মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) সিরিয়া ও ইরাকে এক-চতুর্থাংশেরও বেশি এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। ২০১৫ সালে ওইসব এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান আইএইচএস জানিয়েছে, ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে যখন আইএস সিরিয়া ও ইরাকের একটা বড় অংশ দখল করে ফেলে, সেই তুলনায় তা বর্তমানে ২৮ শতাংশ কমে এসেছে।
আইএইচএস বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকা ৭৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার থেকে কমে আসে ৬৫ হাজার ৫০০ বর্গ কিলোমিটারে, যার আয়তন প্রায় শ্রীলঙ্কার সমান।
তবে গত তিন মাসে জঙ্গি সংগঠনটির নিয়ন্ত্রিত এলাকা হারানোর গতি কমে আসে। চলতি বছরের জুলাই থেকে মাত্র দুই হাজার ৮০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে তারা।
আইএইচএস-এর তথ্যমতে, রাশিয়া আইএস-এর ওপর বিমান হামলা শুরুর পরই তারা বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে। তবে সম্প্রতি রাশিয়া আইএস-এর ওপর বিমান হামলা কমিয়ে আনলে তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা হারানোর গতিও কমে আসে। বছরের শুরুতে প্রায় ২৬ শতাংশ হামলার লক্ষ্যবস্তুই ছিল আইএস। যা পরে ১৭ শতাংশে কমে আসে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছিলেন, রুশ অভিযানের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের ওপর হামলা চালানো, বিশেষত ইসলামিক স্টেট।
তবে আইএইচএস-এর রাশিয়া বিষয়ক প্রধান বিশ্লেষক অ্যালেক্স কোকচারোভ বলেন, ‘আমাদের তথ্য অনুযায়ী, রুশ অভিযানের প্রধান লক্ষ্য হলো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সামরিক সহায়তা দিয়ে বহুদলীয় গৃহযুদ্ধকে সিরীয় সরকার এবং আইএস মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক লড়াইয়ে রূপান্তর করা। বিদ্রোহীদের প্রতি আন্তর্জাতিক সহায়তার তোয়াক্কা না করে তাদের ওপর রাশিয়া অধিক পরিমাণে হামলা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন অ্যালেক্স।
তবে তা সত্ত্বেও আইএস এলাকা হারাচ্ছে। ইরাকি বাহিনী কাইয়ারা বিমান বাহিনী মুক্ত করেছে। যা কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ইরাকে আইএস-এর শক্তিশালী ঘাঁটি মসুল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
আইএস তাদের গুরুত্বপূর্ণ শহর মানবিজের নিয়ন্ত্রণও হারিয়েছে। ওই শহরটি তুরস্কের সঙ্গে আইএস-এর কথিত রাজধানী রাক্কার যোগাযোগের রুট ছিল। চলতি বছরের আগস্টে মার্কিন সমর্থিত কুর্দি ও আরব বিদ্রোহীরা শহরটি দখল করে নেয়।
মসুলে চলতি মাসের শেষ দিকে সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে ইরাকি বাহিনী। আর মসুল নিয়ন্ত্রণমুক্ত হলে তা আইএস-এর ওপর এক বড় আঘাত হবে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসুল শহরটি ২০১৪ সাল থেকেই আইএস-এর দখলে রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি।
/এসএ/