X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

'জাতিগত নিধন'-এ জড়িত মিয়ানমারে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

বিদেশ ডেস্ক
০৬ ডিসেম্বর ২০১৬, ০০:০৫আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৪:২১
image

'জাতিগত নিধন'-এ  জড়িত মিয়ানমারে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার মিয়ানমারের ওপর থেকে আংশিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে যেন জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার বৈধতা দিল বারাক ওবামার সরকার। নিউ ইয়র্ক টাইমসের শুক্রবারের এক খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের ওপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞা আংশিক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে যখন রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ সংঘটিত হচ্ছে বলে দুই দফায় জানিয়ে দিয়েছে জাতিসংঘ। সেখানে জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়া (এথনিক ক্লিনজিং) চলছে বলেও অভিযোগ তুলেছে জাতিসংঘ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ স্যাটেলাইট ইমেজে দেখিয়েছে, কীভাবে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গা বসতি। তা সত্ত্বেও মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি দেখছেন ওবামা। বলেছেন, মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে কার্যকর অগ্রগতি অর্জন করেছে মিয়ানমার। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস গত ২ ডিসেম্বর শুক্রবারের এক প্রতিবেদনে জানায় ( ৫ ডিসেম্বর সংশোধিত) মিয়ানমারের ওপর থেকে বাণিজ্যিক অবরোধ তুল নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার  বারাক ওবামা এ সংক্রান্ত বিলে স্বাক্ষর করতে গিয়েই রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে নিশ্চুপ ছিলেন ওবামা। উল্টো মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন হওয়ার কথা বলেছেন তিনি। 

এ বছর অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি, এরপর থেকেই রাখাইন রাজ্যে 'ক্লিয়ারেন্স অপারেশন' চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। রোহিঙ্গা মুসলমানদের ইসলামি চরমপন্থা দমনে কাজ করছেন বলে দাবি করছেন তারা। আর তা এমন কঠোর প্রক্রিয়ায় চালানো হচ্ছে যে সেখানে সংবাদমাধ্যমকেও প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নের অজুহাতেই তাদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।  

নিউ ইয়র্ক টাইমস গত ২ ডিসেম্বর শুক্রবারের এক প্রতিবেদনে জানায় ( ৫ ডিসেম্বর সংশোধিত) মিয়ানমারের ওপর থেকে বাণিজ্যিক অবরোধ তুল নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার  বারাক ওবামা এ সংক্রান্ত বিলে স্বাক্ষর করতে গিয়েই রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে নিশ্চুপ ছিলেন ওবামা। উল্টো মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থির উন্নয়নের কথা বলেছেন তিনি। নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে,  অং সান সু চির বিজয় নিয় বেশ উচ্ছ্বাসিত ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তারা জানিয়েছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্টের একান্ত প্রচেষ্টায় মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। তবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক ভয়াবহ জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়া সেই উচ্ছ্বাস হাওয়ায় মিলিয়ে দিয়েছে যেন।

জাতিসংঘ এরইমধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ এনেছে। তাদের বিরেুদ্ধে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডেরও অভিযোগ তোলা হয় দুই দফায়। ২০১২ সালে মিয়ানমার সরকারের মদদপুষ্ট উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের তাণ্ডবে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা নিহত হন। ঘর ছাড়তে বাধ্য হন ১ লাখেরও বেশি মানুষ। এবারের সংঘর্ষে রাখাইন রাজ্যের মৃতের সংখ্যা ৮৬ জন বলে জানিয়েছে তারা। জাতিসংঘের হিসাব মতে, এখন পর্যন্ত ঘরহারা হয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। পালাতে গিয়েও গুলি খেয়ে মরতে হচ্ছে তাদের। 

নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে,  অং সান সু চির বিজয় নিয় বেশ উচ্ছ্বাসিত ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তারা জানিয়েছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্টের একান্ত প্রচেষ্টায় মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। তবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক ভয়াবহ জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়া সেই উচ্ছ্বাস হাওয়ায় মিলিয়ে দিয়েছে যেন।
তা সত্ত্বেও দেশটির ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে কারণেই সম্ভবত বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করেনি ওয়াশিংটন অফিস। নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে,  তারা বেশ নিচু কণ্ঠে শুক্রবার অবরোধ তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয়।

মিয়ানমারে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস করে। কিন্তু, সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা তাদেরকে দেশটির নাগরিক হিসেবে স্বীকার তো করেই না বরং এসব রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দাবি করে থাকে। রাখাইন রাজ্যে এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টির পরেও চলমান দমন প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অস্বীকার করে দায় এড়াতে চাইছে দেশটির সরকার। রোহিঙ্গারা নিজেরাই নিজেদের বাড়িঘর পোড়াচ্ছে বলেও দাবি করছে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়  নিশ্চিত করেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবেই চেনে।

নিজ দেশের নাগরিকদের অন্য দেশে ঠেলে দেওয়া অথবা নির্মূল করে ফেলার প্রবণতা যে রাষ্ট্রের,  সেই রাষ্ট্রের ওপর থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয় অনেকটা চুপিসারেই। কারণ হিসেবে নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে,  সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে নির্বিচারে রোহিঙ্গা নিধন ও অত্যাচারের বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের আলোচনার কেন্দ্রে থাকায় ওয়াশিংটন বেশ গোপনেই ঘোষণাটি দিল।

বারাক ওবামা মিয়ানমারের ওপর থেকে বাণিজ্যিক অবরোধ তুলে নিলেও ইরান ও উত্তর কোরিয়া সহ আরো বেশ কিছু দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি রাখছে। মার্কিন কংগ্রেসের মাধ্যমে এই অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এই ঘোষণা বলে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্য বা সাবেক সদস্যরা সংযুক্ত রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আবারো বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে মার্কিন ব্যবসায়ীরা। দেশটি থেকে মূল্যবান পাথর ও মুক্তা সংগ্রহ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

/বিএ/

সম্পর্কিত
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভস্নাতক অনুষ্ঠান বাতিল করলো ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
পশ্চিমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চীনকে যা করতে হবে
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
সর্বশেষ খবর
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
ফরিদপুরে দুই শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে খেলাফত মজলিসের মিছিল
ফরিদপুরে দুই শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে খেলাফত মজলিসের মিছিল
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!