X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

পিয়ংইয়ং-এর হাতে ১০টি পারমাণবিক বোমা বানানোর প্লুটোনিয়াম!

বিদেশ ডেস্ক
১১ জানুয়ারি ২০১৭, ২০:২২আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০১৭, ২১:৫২

পিয়ংইয়ং-এর হাতে ১০টি পারমাণবিক বোমা বানানোর প্লুটোনিয়াম! উত্তর কোরিয়া এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ কেজি প্লুটোনিয়াম উৎপাদন করেছে। এটি দিয়ে ১০টি পারমাণবিক বোমা বানানো সম্ভব। বুধবার প্রকাশিত ২০১৬ সালের প্রতিরক্ষা বিষয়ক শ্বেতপত্রে এমনটাই দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, ২০১৪ সাল পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার হাতে ৪০ কেজি বোমা বানানোর উপযুক্ত প্লুটোনিয়াম ছিল। এছাড়া, পিয়ংইয়ং উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনে সক্ষম; যা দিয়ে পরমাণু বোমা বানানো যাবে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

উত্তর কেরিয়ার নেতা কিম জং উন নতুন বছরের বক্তৃতায় ঘোষণা করেছিলেন, তার দেশ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বানানোর চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে যা আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে পারবে। সম্প্রতি দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যে কোনও সময় এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হবে।

এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশ্টোন কার্টার রবিবার বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক হুমকি এবং পরীক্ষা চালালে তা ভূপাতিত করা হবে।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছানোর মতো কোনও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজ উত্তর কোরিয়া শেষ করতে পারবে না। একইসঙ্গে উত্তর কোরিয়াকে চীন সামলাতে পারছে না উল্লেখ করে বেইজিং কর্তৃপক্ষকেও উপহাস করেন তিনি। উত্তর কোরিয়া একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) তৈরির শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে পিয়ং ইয়ং-এর ঘোষণার একদিন পর টুইটারে এমন দাবি করেন ট্রাম্প।

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় বরাবরই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

২ জানুয়ারি এক টুইটে ট্রাম্প দাবি করেন, ‘উত্তর কোরিয়া ঘোষণা দিয়েছে তারা যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর সক্ষমতা সম্পন্ন একটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সেটা ঘটবে না।’ তবে ট্রাম্প তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কি আইসিবিএম তৈরিতে উত্তর কোরিয়ার অক্ষমতার কথা বলেছেন নাকি সে অস্ত্র তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্র বাধা দেবে বলে বোঝাতে চেয়েছেন সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ইস্যুতে বলতে গিয়ে চীনকেও ছাড়েননি ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘চীন এক পাক্ষিক বাণিজ্য করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রচুর পরিমাণ অর্থ ও সম্পদ নিয়ে যাচ্ছে, অথচ উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারছে না। চমৎকার!’

উত্তর কোরিয়া ২০১৬ সালে বেশকটি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। আগের পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় গতবছর দেশটির এমন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ছিল লক্ষ্যণীয়। তবে পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদেরও ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানার মতো পারমাণবিক ওয়ারহেড যুক্ত আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির পর্যায় থেকে এখনও কয়েক বছর পিছিয়ে আছে পিয়ংইয়ং।

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন গতবছর ক্ষুদে পরমাণু বোমার আরও পরীক্ষা চালানোর জন্য দেশটির সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেন। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিশাল যৌথ সামরিক মহড়া এ নির্দেশ দেওয়া হয়। গত মার্চে একটি পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শনকালে কিম জং-উন ক্ষুদে পরমাণু বোমা তৈরির দাবি করেন। এ জাতীয় বোমা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে বসানো যায়। তখন কিমের বক্তব্যের সমর্থনে বেশকিছু ছবিও প্রকাশ করে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। তবে এসব ছবি থেকে এ দাবির সত্যতা নিরূপণ করা সম্ভব নয়।

পিয়ংইয়ং-এর হাতে ১০টি পারমাণবিক বোমা বানানোর প্লুটোনিয়াম!

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য চাপ দিয়ে আসছে। এ জন্য আলোচনা থেকে শুরু করে অবরোধ আরোপ পর্যন্ত নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে নিভৃতকামী কমিউনিস্ট দেশটির অবস্থানের বিশেষ পরিবর্তন নেই। তারা পরমাণু অস্ত্রের সম্ভার বাড়িয়েই চলেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া চাইছে, উত্তর কোরিয়া নিজে থেকে শর্তহীনভাবে তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি ত্যাগ করবে। কিন্তু পিয়ংইয়ং বারবার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি পরিত্যাগ করার কোনও ইচ্ছা তার নেই।

উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক পারমাণবিক পরীক্ষা ও দূরপাল্লার রকেট উৎক্ষেপণকে কেন্দ্র করে দেশটির সঙ্গে প্রতিবেশী ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এরমধ্যেই ২০১৬ সালের ৭ মার্চ শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ সামরিক মহড়া। এ মহড়াকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ায় পারমাণবিক হামলার হুমকি দেয় উত্তর কোরিয়া।

কোরিয়ান পিপল’স আর্মির সুপ্রিম কমান্ডের পক্ষ থেকে তখন এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যদি এ মহড়া বন্ধ করা না হয়, তাহলে ওই দুই পরস্পর মিত্র দেশে উপর্যুপরি পারমাণবিক হামলা চালানো হবে।

/এফইউ/

সম্পর্কিত
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৫ অভিবাসী নিহত
সর্বশেষ খবর
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা