যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ফোর্ট লডারডেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হামলার সময়ে কোনওভাবে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্ত থেকে পালিয়ে আসেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তিকে তাড়া করে আসা বুলেটের গতি থামিয়ে দেয় তার সঙ্গে থাকা ল্যাপটপ। ফলে বুলেটটি আর তার শরীরে বিদ্ধ হতে পারেনি। প্রাণে বেঁচে যান স্টিভ ফ্র্যপিয়ার নামের ওই ব্যক্তি।
ফোর্ট লডারডেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকে এক বন্দুকধারী যখন এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে তখন বিমানবন্দরের টার্মিনাল টু-এর ভেতর অন্য ভ্রমণকারীদের সঙ্গেই ছিলেন স্টিভ ফ্র্যপিয়ার। গুলি-বিস্ফোরণের জোরালো আওয়াজ পাচ্ছিলেন তিনি।
ফেডারেল কর্তৃপক্ষের হিসাবে, ওই তাণ্ডবে নিহত হন অন্তত পাঁচজন। আহত হন ছয়জন। গোলাগুলির ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আতঙ্কে আহত হন ৪০ জনেরও বেশি মানুষ।
হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। ২৬ বছরের ওই ব্যক্তির নাম ইস্তেবান সান্তিয়াগো।
এ হামলার ঘটনায় তদন্তকাজ চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তবে এখনও পর্যন্ত হামলার কোনও মোটিভ বা উদ্দেশ্য নিরূপণ করতে পারেনি পুলিশ।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর কাছে সেদিনের চরম যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন স্টিভ ফ্র্যপিয়ার নামের ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘এটা ছিল পুরোপুরি নিস্তব্ধ। আমরা সবাই শুধু বন্দুক থেকে গুলিবর্ষণের শব্দ শুনছিলাম।
তিনি ব্যাকপ্যাক পরে মাটিতে শুয়ে পড়লেন। এরপর তিনি নিজের শরীরের পেছনে কিছু একটা আঘাত অনুভব করলেন।
স্টিভ ফ্র্যপিয়ার বলেন, “এরপর আমি নিজেকে পরীক্ষার জন্য বাথরুমে গেলাম। দেখলাম, বুলেটটি ব্যাকপ্যাকে প্রবেশ করে আমার ল্যাপটপে বিদ্ধ হয়েছে। পরে আমি ব্যাকপ্যাকটি তদন্তের জন্য এফবিআই’কে দেই। তারা পকেটে বুলেটটি খুঁজে পায়…।”
হামলার প্রত্যক্ষদর্শী স্টিভ ফ্র্যপিয়ার-এর একজন বন্ধু ফেসবুকে অ্যাপলের ওই ল্যাপটপটির একটি ছবি পোস্ট করেছেন। এতে দেখা যায়, ল্যাপটপটির নিচের অংশে বুলেটের আঘাতে তৈরি হওয়া একটি গর্ত।
হিথ আইনস্টাইন নামের ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমার বন্ধুর জন্য আনন্দিত। স্টিভ ফ্র্যপিয়ার নিরাপদ। এই ছবিতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, মাটিতে শুয়ে পড়লেও ল্যাপটপের জন্যই হয়তো তার জীবনটা বেঁচে গেছে। আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধ করা এবং এর সমাধানের জন্য কিছুই না করার মধ্যে নিশ্চয়ই একটা গভীর খাদ রয়েছে।’
স্টিভ ফ্র্যপিয়ার বলেন, মেঝেতে শুয়ে পড়ার সময় এতো কিছু চিন্তা করে তিনি ল্যাপটপটি ব্যাগে ঢোকাননি। তার ভাষায়, ‘ব্যাকপ্যাকটি আমার জীবন বাঁচিয়েছে।’ সূত্র: ইন্ডিপেনডেন্ট।
/এমপি/