মিউনিখে গোলাগুলি এবং পরে হামলাকারীকে ধরার অভিযান চলাকালে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারকে কাজে লাগিয়ে জনগণকে ৪টি ভাষায় তথ্য দিয়েছে মিউনিখ পুলিশ। সর্বশেষ সব পরিস্থিতি টুইটারে তারা জানিয়েছে চারটি ভাষায়। পাশাপাশি অনলাইন থেকে নিয়েছে তথ্য, ছবি এবং ভিডিও।
যে কোনো বড় ঘটনা, বিশেষ করে সন্ত্রাসী হামলা বা গোলাগুলি শুরুর পরপর অনেকেই ঢু মারেন টুইটারে, হালনাগাদ তথ্যের আশায়। আর তাই বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সেইসব ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, অনুসরনকারী এমনকি অসৎ উদ্দেশ্যে থাকা মানুষরা - সবাই নিজেদের মতো করে যতটা পারেন তথ্য, ছবি, ভিডিও প্রকাশ করতে থাকেন টুইটারে। তখন ভেরিফাইড বা পরীক্ষিত কোনো সূত্র থেকে তথ্য প্রকাশ না হলে জল্পনাকল্পনা বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে গুজব। এসব এড়াতে মিউনিখ পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যায় গোলাগুলি শুরুর পরপরই টুইটারে তথ্য প্রকাশ করতে শুরু করে। এ বিষয়ে তাদের প্রথম টুইট ছিল জার্মান ভাষায়, যেখানে জানানো হয়, মিউনিখের অলিম্পিয়া শপিং সেন্টারে পুলিশের বড় ধরনের অভিযান শুরু হয়েছে।
There has been gunfire - the Situation is unclear. we will keep you informed #munich #west #moosach
— Polizei München (@PolizeiMuenchen) 22 July 2016
পুলিশের এই টুইটের পরই টুইটারে তথ্য খোঁজা মানুষদের মনোযোগ চলে যায় মিউনিখ পুলিশের টুইটার অ্যাকাউন্টের দিকে। কিন্তু সমস্যা বাঁধে ভাষা নিয়ে। জার্মান ভাষা সবাই জানে না। সাধারণত দাপ্তরিক কাজে নিজেদের ভাষা নিয়ে কড়াকড়ি বজায় রাখলেও পুলিশ এক্ষেত্রে উদারতার পরিচয় দিয়ে গোলাগুলির তথ্য প্রকাশ শুরু করে ইংরেজি, জার্মান, ফরাসি এবং তুর্কি ভাষায়।
পুলিশের টুইট আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেরও তথ্যের মূল উৎস হয়ে ওঠে। ফলে হামলার সর্বশেষ তথ্য খুঁজতে যারা অনলাইনে ঘোরাঘুরি করছিলেন, তারা জড়ো হতে থাকে পুলিশের অনলাইন কার্যক্রমের দিকে, যার ফলে অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের উদ্দেশ্যে টুইটার ব্যবহার করা কিংবা গুজব ছড়াতে পারদর্শীদের কাজ অনেক কঠিন হয়ে যায়। আর পুলিশও শোভন ভাষায় তখন জনগণকে জানিয়ে দেয়, তারা যেন পুলিশের অভিযানের কোনো ছবি বা ভিডিও টুইটারে প্রকাশ না করে, কেননা, এতে করে প্রকারান্তরে যারা হামলা চালাচ্ছে, তাদেরই উপকার হতে পারে। পাশাপাশি, হামলায় হতাহতদের ছবি প্রকাশ থেকে বিরত থাকারও নির্দেশ দেয়া হয়।
Important:
— Polizei München (@PolizeiMuenchen) 22 July 2016
Please don't publish Fotos/Videos of #gunfire #Munich.
Please help us and send these files to us underhttps://t.co/29Df0qGgM6
একইসঙ্গে হামলাসম্পৃক্ত যে কোনো তথ্য, ছবি এবং ভিডিও সরাসরি পুলিশকে জানাতেও অনুরোধ করে পুলিশ। এজন্য টুইটারে তারা প্রকাশ করে একটি নম্বর এবং ছবি বা ভিডিও পুলিশকে দেয়ার জন্য একটি আপলোড লিংক। আর এভাবে প্রাপ্ত তথ্য বিভিন্ন সূত্র মেলাতে সহায়তা করেছে পুলিশকে, যারা প্রায় একশ' প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য পেয়েছে দ্রুত।
গোলাগুলিতে হতাহতের সংখ্যা কিংবা হতাহতের ঘটনা নিয়ে কোনো ধরনের লুকোছাপাও করেনি মিউনিখ পুলিশ। বরং সেক্ষেত্রে উদ্ধার অভিযান থেকে পাওয়া হালনাগাদ তথ্য টুইটারে জানিয়েছে তারা, প্রথমে ছয়জন, পরবর্তীতে আটজন এবং সবশেষে হত্যাকারীসহ দশজন নিহতের খবর পুলিশ নিশ্চিত করেছে অনলাইনে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, পুলিশ টুইটারে গোলাগুলির তথ্য জানানোর ক্ষেত্রে সবসময় যে নিশ্চিত হয়ে সকল তথ্য প্রকাশ করেছিল তা নয়, বরং অনিশ্চিত সূত্রের কথা উল্লেখ করেও তারা কিছু তথ্য প্রকাশ করে, যেগুলো পরবর্তীতে ‘সঠিক নয়' বলে পুলিশই কারণ ব্যাখ্যাসহ স্বীকার করে নিয়েছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
/এসএ/বিএ/