X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বিমান হামলাকে ‘অন্ধকার দিন’ বললেন মুন

বিদেশ ডেস্ক
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ০৪:০১আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ০৪:০৬

বান কি মুন সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার এক সপ্তাহের অস্ত্রবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পর আলেপ্পোতে অভিযান জোরদার করেছে সরকারি বাহিনী। সিরীয় বাহিনীর এ অভিযানে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে সহযোগিতা করে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া। এদিকে আলেপ্পোতে লড়াইয়ের তীব্রতা বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর তীব্র বিমান হামলাকে একটি ‘অন্ধকার দিন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অঙ্গীকারের কথাও উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের এক বিবৃতিতে সংস্থাটির প্রধানের এমন অবস্থান তুলে ধরা হয়।

জাতিসংঘ মহাসচিব জোর দিয়ে বলেন, সিরিয়ার চলমান সংঘাতে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা এবং বাছবিচারহীনভাবে অন্যান্য অস্ত্রের ব্যবহার যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে। এ সময় তিনি আলেপ্পোয় সামরিক অভিযানের তীব্রতা কমিয়ে আনার আহ্বান জানান।

এদিকে অস্ত্রচুক্তি ভেঙে যাওয়ার পর সিরিয়া ও রাশিয়া যৌথভাবে আলেপ্পোতে হামলা ও অভিযান জোরদার করায় যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার সিরিয়া নীতি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। সিরিয়ার হামলায় আলেপ্পোর পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।  পানির অভাবে দুর্ভোগের পড়েছেন শহরটির বাসিন্দারা।

বৃহস্পতিবার সিরীয় সেনাবাহিনী আলেপ্পোতে নতুন অভিযান ঘোষণা দেওয়ার পর শনিবার প্রথমবারের মতো সফলতার মুখ দেখে সিরিয়া। শনিবারই আক্রমণাত্মক অভিযানে অগ্রসর হয়েছে হান্দারাত ক্যাম্প দখল করে সিরীয় বাহিনী। শহরটির অর্ধেক নিয়ন্ত্রণ করতো বিদ্রোহীরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিমান থেকে মুহূর্মুহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। হান্দারাত শহরটি বেশ কয়েক বছর ধরে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। শনিবার সিরীয় বাহিনী অগ্রসর হওয়ার পথে একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরও পুনর্দখল করে। আলেপ্পো যাওয়ার একটি প্রধান সড়কও দখল করে আসাদবাহিনী।

হান্দারাত হাতছাড়া হওয়ার কথা জানিয়েছেন এক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কর্মকর্তাও। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিযানে ‘বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে’।

নতুন অভিযান শুরুর পর আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলে অনেক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার অস্ত্রচুক্তি নিয়ে আলোচনাকেও কবর দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি রাশিয়ার সঙ্গে এ সপ্তাহে বৈঠকে বিমান হামলা বন্ধের আহ্বান জানান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এ আহ্বান অগ্রাহ্য করেছে রাশিয়া।

অস্ত্রবিরতি চুক্তির ভেঙে পড়া এবং বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে আসাদ সরকারের সর্বাত্মক হামলা চালানোর সিদ্ধান্তকে সংঘর্ষ কবলিত অঞ্চলটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। গত ছয় বছরের তুলনায় এবারই প্রথম শক্তি প্রদর্শণের মাধ্যমে বিদ্রোহীদের উৎখাত ও দমনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন আসাদ।

আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দারা জানান, যে কোনও সময়ের তুলনায় বিমান হামলা জোরদার হয়েছে এবং আগের চেয়ে শক্তিশালী বোমা ব্যবহার করা হচ্ছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কর্মকর্তা জানান, শনিবার এ অঞ্চলের অন্তত চারটি এলাকায় বিমান হামলা হয়েছে। বিদ্রোহীদের মতে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান থেকেই বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। হামলার ভিডিওতে দেখা যায়, বোমা নিক্ষেপের আঘাতে সৃষ্ট গর্ত অনেক গভীর ও আঘাতের ব্যাপ্তি অনেক বিস্তৃত।

পশ্চিমা দেশ ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পোতে প্রায় আড়াই লাখ বেসামরিক মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। গত কয়েক বছর ধরেই সিরিয়ার সবচেয়ে বড় এ শহর বিদ্রোহী ও সরকারিবাহিনী দুই ভাগে ভাগ করে নিয়ন্ত্রণ করছে। সিরীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা শুধু সশস্ত্র যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।

শনিবার সকালে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলের সিভিল ডিফেন্স প্রধান আম্মার আল সেলমো বলেন, এখন আকাশে শুধু যুদ্ধ বিমান। তিনি জানান, অ্যাম্বুলেন্স ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে বোমার আঘাতে ধ্বংসস্তুপ থেকে জীবিতদের উদ্ধার ও মরদেহ খুঁজে বের করে সমাহিত করা হচ্ছে। তাদের অনেক দফতরও হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। 

সিরিয়া সরকার ও তার সমর্থক যেমন ইরান, ইরাক ও লেবাননের শিয়া মিলিশিয়ারা এ বছরে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পো শহর ঘিরে রাখে। রাশিয়ার বিমান হামলার সহযোগিতায় এই গ্রীষ্মের আগেই বিদ্রোহীদের দখলমুক্ত করার উদ্দেশ্যেই আলেপ্পোকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

আলেপ্পোতে সরকার সমর্থিত ইরাকি মিলিশিয়া কমান্ডার রয়টার্সকে বলেন, তাদের লক্ষ্য এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো আলেপ্পো দখল করা।

শুক্রবার এক পশ্চিমা কূটনীতিক বলেছিলেন, সিরিয়া সরকারের পক্ষে পুরো আলেপ্পো দ্রুত দখলের একমাত্র উপায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো। তিনি বলেন, এটা হবে এমন নারকীয় হত্যাযজ্ঞ যা আগামী কয়েকটি প্রজন্ম ঘৃণাভরে স্মরণ করতে বাধ্য হবে। সূত্র: জাতিসংঘের ওয়েবসাই, বিবিসি, রয়টার্স।

/এমপি/

সম্পর্কিত
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রশংসা করলেন ডোনাল্ড লু
যুক্তরাষ্ট্রে ছুরিকাঘাতে ৪ জন নিহত
সর্বশেষ খবর
রাজধানী স্থানান্তর করছে ইন্দোনেশিয়া, বিশেষ মর্যাদা পাচ্ছে জাকার্তা
রাজধানী স্থানান্তর করছে ইন্দোনেশিয়া, বিশেষ মর্যাদা পাচ্ছে জাকার্তা
সড়ক আইনে শাস্তি ও জরিমানা কমানোয় টিআইবির উদ্বেগ
সড়ক আইনে শাস্তি ও জরিমানা কমানোয় টিআইবির উদ্বেগ
পিসিবি প্রধানের আস্থা হারালেও শ্বশুরকে পাশে পাচ্ছেন শাহীন
পিসিবি প্রধানের আস্থা হারালেও শ্বশুরকে পাশে পাচ্ছেন শাহীন
ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিচার শুরু
ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিচার শুরু
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
রাজধানীর ৫ জায়গায় তরমুজ বিক্রি হবে কৃষকের দামে
রাজধানীর ৫ জায়গায় তরমুজ বিক্রি হবে কৃষকের দামে