পুলিশের গুলিতে একজন ‘নিরস্ত্র’ কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্য। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নর্থ ক্যারোলিনার শারলট শহরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন নর্থ ক্যারোলিনার গভর্নর প্যাট ম্যাকক্রোরি। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিদ্যমান অস্থিরতা মোকাবিলায় শারলটের পুলিশপ্রধানের অনুরোধে শহরে ন্যাশনাল গার্ড ও অঙ্গরাজ্য ট্রুপার পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন গভর্নর। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, জানমালের প্রতি কোনও ধরনের সহিংসতা বরদাশত করা হবে না।
এর আগে ওই ‘নিরস্ত্র’ কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে পুলিশি বাধার পর তা সহিংস রূপ ধারণ করে। এতে অন্তত ১২ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
মঙ্গলবার সকালে এক কৃষ্ণাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে কিথ ল্যামন্ট স্কট নামের ৪৩ বছর বয়সী ওই কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক নিহত হন। পুলিশের মুখপাত্র কিথ ট্রিটলির দাবি, পুলিশ গ্রেফতারি পরোয়ানভুক্ত এক আসামিকে ধরতে একটি ভবনের গাড়ি পার্কিংয়ের এলাকায় অভিযান চালাচ্ছিল। এ সময় পুলিশের গুলিতে স্কট নিহত হয়। তবে পুলিশ যাকে খুঁজছিল তিনি স্কট নন। পুলিশের দাবি, কিথ অস্ত্র বহন করছিলেন এবং তাকে হুমকি সৃষ্টিকারী বলে মনে হচ্ছিল। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিথের স্বজনরা দাবি করেছেনতার হাতে অস্ত্র ছিল না, বই ছিল। ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যে শুক্রবার পুলিশের গুলিতে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক নিরস্ত্র ছিলেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে স্বীকারোক্তি দেওয়ার একদিন পরই এ ঘটনা ঘটলো।
কিথ নিহত হওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসেন। মঙ্গলবার রাতে শারলটের ঘটনাস্থলে জড়ো হন তারা। বিক্ষোভকারীরা প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন। তাতে লেখা ছিল, ‘কৃষ্ণাঙ্গরা জড় পদার্থের মত বসবাস করেন’। এ সময় তারা শ্লোগান দিচ্ছিল, ‘বিচার না হলে শান্ত হব না’।
বিক্ষোভকারীদের দমাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। কর্তৃপক্ষ জানায়, পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে হামলা হয়েছে।
শারলট-মেকলেনবার্গ পুলিশ বিভাগ এক টুইটার বার্তায় জানায়, প্রায় ১২ কর্মকর্তা আহত হয়েছে। এক কর্মকর্তার মুখে পাথর এসে লাগে।
গত দুই বছরে পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময়েই বিক্ষোভ করতে রাস্তায় নেমেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দারা। যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বিভাগের মধ্যে বর্ণবাদের ইস্যুটি জাতীয় বিতর্কে পরিণত হয়। মার্কিন পুলিশের বর্ণবাদ প্রবণতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শুরু হয় ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলন। সূত্র: বিবিসি।
/এমপি/