X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভাষার গানে একটু পেছন পানে…

উদিসা ইসলাম
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১৪:৫৮আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১৫:২০

ভাষার গান যে ভাষার জন্যে এমন হন্যে, এমন আকুল হলাম/সে ভাষায় আমার অধিকার/এ ভাষার বুকের কাছে মগ্ন আছে আমার অঙ্গীকার। ওপার বাংলার কবীর সুমনের অঙ্গীকার নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহিত করে বটে কিন্তু এপার বাংলায় কি ভাষাকে এগিয়ে নেওয়ার গান তৈরিতে গত ৬৫ বছরে ভাটা পড়ছে?
সাংস্কৃতিক আন্দোলনকর্মীরা বলছেন, সাংস্কৃতিক আন্দোলন রাষ্ট্রভাষার দাবিতে মাঠে নেমেছিল, ভাষা সঠিকপথে টিকিয়ে রাখতে তার ধারাবাহিকতা তারা রাখতে পারেনি। একাত্তরের পর সেটা ক্রমেই হারিয়ে যেতে থেকেছে। গান, কবিতা, সাহিত্যে যদি ইতিহাস না থাকে তবে সেই সমাজকে ধরে রাখা কঠিন হয়। তাহলে এখন কারা আবার আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চাইছে সেই আত্মসমালোচনাও দরকার।
৪৮ সাল থেকে শুরু হওয়া বাংলা ভাষার দাবিতে গান ছিলো বাংলা রাষ্ট্রভাষা করতে পারার লড়াই, এরপরের সময়ের ভাষার গান ছিলো ৫২’র রক্ত রঙিন শহীদদের স্মরণে কিন্তু বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে, বাংলার পরিসর বাড়াতে সেই উদ্যোগ থেমে গেল কিনা প্রশ্ন ওঠার সময় এসেছে। যদি প্রশ্ন করা হয়, এ পর্যন্ত কতগুলো গান তৈরি হয়েছে ভাষা দিবস বা ভাষাকে নিয়ে? উত্তর মিলবে কচিৎ-কদাচিৎ। আর পূর্ণাঙ্গ আর্কাইভ বা অ্যালবাম তো অনেক দূরের কথা!
একটু ফিরে দেখা যাক। ১৯৪৮ সালে জিন্নাহর রেসকোর্স ভাষণের রাতেই ঝাঁঝালো বাক্যে রচিত হলো প্রথম ভাষা-সংগ্রামের গান: 'ওরে ভাইরে ভাই/বাংলাদেশে বাঙালি আর নাই/... শোনেন হুজুর, বাঘের জাত এই বাঙালেরা/জান দিতে ডরায় না তারা/তাদের দাবি বাংলা ভাষা/আদায় করে নেবেই।' নিজের কথা ও সুরে আবদুল লতিফ গেয়েছেন, ‘ওরা আমার মুখের কথা কাইরা নিতে চায়/ওরা আমার মুখের কথা কাইরা নিতে চায়/ওরা কথায় কথায় শিকল পরায় আমার হাতে-পায়ে/ওরা আমার মুখের কথা কাইরা নিতে চায়...’

পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টাতে থাকে। ঢাকা থেকে শহরে গ্রামে ছড়িয়ে যায় কেন রাষ্ট্রভাষা বাংলা দরকার, পৌঁছে যায় গানকে মাধ্যম করেই। ৫২’র ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গের মধ্য দিয়ে সালাম, বরকত, রফিক, শফিক, জব্বারের মতো সূর্যসন্তানের প্রাণ গেলে ভাষা সংগ্রামের গানে ভরে ওঠে বাংলা গানের ধারা। ২২ ফেব্রুয়ারি আবদুল গাফফার চৌধুরী রচনা করলেন কালোর্ত্তীণ কবিতা : 'আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি। আলতাফ মাহমুদের মর্মস্পর্শী সেই সুর গানটিকে একমাত্র ভাষার গানের মর্যদার জায়গায় নিয়ে গেল।

মধ্যবিত্তের বাইরে হাটবাজারের মানুষেকে ছুঁয়ে দিতে সিলেটের গণকবি শাহ আবদুল করিম লিখেছেন 'ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখে/সালাম বরকতের বুকে/গুলি চালায় বেঈমানে/বাঙালির বাংলা ভাষা এই যে তাদের মূল ভরসা/এই আশায় বঞ্চিত হলে কি চলে’। গ্রামীণ গীতিকার শামসুদ্দীন আহমদ একটি মর্মস্পর্শী গান লিখেছিলেন সেই সময়। 'রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন করিলি রে বাঙালি, তোরা ঢাকা শহর রক্তে ভাসাইলি।' গাজিউল হক রচনা করেছিলেন 'ভুলবো না ভুলবো না.../রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই এই দাবিতে ধর্মঘট'। নব্বইয়ের দশকে এসে ক্যাসেটবন্দি হয় কবি নাজিম মাহমুদের গান, ‘কৃষ্ণচূড়া আর রক্তপলাশে/রঙিন জাল বুনে/একুশে এসো আজ শান্ত পায়ে পায়ে, নতুন ফাল্গুনে’।

 এই গানগুলো যে রক্ত হিম করা এক সংগ্রামী জীবনবোধ তৈরি করে দিয়েছিল সেটা আগে বাড়িয়ে নেওয়াটা এখন সময়ের দায়িত্ব। আর সময়ের সাথে সাথে নতুন গানের দরকার বলে মনে করেন অনেক সাংস্কৃতিক আন্দোলনকর্মী।

 /এম/

সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!