X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘নিরাপত্তা নেটওয়ার্কে’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রবেশাধিকার নিয়ে বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা

বিদেশ ডেস্ক
১২ নভেম্বর ২০১৬, ০২:২৮আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০১৬, ০২:৩৩

ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের যৌথ সার্ভিলেন্স নেটওয়ার্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রবেশাধিকারের সম্ভাবতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকার কর্মী এবং সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। দি গার্ডিয়ান পত্রিকায় এ সম্পর্কিত দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হয়। এরপরপরই বিশেষজ্ঞরা এ ধরনের আশঙ্কা প্রকাশ করতে থাকেন।

গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছ,  একই সঙ্গে সার্ভিলেন্স নেটওয়ার্কে প্রবেশাধিকারে উদারিকরণ নীতি অবলম্বন করায় বারাক ওবামার প্রশাসনের সমালোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এমন সিদ্ধান্তের ফলে ২০১৩ সালে এডওয়ার্ড স্নোডেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এসএসএ) গোপনীয় নথি প্রকাশ করে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। তবে ওবামার প্রশাসন এ বিষয়ে কোনও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ না করে শুধুমাত্র নিরাপত্তা জোরদার করে।

সম্প্রতি স্নোডেন তার নিরাপত্তার শঙ্কার বিষয় অস্বীকার করায় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এ ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। স্নোডেন জানিয়েছেন, ‘যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাকে দেশে ফিরিয়ে নিতে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে চুক্তি করে, তারপরও আমি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে এত চিন্তিত নয়।’

এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প স্নোডেনকে একজন ‘গোয়েন্দা’ অবিহিত করে উল্লেখ করেন, ‘স্নোডেন যুক্তরাষ্ট্রের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করেছে।’

গত বৃহস্পতিবার স্নোডেন রাশিয়ার মস্কো থেকে নেদারল্যান্ড কেন্দ্রীক একটি প্রযুক্তি কোম্পানির সঙ্গে এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছে, ‘‘পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের গোপন চুক্তির বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টি যদি আমাকে খুব বেশি উদ্বিগ্ন করে, তবে আমি ‘খুব গোপনীয়’ তথ্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকবো।’’

যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সার্ভার থেকে ফাইল চুরি করে প্রকাশ করার অপরাধে ২০১৩ সাল থেকে স্নোডেন দেশ ছাড়া। তিনি ওই সময় থেকেই রাশিয়ার আশ্রয়ে আছেন। যদিও গত জুলাই মাসে তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। এরপরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গুপ্তচারবৃত্তিমূলক আইনের আওতায় স্নোডেনকে ফেরত চেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, ট্রাম্প সরকার আগের সরকারের মিমাংশিত বিষয়গুলোর সার্ভিলেন্স ও গোপনীয়তার মধ্যে একটি সামঞ্জস্য গড়ে তুলবেন। যুক্তরাজ্যের সার্ভিলেন্স এজেন্সি জিসিএইচকিউ যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এনএসএ) সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে। যারা ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর কাজের ক্ষেত্রে উভয় সংকটের সম্মুখীন হবে বলে আশঙ্কা করছে।

এর আগে নির্বাচনি প্রচাভিযানে ট্রাম্প সার্ভিলেন্সে প্রবেশাধিকারের ইচ্ছা পোষণ করে জানিয়েছিল, ‘আমি আশা করি, আমার সেই (সার্ভিলেন্সে প্রবেশাধিকার) ক্ষমতা থাকবে।’

যদিও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউজ কর্তৃপক্ষ। তবে তারা জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সার্ভিলেন্সে প্রবেশাধিকার পাবে-এ বিষয়ে তাদের কাছে সঠিক কোনও প্রমাণ নেই।

যদিও হোয়াইট হাউজ কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে, দেশটির গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ ও সাধারণের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা হবে। এছাড়া বর্তমান গোয়েন্দা বিভাগে কর্মকর্তারাও ট্রাম্পের শাসনামলে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবে।

কিন্তু অনেকে হোয়াইট হাউজের এ ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি। প্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যালিক্স ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক নিক মেরিল জানিয়েছেন, ‘বারাক ওবামার সময় ড্রোন হত্যা ও গণ সার্ভিলেন্সের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন অনেক ব্যক্তি রয়ে গেছেন, যাদের ওবামা প্রশাসন অনেক বিশ্বাস করেছিল। যেমনটি স্নোডেনকেও বিশ্বাস করা হয়েছি। ঘাপটি মেরে বসে থাকা এসব লোক সুযোগ পেলেই ফিরে এসে আমাদের সবার পেছনে কামড়ে ধরবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাবেক কর্মকর্তা জন নেপিয়ার জানিয়েছেন, ‘ওবামা ও বুশ সরকার সার্ভিলেন্সের সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন। তবে সমস্যা হলো নির্বাহী ক্ষমতা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ট্রাম্পও তার নির্বাহী আদেশ জারি করে সার্ভিলেন্সে প্রবেশাধিকার পেতে পারেন। যা একেবারেই গোপন থাকবে। তবে এটা স্পষ্ট যে এখনও যুক্তরাষ্ট্রের জনগণই জানে না এনএসএ এখনও কত জনের তথ্য সার্ভিলেন্সে সংরক্ষণ করেছে।’

এদিকে গার্ডিয়ানের অন্য এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়াকে পৃথিবীর জন্য বিপর্যয় বলে উল্লেখ করেছেন জলবায়ু বিজ্ঞানীরা। দেশটির জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মিশেল মান জানিয়েছেন, ‘ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়া পৃথিবীর জলবায়ুর জন্য একটি উন্মাদ খেলা হতে পারে। কারণ তার সময়ে পৃথিবীর উষ্ণতা বিপদ সীমার নীচে রাখা অসম্ভব হবে।’

দেশটির জাতীয় জলবায়ু গবেষণা কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী কেভিন ট্রেনবার্থ জানিয়েছেন, ‘ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়া পৃথিবীর জন্য উপশমহীন দুর্যোগ সৃষ্টি হবে। কারণ ট্রাম্প ইতোমধ্যেই জলবায়ু সম্পর্কিত সব চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রেন্ডস অব দি আর্থ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের জলবায়ু বিষয়ক পরিচালক বেনজামিন স্ক্রেইবার জানিয়েছেন, ‘দেশটির জনগণ কয়লা পোড়ানোর পক্ষে ভোট দিয়েছে। যা বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন করে ফেলবে। ফলে দারিদ্রতা, দুর্ভিক্ষ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে। আর ভবিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু পরিবর্তনের দায়ে বিশ্বে একটি খারাপ দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে।’

/এসএনএইচ/

 

সম্পর্কিত
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
এরদোয়ানের যুক্তরাষ্ট্র সফর, যা জানা গেলো
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
সর্বশেষ খবর
ধারণার চেয়ে কম সেনা প্রয়োজন ইউক্রেনের: সিরস্কি
ধারণার চেয়ে কম সেনা প্রয়োজন ইউক্রেনের: সিরস্কি
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’