সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহকারি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হয়ত ইসলামি তাত্ত্বিকদের সমালোচনার মুখোমুখি হতে হবে। আর এজন্য আগে থেকেই তিনি তিনটি দীর্ঘমেয়াদী কৌশল সামনে এনেছেন বলে শনিবার ফরেন অ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিন জানিয়েছে।
৩১ বছর বয়সী এই সহকারি যুবরাজকে অর্থনৈতিক সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে তিনি সৌদি রাজতন্ত্র ও সমাজে সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের পরিকল্পনা সামনে এনেছেন বলে এক গবেষক জানিয়েছেন। ওই গবেষকদের গত মাসে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল।
ফরেন অ্যাফেয়ার্স-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ বিন সালমান মনে করেন খুব অল্প সংখ্যক ইসলামি তাত্ত্বিকই গোঁড়ামিবাদে আক্রান্ত। যেখানে অর্ধেকেরও বেশি তাত্ত্বিক ওই সংস্কার প্রক্রিয়া ও আলোচনাকে সমর্থন করে তাতে অংশ নেবেন। বাদ বাকিরা পরস্পরবিরোধী অথবা এমন এক অবস্থানে রয়েছেন, যা এই প্রক্রিয়াকে ক্ষতি করতে পারে না।
মোহাম্মদ বিন সালমান ‘ভিশন ২০৩০’ নামক এক সংস্কার পরিকল্পনায় রাজতন্ত্রের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের বিষয়টি সামনে আনেন। আর অর্থনৈতিক সংস্কারের সঙ্গেই সামনে আসে সামাজিক পুনর্গঠনের প্রশ্ন।
এমন এক রক্ষণশীল সমাজ, যেখানে কঠোরভাবে ওয়াহাবি ইসলাম চর্চা হয়, যেখানে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ, যেখানে সিনেমা হল, কনসার্ট নিষিদ্ধ; সেখানে নারীর ক্ষমতায়ন, খেলাধূলায় প্রণোদনা দেওয়া, বিনোদনে বিনিয়োগ করাটা অবশ্যই ‘বিতর্কিত’। আর এসবই রয়েছে ওই ‘ভিশন ২০৩০’ পরিকল্পনায়।
সৌদি আরবের শাসন কাঠামোয় ধর্মীয় তাত্ত্বিকরা বাদশাহর প্রতি তাদের সমর্থন জ্ঞাপন করে থাকেন। যিনি ইসলামের পবিত্রতম স্থানগুলোর রক্ষণ হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করেন। বিচার ব্যবস্থা ওই তাত্ত্বিকদেরই হাতে থাকে। তবে অন্যান্য বিষয়াদি থাকে বাদশাহর হাতে। তাদের চর্চিত ইসলামি আইনের সঙ্গে তা সাংঘর্ষিক না হয়ে থাকলে এই ব্যবস্থাই কার্যকর থাকে।
২০০৩ সাল থেকে দেশের ভেতরেই জঙ্গি হামলা শুরু হলে, সৌদি সরকার কট্টর ধর্মীয় তাত্ত্বিকদেরও উগ্রপন্থা ও আল-কায়েদার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিতে চাপ দিয়েছে।
সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহর শেষ সময়ে বর্তমান বাদশাহ সালমানের সামাজিক সংস্কারের কিছু পদক্ষেপও ধর্মীয় তাত্ত্বিকরা মেনে নিতে পারেননি। দ্বন্দ্বের জের হিসেবে কয়েকজন চাকরিচ্যুত হন।
সূত্র: রয়টার্স।
/এসএ/