্যালবামগুলো হলো ‘সময়’ (১৯৯৮), ‘একা’ (১৯৯৯), ‘প্রেম তুমি কি’ (২০০২), ‘দুটি মন’ (২০০২), ‘কাফেলা’ (২০০২), ‘রিমঝিম বৃষ্টি’ (২০০৮), ‘বলিনি কখনো’ (২০০৯), ‘জীবনের গল্প’ (২০১৫)।
আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া গানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘চলো বদলে যাই’। এর কথা ও সুর তারই। শ্রোতাপ্রিয় গানের তালিকায় আরও রয়েছে ‘শেষ চিঠি কেমন এমন চিঠি’, ‘ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘হকার’, ‘সুখ’, ‘রুপালি গিটার’, ‘গতকাল রাতে’, ‘তারা ভরা রাতে’, ‘এখন অনেক রাত’ ইত্যাদি।
রক ঘরানার গানের এই শিল্পী আধুনিক আর লোকগীতিতেও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। বেশ কিছু চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন তিনি। চলচ্চিত্রে তার গাওয়া প্রথম গান ‘লুটতরাজ’ ছবির ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’। এছাড়া ‘আম্মাজান’ ছবির শিরোনাম গানও জনপ্রিয়।

/এম/এমএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং দ্বৈরথ
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং দ্বৈরথ
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!
সমুদ্র সৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্র সৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
যুক্তরাষ্ট্রে নোমান রবিনের ‘ছাই থেকে ফুল’
যুক্তরাষ্ট্রে নোমান রবিনের ‘ছাই থেকে ফুল’
২৪ বছর পরে আবার একসঙ্গে...
২৪ বছর পরে আবার একসঙ্গে...