nusrat-ria

এই শিল্পী আরও জানান, ছবিটির প্রথম লটের শ্যুটিং (২০ নভেম্বর থেকে শুরু) থেকেই দুজনার মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। দুজনে কথা তো বলেনই না বরং একজন আরেকজনের আশেপাশেও থাকেন না। এমন দৃশ্য দেখে আমরা ইউনিটের সবাই বিস্মিত হয়েছি। দুই দেশের দুই শিল্পীর মধ্যে এমন ঘটনা বিরল এবং অনভিপ্রেত।

জানা গেছে, শ্যুটিংয়ের আগে নুসরাত ফারিয়া ‘হিরো ৪২০’র যে গল্পটি জানতেন সেটি খানিক বদলে যায় (২০ নভেম্বর) কলকাতায় পৌঁছাতেই। প্রথম গল্পে ফারিয়ার গুরুত্ব একটু বেশি ছিল আর পরিবর্তিত গল্পে দেখা যায় রিয়ার গুরুত্ব বেড়ে গেছে খানিক। ছবির ১৮টি দৃশ্য রিয়ার জন্য বরাদ্দ থাকলেও সেটি বেড়ে ২২ এ দাঁড়ায় তখন। আর এই গরমিল নিয়েই ক্ষেপেছেন ফারিয়া। ধারণা করছেন, রিয়া সেনের উদ্যোগেই ছবিসংশ্লিষ্টরা পুরনো চিত্রনাট্যে কাটছাঁট করেছেন। তুলেছেন রিয়াকে, নামিয়েছেন ফারিয়াকে। আর বিষয়টি নুসরাত ফারিয়া টের পান শ্যুটিংয়ে যাওয়ার পর। অন্যদিকে শ্যুটিংয়ের আগে পরে নুসরাত ফারিয়ার হসপিটালিটি দেখেও বেঁকে বসেছেন রিয়া সেন। অস্ফুট স্বরে হয়তো বলেছেন, কোথাকার কে ‘নুসরত ফরিয়া’! তাকে এত আপ্যায়ন কেন?


Faria ফারিয়া অবশ্য এতকিছু এখনই খুলে বলতে নারাজ। শুধু হায়দারাবাদ থেকে ফেসবুক ইনবেক্স বাংলা ট্রিবিউনকে এটুকু বললেন, ‘ছবির চিত্রনাট্য পুরোটা পড়ে, অনেক হিসেব কষেই এ ছবির চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছি। এতে প্রধান নায়িকা আমিই। এখনও সেভাবেই চলছে শ্যুটিং। তাছাড়া প্রথম থেকেই আমার সাফ কথা ছিল- আমি দ্বিতীয় নায়িকা হয়ে ছবি করতে প্রস্তুত নই। প্রয়োজনে ছবিই করব না। আমার এত তাড়াহুড়ো নেই।’

ফরিয়ার এমন ‌'অগ্নি' প্রতিক্রিয়ায় অবশ্য কাজ হয়েছে। চিত্রনাট্যে আবারও পরিবর্তন এনেছেন ‘হিরো ৪২০’ কর্তারা। ছবির প্রধান নায়িকা নুসরাত ফারিয়ার গুরুত্ব ব্যালেন্স করেছেন ডিজিটাল পাল্লায় তুলে। তবেই ভারতের হায়দরাবাদে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পর্বের শ্যুটিং। তাতে কী! শীত পাখির ঠোঁটে খবর আসছে হায়দরাবাদ থেকে, রিয়া-ফারিয়া সম্পর্কের বরফ গলেনি এখনও। এখনও তারা শ্যুটিং ইউনিটে একে অপরের প্রতি দেখেও না দেখার ছল করছেন সকাল-সন্ধ্যা! এদিকে জানা গেছে, দুই নায়িকার এমন পরিবেশে একমাত্র নায়ক ওম এর অবস্থা অনেকটাই ‘নো ম্যান্স ল্যান্ড’-এর মতো।

একে অপরের প্রতি কেন এমন সৌজন্যহীনতা রিয়া-ফারিয়া? ফারিয়া বললেন, ‘আসলে আমাদের কথা বলার প্রয়োজন হয় না। যে যার কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকি। তাছাড়া সে আমার ১৪ বছরের সিনিয়র। ফলে তার সঙ্গে দুরুত্ব বজায় রাখাই শ্রেয়।’ খানিক থেমে আরও বলেন, ‘উনি আসলে প্রথম থেকেই আমাকে ঠিক মেনে নিতে পারছিলেন না। আমি কোন হোটেলে থাকছি, কি পরছি-খাচ্ছি, এসব নিয়ে তুলনা করতে শুরু করলেন! তিনি ভুলে গেলেন, ছবিতে আমি প্রধান চরিত্র আর তিনি দ্বিতীয়। উল্টো তার মানষিকতাটা এমন- বাংলাদেশের একটা মেয়ে কেন ভারতে গিয়ে বলিউডের রিয়া সেনকে ডমিনেট করবে? এখন অবশ্য আমার স্ক্রিন-শ্যুটিং পারফর্মেন্স দেখে তিনি খানিক দমেছেন। আমারও একই কথা, দিন শেষে পর্দার পারফর্মেন্সই একজন শিল্পীর জন্য আসল বিষয়। এসব হলিউড-বলিউড নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না।’

 

ফারিয়া জানান, ৩০ ডিসেম্বর দিনে শ্যুটিং শেষে রাতেই ফিরছেন দেশে। তখন আরও বিস্তারিত জানাবেন, হয়তো। নয়তো বলবেন, ‘ওসব কিচ্ছু হয়নি। শোনা কথায় কান দিবেন না!’

প্রসঙ্গত, ‘হিরো ৪২০’ পরিচালনা করছেন বাংলাদেশের সৈকত নাসির ও কলকাতার সুজিত মণ্ডল। প্রযোজনা-পরিবেশনায় বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়া ও কলকাতার এসকে মুভিজ। ছবিতে আরও অভিনয় করছেন বাংলাদেশের শিমুল খান, ভারতের আশিষ বিদ্যার্থী, খরাজ মুখার্জি প্রমূখ।

/এমএম/