সৌদি আরব এবং ইরান সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় চলতি বছরে হজ পালন করতে পারছেন না ইরানি নাগরিকরা। ইরানের সংস্কৃতিমন্ত্রী আলী জান্নাতি অভিযোগ করেছেন, সৌদি কর্তৃপক্ষ ইরানি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি।
আলী জান্নাতি বলেছেন, ‘সৌদি আরব হজের ব্যাপারে যেসব প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে তাতে ইরানিদের এ বছর হজ করতে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইরান এই সমস্যাগুলো নিষ্পত্তির জন্য সৌদি আরবকে রবিবার (২৯ মে) পর্যন্ত সময় দিয়েছিল। কিন্তু তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছে।’ আলোচনায় ইরানের দাবি ছিল ‘নিরাপত্তা ও শ্রদ্ধা’।
ইরানের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সৌদি আরব এখনও কোনও বক্তব্য দেয়নি। তবে এর আগে সৌদি কর্মকর্তারা দাবি করেন, ইরানের ইচ্ছা অনুযায়ী সমাধান দেওয়ার পরও তারা তা মেনে নেয়নি। এ কারণে তারা আলোচনা থেকে ওয়াক আউট করেছেন। সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চলতি বছর ইরানি নাগরিকদের হজ করতে না দেওয়ার কারণে ইরানের সরকার আল্লাহ তাআলা এবং তার দেশের জনগণের কাছে দায়ী থাকবে।’
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুটি দেশের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কেরও আরো অবনতি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সিরিয়া এবং ইয়েমেনের যুদ্ধে সৌদি আরব এবং ইরান রয়েছে পুরোপুরি বিপরীত অবস্থানে। তারা পরস্পরবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে।
সৌদি আরবে শিয়া নেতা নিমর আল নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে কেন্দ্র করে ইরানের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটে। ওই ঘটনায় ইরানের বিক্ষুব্ধ জনতা তেহরানের সৌদি দূতাবাসে অগ্নিসংযোগ করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব।
এছাড়া গতবছর হজের সময় মক্কায় পদদলিত হয়ে নিহত হাজিদের মধ্যে ইরানের ৪৬০ জন হাজি রয়েছেন। সৌদি সরকার ওই ঘটনার তদন্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে তখন অভিযোগ করেছিল তেহরান। এর আগে ১৯৮৭ সালে ইরানি হজযাত্রীদের ওপর সৌদি দাঙ্গা পুলিশের হামলায় শতাধিক হাজি নিহত হওয়ার ঘটনায় ১৯৮৮ ও ১৯৮৯ সালে সৌদি আরবে হজে যাননি ইরানি নাগরিকরা। সূত্র: বিবিসি।
/এসএ/