X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিজোফ্রেনিয়াকে মানসিক বিকৃতি বলতে নারাজ পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট

বিদেশ ডেস্ক
২২ অক্টোবর ২০১৬, ১৪:২০আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০১৬, ১৪:২৬
image

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সিজোফ্রেনিয়া মানসিক বিকৃতি নয়, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের আলোচিত এক মামলার রায়ে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, মানসিক বিকারগ্রস্তদের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বাধা রয়েছে। তবে পাকিস্তানে ইমদাদ নামের সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বাধা নেই বলে আদেশ দেয় পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত। সব দিক বিবেচনা করার দাবি জানিয়ে সর্বোচ্চ আদালত সিজোফ্রেনিয়াকে আরোগ্যযোগ্য রোগ বলে উল্লেখ করে। যদিও ‘আমেরিকান সাইকোলোজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ সিজোফ্রেনিয়াকে ‘একটি গুরুতর মানসিক অসুস্থতা’ বলে বর্ণনা করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র খবরে বলা হয়, ২০০২ সালে একজন ধর্মীয় নেতাকে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় ইমদাদকে। ২০১২ সালে সরকারি চিকিৎসরা ইমদাদ সিজোফ্রেনিয়ার আক্রান্ত বলে সনদ দেয়।তার স্ত্রী শাফিয়া বানু সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন, তার স্বামী মানসিক বিকারগ্রস্ত, আর সুস্থ হওয়ার আগে যেন তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করা হয়। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট সাফিয়া বানুর আপিল আবেদন বাতিল করে দিয়ে বলেন, “সিজোফ্রেনিয়া স্থায়ী মানসিক অসুস্থতা নয়।”
আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি আনোয়ার জহির জামালীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ ১১ পৃষ্ঠার এক রায়ে বলেন, ‘ওষুধ এবং অনেক ধরনের শারীরিক ও সামাজিক ব্যবস্থা এবং পুনর্বাসনের মাধ্যমে সিজোফ্রেনিয়ার আক্রান্ত ব্যক্তিদের আরোগ্যলাভের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। এটি এখন এমন অসুস্থতায় পরিণত হয়েছে যা থেকে আরোগ্যলাভ সম্ভব। ফলে কোনও দিক দিয়েই এটি আর মানসিক অসুস্থতার পর্যায়ে পড়ে না আমাদের মতে, মানসিক অসুস্থতা সম্পর্কিত আদেশ অনুযায়ী, অভিযুক্তকে যে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে, তা বিলম্বিত হওয়ার আওতায় পড়ে না।’

ইমদাদের আইনজীবী সারাহ বেলার সাংবাদিকদের বলেন, তার মক্কেলের অপরাধ বা শাস্তি কিছুই বোঝার ক্ষমতা নেই। ‘তিনি সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত বলে চিকিৎসকরা যে সনদ দিয়েছেন ২০১৬ সালের আগে সেটি কখনওই আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি।’ বলে ন ইমদাদের আইনজীবী।

ইমদাদের স্ত্রী সাফিয়া বানু রয়টার্সকে বলেন, “তিনি সব সময়ই পুরোপুরি ভ্রমের মধ্যে থাকেন।”

এদিকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি ইমদাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় তবে তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হবে। 

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় বুরেওয়ালা জেলার অধিবাসী ইমদাদকে ২০০২ সালে নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। পরে হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও সেই রায় বহাল থাকে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টও ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন খারিজ করেছেন।

চলতি বছরের ২৬ জুলাই ইমদাদের স্ত্রী মুলতান হাই কোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। সেখানে বলা হয়, তার স্বামী মানসিক বিকারগ্রস্ত, তার সুস্থতার আগে যেন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করা হয়। হাই কোর্ট গত ২৩ আগস্ট ওই আবেদন খারিজ করেন।

এরপর ইমদাদের স্ত্রী শাফিয়া সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির একটি বেঞ্চ গত ২৭ সেপ্টেম্বর এক আদেশে ইমদাদের মৃত্যুদণ্ড সাময়িকভাবে স্থগিত করেন। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) ওই আবেদনেরই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রদান করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সিজোফ্রেনিয়াকে মানসিক বিকৃতি বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ওই রায়ে বলা হয়, ‘সিজোফ্রেনিয়া কোনও স্থায়ী মানসিক বিকৃতি নয়, এর মাত্রা মানসিক চাপের ওপর নির্ভর করে বাড়তেও পারে, কমতেও পারে।’

২০০১ সালের মানসিক স্বাস্থ্য আইন-এর কথা উল্লেখ করে ওই রায়ে বলা হয়, ‘সিজোফ্রেনিয়া থেকে আরোগ্য সম্ভব। কিন্তু স্থায়ী মানসিক বিকৃতি তাকেই বলে, যার আরোগ্য সম্ভব নয়।’

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রেফারেন্স হিসেবে ১৯৭৭ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ভীষণ গুপ্ত মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে অভিযুক্তের মা দিল্লি হাই কোর্টে অনুরূপ একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন।

/এসএ/বিএ/ 

সম্পর্কিত
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৫ অভিবাসী নিহত
সর্বশেষ খবর
ভ্যাটেই মিলবে রাজস্ব, অথচ ভ্যাট বাড়াতে অনীহা
ভ্যাটেই মিলবে রাজস্ব, অথচ ভ্যাট বাড়াতে অনীহা
বাংলাদেশে দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগের ফল দৃশ্যমান হচ্ছে
গ্লোবাল স্কিলস ফোরামে বক্তারাবাংলাদেশে দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগের ফল দৃশ্যমান হচ্ছে
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট কাল
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট কাল
তীব্র গরমে পানি চাইতে চাইতেই ট্রাফিক পুলিশের মৃত্যু
তীব্র গরমে পানি চাইতে চাইতেই ট্রাফিক পুলিশের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা