গত এক দশকে বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল হোতাসহ অন্যান্য অপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে কেবল ৩ শতাংশ ঘটনার ক্ষেত্রে। সাংবাদিকদের স্বাধীনতায় কাজ করা বৈশ্বিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিজম-সিপিজে প্রকাশিত সবশেষ বৈশ্বিক দায়মুক্তি তালিকা থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
উল্লেখ্য, প্রতিটি দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে কত সংখ্যক সাংবাদিক হত্যার শিকার হচ্ছেন তা হিসেব করে এই দায়মুক্তি সূচক তৈরি করা হয়েছে। এতে উঠে এসেছে ৮টি ভয়াবহ চিত্র।
এগুলো হলো:
১. ৩১ আগস্ট ২০১৬ পর্যন্ত গত দশ বছরে ১৩ টি দেশের সমন্বিত তথ্যের ভিত্তিতে সিপিজে জানিয়েছে, সাংবাদিক হত্যার ৮০ শতাংশ ঘটনাই ওইসব দেশে ঘটেছে।
২. সিপিজে এই তালিকা প্রকাশ শুরু করার পর (২০০৮) থেকে ওই ১৩ দেশের মধ্যে ৮টি দেশ প্রতিবারই সাংবাদিক হত্যার বিচারহীনতায় ঘটনায় তালিকাভূক্ত হয়েছে। এতেই বোঝা যায়, ওই দেশগুলোতে বিচারহীনতার সংস্কৃতি সমাজের কতোটা গভীরে প্রোথিত।
৩. সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের ক্ষেত্রে ভয়াবহভাবে পিছিয়ে থাকা এইসব দেশের মধ্যে ভারত, নাইজেরিয়া, মেক্সিকো, ফিলিপাইন কমিউনিটি অব ডেমোক্র্যাসিজ নামের জোটের অংশ। যে জোট গণতন্ত্রকে ধরে রাখা এবং একে ক্রমাগত শক্তিশালী করে যাওয়ার মতো গণতন্ত্রের প্রাথমিক শর্তগুলো নিয়ে কাজ করে।
৪. সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের মামলাগুলোর সন্দেহভাজনদের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসসহ অপরাপর জঙ্গি সংগঠন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তি ৪০ শতাংশ ঘটনায় জড়িত।
৫. ঘটনার শিকার হওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে ৯৫ শতাংশই স্থানীয় সাংবাদিক। অন্য যে কোনও খাতের সাংবাদিকদের সাপেক্ষে তুলনা করলে তারা মূলত রাজনীতি ও দুর্নীতি নিয়েই বেশি কাজ করেছেন।
৬. খুন হওয়া সাংবাদিকদের ৪০ শতাংশই মৃত্যুর আগে হুমকি পেয়েছিলেন। খুব কমক্ষেত্রেই এই হুমকিগুলোর তদন্ত হয়েছিল। সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছিল খুব কম সাংবাদিকের ক্ষেত্রেও।
৭. গত দশ বছরে খুন হওয়া সাংবাদিকদের ৩০ শতাংশকে প্রথমে জিম্মি করা হয়েছিল। তাদের বেশিরভাগই নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন। হত্যাকারীরা মিডিয়ার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট জায়গায় বার্তা পৌঁছে দাবি আদায় করতে ওইসব নিপীড়নের ঘটনাকে ব্যবহার করেছিল।
৮. গত এক দশকে সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল হোতাসহ অন্যান্য অপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে কেবল ৩ শতাংশ ঘটনার ক্ষেত্রে।
/বিএ/