নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রহ উপেক্ষা করে ব্রেক্সিট ক্যাম্পেইনার নাইজেল ফারেজকে যুক্তরাষ্ট্রে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত করার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে ব্রিটেন। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) এক টুইটে ফারেজকে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত হিসেবে দেখতে পাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। তবে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের পদটি ফাঁকা নেই উল্লেখ করে ফারেজকে নিয়োজিত করার সম্ভাবনা নাকচ করে দেয় যুক্তরাজ্য সরকার।
গত ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর বৈঠকের ক্ষেত্রে যেকোনও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতার চেয়ে ফারেজকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। নির্বাচনের পর ফারেজের সঙ্গেই সর্বপ্রথম সাক্ষাৎ হয় তার। ট্রাম্প যে ফারেজকে খুব পছন্দ করেন তা স্থানীয় সময় সোমবার (২১ নভেম্বর) আরেকবার জানিয়ে দেন ট্রাম্প। এদিন ফারেজকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত ব্রিটিশ দূত হিসেবে দেখতে পাওয়ার আশা প্রকাশ করে একটি টুইট করেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
টুইটে তিনি লিখেছিলেন, ‘অনেক মানুষই যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেট ব্রিটেনের প্রতিনিধি হিসেবে ফারেজকে দেখতে চাইবে।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে খুব বেশি দেরি করেননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। মঙ্গলবার, ট্রাম্পের মন্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিট-এর মুখপাত্র বলেন, ‘পদ ফাঁকা নেই। যুক্তরাষ্ট্রে এরইমধ্যে আমাদের একজন প্রতিনিধি নিয়োজিত আছেন’।
আধুনিক যুগে কোনও দেশের নেতা বিদেশি রাষ্ট্রদূত নিয়ে নিজের পছন্দের কথা জানানো এবং তাকে রাষ্ট্রদূত মনোনীত করতে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান করার ঘটনা খুবই বিরল। অবশ্য, অনেকসময় দ্বিপাক্ষিক তিক্ততাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার কিংবা বহিষ্কারের ঘটনা দেখা যায়।
এদিকে সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে,সম্পর্কোন্নয়নের অংশ হিসেবে ২০১৭ সালে ট্রাম্পকে যুক্তরাজ্য সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। থেরেসা মের কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিটের মুখপাত্র বলেন,‘যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর একটি রাষ্ট্রীয় সফরের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছেন। তার মধ্যে ২০১৭ সালে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টকে রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাজ্যে আমন্ত্রণের বিষয়টি রয়েছে।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্পকে যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে ব্রিটিশ এমপিরা বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন। অনলাইনে একটি পিটিশনে ট্রাম্পকে যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ করার জন্য প্রায় অর্ধকোটি ব্রিটিশ নাগরিক আবেদন করেছিলেন। তবে গত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয় লাভের পর সে পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ‘বিশেষ সম্পর্ক’ বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। এরই অংশ হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও যুক্তরাজ্য সফরে আমন্ত্রণ জানানোর কথা ভাবা হচ্ছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা ভাবা হলেও তার আগ্রহে সাড়া দিয়ে নিজেল ফারেজকে যে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত করা হচ্ছে না তা পরিষ্কার করেই জানিয়ে দিল ডাউনিং স্ট্রিট।
/এফইউ/