জার্মানির মিউনিখে হামলাকারী তরুণের সঙ্গে ২০১১ সালে নরওয়েতে হামলাকারী অ্যান্ডার্স বেহরিং ব্রেইভিকের সুস্পষ্ট সংযোগ ছিল বলে দাবি করেছে জার্মান পুলিশ। শনিবার মিউনিখের হামলাকারীর বাড়িতে তল্লাশির পর এমন দাবি করা হয়েছে। হামলাকারীর শয়ন কক্ষ থেকে পূর্ববর্তী বিভিন্ন হামলা নিয়ে লেখা উপকরণ ও কাগজপত্র পাওয়া গেছে বলেও জানানো হয়েছে। তবে কিসের ভিত্তিতে ব্রেভিকের সঙ্গে মিউনিখ হামলাকারীর সংযোগের কথা বলা হচ্ছে তা জানানো হয়নি।
২০১১ সালে যে দিনটিতে ব্রেভিক নরওয়েতে হামলা চালিয়েছিলেন সে একই দিনটিতে মিউনিখে হামলা চালানো হয়েছে। ২০১১ সালের ২২ জুলাই উতোইয়া দ্বীপে মডারেট বামপন্থী তরুণ রাজনৈতিক কর্মীদের একটি ক্যাম্পে বন্দুক হামলা চালিয়ে ৬৯ জনকে হত্যা করেন ব্রেভিক। এরপর অসলোতে তার চালানো বোমা হামলায় আরও ৮ জন নিহত হয়। সবমিলে ওই ঘটনায় নিহত হয় ৭৭ জন। কট্টর ডানপন্থী ব্রেভিক জানিয়েছিল, ইউরোপে মুসলিম অভিবাসীর প্রবেশ ঠেকাতেই ওই হামলা চালানো হয়েছিল।
২০১২ সালে ব্রেভিককে দোষী সাব্যস্ত করে ২১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বর্তমানে তাকে নরওয়েতে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি নিজের কঠোর কারাবাসের বিরুদ্ধে করা একটি আপিলে জিতেছেন ব্রেভিক।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী মিউনিখের হামলাকারীর মধ্যেও অভিবাসনবিরোধিতা ছিল বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। লুয়ান জেকিরি নামে এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে,‘বুট জুতা পরিহিত ওই হামলাকারী অভিবাসন-বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিল।’
অসমর্থিত সূত্রের বরাতে ডেইলি টেলিগ্রাফ প্রচারিত এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হামলাকারী শপিং সেন্টারের এক ছাদে উঠে গুলি করছিল। ব্যালকনিতে দাঁড়ানো এক লোকের কথার উত্তরে ওই হামলাকারী বলেন,‘আমি একজন জার্মান। এখানেই আমার জন্ম।’ ব্যালকনির ওই লোকের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হামলাকারী গুলি ছুড়তে শুরু করে। হামলাকারী আরও বলেছে,‘আমাকে সাত বছর ধরে নির্মম নিপীড়ন সহ্য করতে হয়েছে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় মিউনিখের একটি রেস্টুরেন্ট ও শপিং সেন্টারে হামলা চালায় বন্দুকধারী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামলার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ৯ জনকে হত্যার পর আত্মহত্যা করে ১৮ বছর বয়সী বন্দুকধারী। সবমিলে ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ২১ জন। ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সূত্র: বিবিসি, গার্ডিয়ান
/এফইউ/বিএ/