বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামায় ‘বাজিরাও মাস্তানি’র লড়াইটা অন্যরকম হবে। শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) মুক্তি পেয়েছে বছরের অন্যতম দুই আলোচিত বলিউড সিনেমা। তাইতো ভক্তদের পাশাপাশি বিশ্লেষকদের মাঝে চলছে নানা হিসেব-নিকেষ। বাজার ধরার এ লড়াইয়ে কে জিতবে? ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে, নাকি নতুন করে ইতিহাস লিখবে ‘বাজিরাও মাস্তানি’? কার দিকে পাল্লা ভারি, শাহরুখ-কাজলের ‘দিলওয়ালে’ না রনভীর-দীপিকার ‘বাজিরাও মাস্তানি’।

বলিউডের সিনেমার বাণিজ্যিক সফলতার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে প্রথম তিনদিনে কয়টি হলে সিনেমাটি প্রদর্শিত হচ্ছে তার ওপর। পরিবেশক প্রতিষ্ঠান ইরশ সালমান খানের ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ সিনেমার সময় ঈদ পর্যন্ত ভারতের অধিকাংশ প্রেক্ষাগৃহ বুকিং দিয়ে রেখেছে। ‘বাজিরাও মাস্তানি’র পরিবেশক সংস্থাও ইরস। ফলে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে কিছুটা এগিয়ে থাকবে ‘বাজিরাও মাস্তানি’। প্রবীণ চলচ্চিত্র পরিবেশক রমেশ সিপ্পিও বিষয়টিতে একমত। তিনি বলেন, ‘‘হলগুলোতে ‘বাজিরাও মাস্তানি’ প্রদর্শনের ফলে এই মুহূর্তে কিছুটা এগিয়ে আছে ছবিটি।’

কে জিতবে: ‘দিলওয়ালে’ না ‘বাজিরাও মাস্তানি’

তবে শুধু হলের আয় দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে সফল সিনেমা এখন আর বলিউডে হয় না। প্রেক্ষাগৃহে ‘দিলওয়ালে’ পিছিয়ে থাকলেও মাল্টিপ্লেক্সে এগিয়ে থাকবে অনেকখানি। মাল্টিপ্লেক্সে ছবিটি পরিবেশনার দায়িত্ব পেয়েছে পিভিআর। পরিবেশক অনিল থাড়ানি জানান, প্রেক্ষাগৃহের আয়ের তুলনায় মাল্টিপ্লেক্সের আয়ের পরিমাণ বেশি হয়। ‘বাজিরাও মাস্তানি’ বেশি প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হলেও ‘দিলওয়ালে’ও বেশ কিছু জায়গায় দেখা যাবে। তাছাড়া যেসব শহরে একচেটিয়া ব্যবসা আছে সেখানেই হলে দেখানোর চুক্তি কার্যকর থাকে। কিন্তু এর বাইরেও কিছু শহর আছে যেমন, আকোলা, সোলাপুর ও লক্ষ্ণৌতে ‘দিলওয়ালে’ প্রদর্শিত হতে পারে।

পিভিআর সিনেমাকে প্রদর্শনের দায়িত্ব দেওয়ায় অনেকে শাহরুখ খানের প্রশংসা করছেন। আবার বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ পিভিআর ‘বাজিরাও মাস্তানি’ সিনেমারও পরিবেশক।  এ বিষয়ে পিভিআরের প্রধান অজয় বিজলি জানান, দুটি ছবিই তাদের জন্য বড়। প্রদর্শনের সংখ্যায় খুব বেশি পার্থক্য থাকবে না।

রমেশ সিপ্পিও বলেন, পার্থক্য  খুব একটা পড়বে না। যদি ‘দিলওয়ালে’ ১২ বার দেখানো হয় তাহলে অন্তত ৮বার ‘বাজিরাও মাস্তানি’ দেখানো হবে।  একমত থাড়ানিও। তিনি জানান, পিবিআর মাল্টিপ্লেক্স হোল্ডার ও প্রদর্শক। তাদেরকে দুটো ছবিই দেখাতে হবে।

বলিউডের আয় এখন আর শুধু ভারতের ওপর নির্ভর করে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আয়ও যোগ হয় প্রযোজকের ঝুলিতে। আর ভারতের বাইরে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও পাকিস্তানে শাহরুখ জনপ্রিয়তার শীর্ষে।  সম্প্রতি এক টিভি বার্তায় শাহরুখ পাকিস্তানের দর্শকদের ‘দিলওয়ালে’ দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। দুবাইতে ‘দিলওয়ালে’র প্রচার ঝড় তুলেছে। ফলে প্রিয় তারকার সিনেমা মুক্তির পরই দেখতে চাইবেন অনেক ভক্ত।

কে জিতবে: ‘দিলওয়ালে’ না ‘বাজিরাও মাস্তানি’

সিনেমার বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিংয়েও এগিয়ে আছে ‘দিলওয়ালে’। এ ছবির প্রতিটি গানের মুক্তিতে যেসব প্রচারণামূলক অনুষ্ঠান করা হয়েছে তাতে বিজ্ঞাপন ও প্রচারণায় খানিকটা পিছিয়ে বাজিরাও।

হিন্দি ছবি বাণিজ্যিকভাবে সফল হতে ‘বিতর্ক’ অনেক কাজে লাগে। এ দুটি ছবি নিয়ে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনও বিতর্ক তৈরি হয়নি। তবে যেটুকু হয়েছে তাতে ‘দিলওয়ালে’ খানিক এগিয়ে। শাহরুখকে ঘিরে কিছু বিষয়কে কেন্দ্র করে একটি রাজনৈতিক গ্রুপ ছবিটি বয়কটের ডাক দিয়েছে। অপরদিকে, বাজিরাওয়ের বিরুদ্ধে ‘বাজিরাও’ ও ‘মাস্তানি’র উত্তরসূরীদের অভিযোগ রয়েছে। ছবিতে যেভাবে তাদের পূর্বসূরীদের দেখানো হয়েছে, তাতে খুশি নন তারা। তবে তাদের পেছনে রাজনৈতিক শক্তি না থাকায় অভিযোগগুলো হালে পানি পায়নি।

প্রেমিক যুগলের পর্দা রসায়নের একটা বড় ভূমিকা থাকবে। শাহরুখ-কাজল এক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়ে আছেন। তবে রনভীর সিং ও দীপিকা পাড়ুকোন প্রেমিক জুটিও কম না।  দেখা যাক শেষ পর্যন্ত এবার কাদের কপাল খোলে।

সূত্র ও ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

/এএ/