ভারত থেকে কয়লা রফতানির ব্যাপারে দেশটির বৃহত্তর কোম্পানি কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড (সিআইএল) বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সঙ্গে ‘গভীর আলোচনা’ চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কয়লাবিষয়ক সচিব অনিল স্বরূপ। মঙ্গলবার তিনি এ কথা জানান বলে খবর প্রকাশ করেছে ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।
মঙ্গলবার দিল্লিতে কয়লাবিষয়ক এক সম্মেলনের ফাঁকে সাংবাদিকদের অনিল স্বরূপ বলেন, ‘কয়লা রফতানির ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে গভীরভাবে আলোচনা করছে সিআইএল।’
অনিল জানান, তার দেশে কয়লার চাহিদা কমে যাওয়া এবং নতুন করে ৮০ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন হওয়ার কারণে কয়লার মজুদ বেড়ে গেছে। কয়লাবিষয়ক সচিব বলেন, ‘তারা (সিআইএল) কোথায় কয়লা মজুদ করবে। আমাদের ৮০ মিলিয়ন টনেরও বেশি কয়লা মজুদ রয়েছে। আমাদের সবমিলে ৫০০ মিলিয়ন টন উৎপাদন রয়েছে। আর ৮০ মিলিয়ন টন মজুদ রয়েছে। আগে এগুলো সামলাতে হবে। তারপর সিআইএল নতুন উৎপাদনের দিকে মনযোগ দিতে পারবে। আরেকটি কারণ হলো, আগস্টে অস্বাভাবিক রকমের বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেকারণে কয়লা উত্তোলনের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়েছে।’
ভারতীয় রফতানির ফলে কোল ইন্ডিয়ার বিক্রি যেমন বাড়বে, তেমনি তা বাংলাদেশের রামপালে নির্মিতব্য ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সহায়ক হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন অনিল স্বরূপ। গত জুলাইয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চুক্তি সই হয়।
ভারতে কয়লার চাহিদা কমে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে অনিল স্বরূপ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তার সরকার পরিকল্পনা করছে না। তার সরকার ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করছে। অনিল বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ৬২ শতাংশের একটি প্ল্যান্ট লোড ফ্যাক্টর (পিএলএফ) নিয়ে কাজ করছে। এ পিএলএফ ভবিষ্যতে ৭০ শতাংশ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আর তখন আমাদের কয়লার চাহিদা বাড়বে। অতিরিক্ত ধারণ কিংবা মজুদের ক্ষমতাও যুক্ত হবে। সুতরাং কয়লা উৎপাদন কমিয়ে আনার কোনও যুক্তি নেই। উৎপাদন কমানোর পর ভবিষ্যতে যদি চাহিদা বেড়ে যায় তখন আমরা কী করব।’
অনিল স্বরূপ জানান, একশো কোটি টন কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণে তার মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। সরকার এ লক্ষ্য থেকে সরে আসেনি। ২-৩ বছর পর এ নিয়ে পর্যালোচনা হবে বলেও জানান তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরে ৫৯৮ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ভারত সরকার। আর ২০২০ সাল নাগাদ উৎপাদনের পরিমাণ দ্বিগুণ করে একশো কোটি টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ইকোনমিক টাইমস, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
/এফইউ/
আপ - /এসএ/