X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে যে ব্রেসলেটটি ব্যবহারের কথা ভাবছে জার্মানি

বিদেশ ডেস্ক
১২ জানুয়ারি ২০১৭, ১৬:২৪আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০১৭, ১৬:২৪
image

অ্যাংকেল ব্রেসলেট বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়ার পর কী করে এ ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ড ঠেকানো যাবে তা নিয়ে ভেবে যাচ্ছে জার্মানি। সর্বশেষ গত মাসে বার্লিনে ট্রাক হামলার ঘটনায় এক  অভিবাসন প্রত্যাশীকে সন্দেহ করার পর জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থমাস দে মাইজেয়েরে এবং বিচারবিষয়কমন্ত্রী হেইকো মাস অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে কড়াকড়ি আরোপের ব্যাপারে একমত হন। অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে যেসব কড়াকড়ি আরোপের কথা তারা ভেবেছেন তার মধ্যে একটি হলো অ্যাংকেল ইলেক্ট্রনিক ব্রেসলেটের ব্যবহার। অর্থাৎ যেসকল অভিবাসন প্রত্যাশীকে অভিবাসনের অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং যাদেরকে নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করা হবে তাদের গোঁড়ালিতে এ ব্রেসলেট ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। তবে সন্ত্রাসী হামলা প্রতিহত করতে বিশেষ ব্রেসলেট ব্যবহার নিয়ে এরইমধ্যে জার্মান রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকরা বিতর্কে মেতেছেন। গোঁড়ালিতে পরিধানযোগ্য এসব ব্রেসলেট আদৌ কার্যকর হবে কিনা তা নিয়ে চলছে বিতর্ক।

যে ব্রেসলেট নিয়ে বিতর্ক চলছে সেটির কার্যকারিতা আসলে কেমন, এটি কী করতে পারে কিংবা কী করতে পারে না তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে। সে প্রতিবেদনের আলোকে ব্রেসলেটটি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

অ্যাংকেল ব্রেসলেট কী?

অ্যাংকেল ইলেক্ট্রনিক ব্রেসলেট হলো একধরনের ‘অপরাধী শনাক্তকরণ ব্যবস্থা’ বা ‘যন্ত্র’। স্পোর্টস ঘড়ির চেয়ে সামান্য বড় এ ব্রেসলেটটি পানিরোধক। যেসব সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে কিংবা যারা সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করছে তাদেরকে কাজে পাঠানোর সময় ওই ব্রেসলেট লাগিয়ে দেওয়া হলে তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা যায়। কোনও কোনও কারাবন্দি গোড়ালির ব্রেসলিটটি পড়ে গৃহবন্দি হিসেবেও সাজা ভোগ করতে পারে। তবে ব্রেসলেটলি কার্যকর হওয়ার পূর্বশর্ত হলো, যে সন্দেহভাজনের ক্ষেত্রে এ ব্রেসলেট ব্যবহার করা হচ্ছে তিনি এ প্রোগ্রামকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন দেবেন এবং তার পালিয়ে যাওয়ার কারণ নেই। যাকে ব্রেসলেটটি পরানো হবে তাকে এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করতে হবে যে কারাবরণ করার চেয়ে ইলেক্ট্রনিক ওই ব্রেসলেটটি পরে থাকা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের।

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গোড়ালিতে ব্যবহারযোগ্য ওই ব্রেসলেট দিয়ে সহিংস অপরাধীদেরকে অপরাধ সংঘটন থেকে বিরত করা যায় না। এক জোড়া শক্ত কাঁচি দিয়েই সহজে তা খুলে ফেলা যায়। কেউ যদি আত্মঘাতী হাশরার পরিকল্পনা করে তবে অপরাধী শনাক্তকরণ ব্যবস্থা দিয়ে তাকে আটকানো যায় না।  

অস্ট্রিয়াও অপরাধী শনাক্তকরণ ব্যবস্থা ব্যবহার করে থাকে
জার্মানিতে মনিটরিং-এর মাত্রা

অপরাধী শনাক্তকরণ ব্যবস্থা প্রথম চালু হয় যুক্তরাষ্ট্রে। পাঁচ বছর আগে যৌথভাবে এ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের ব্যাপারে সম্মত হয় জার্মানির কয়েকটি রাজ্য। মনিটরিং ডিভাইসে সংগ্রহ করা যাটা একটি কেন্দ্রীয় কম্পিউটারে এসে জড়ো হয়। এ পর্যন্ত এ ব্যবস্থার প্রোগ্রাম এমনভাবে করা আছে যেন কাজের জন্য কিংবা ভালো আচরণের জন্য মুক্তি পাওয়া অপরাধী কিংবা বিচারের অপেক্ষায় থাকা সন্দেহভাজনদের জন্য এর প্রোগ্রাম করা হয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম অনধিকারপ্রবেশমূলক যন্ত্রসহ মনিটরিং-এর জন্য বিভিন্ন যন্ত্র রয়েছে। অপরাধের ধরন এবং অপরাধীদের অপরাধের পথ থেকে ফিরে আসার সম্ভাবনা বিবেচনা করে একেকজনকে একেকটি ডিভাইস পরানো হয়ে থাকে।  

ইলেক্ট্রনিক ব্রেসলেটটির সতর্কতা সংকেত  

সত্যিকারের অ্যাংকেল ব্রেসলেট বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেইসব অপরাধীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, যাদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকায় প্রবেশ ও বের হওয়া নিষিদ্ধ। যেমন এটা ব্যবহার হতে পারে কোনও গৃহবন্দির ক্ষেত্রে কিংবা কোনও সহিংস স্বামী যেন তার স্ত্রীর বাড়ি কিংবা অফিসে গিয়ে উত্যক্ত না করতে পারেন। যে বাড়িতে অপরাধীকে মনিটর করা হবে সেখানে কর্তৃপক্ষ একটি রিসিভার ইনস্টল করেন। ওই রিসিভারের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত ব্রেসলেটটি থেকে সংকেত শনাক্ত করা হয়। ইচ্ছে করলে শনাক্তকরণের পরিসর বিস্তৃত করা যায়। অপরাধীর বসবাসের শহরকে কিংবা অঞ্চলকে পুরোপুরিভাবে মনিটরিং-এর আওতায় নিয়ে আসা যায়। ওই লোকটি কোথায় আছেন তা জিপিএস সিস্টেম শনাক্ত করে। এরপর সে ব্যক্তির গতিবিধিসহ বিভিন্ন তথ্য কেন্দ্রীয় সার্ভারে পাঠানো হয়। আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ীই ওই লোককে চলাফেরা করতে হবে। লোকটি যদি তার জন্য ঠিক করে দেওয়া গণ্ডি পেরোতে চান তবে সতর্ক সংকেত বেজে উঠবে। অ্যাংকেল ব্রেসলেটটিতে ভাইব্রেশন বা কম্পন তৈরি হবে। এমনও হতে পারে যে ওই ব্যক্তি যার কাছে যেতে চাইছিলেন অর্থাৎ সহিংস স্বামী যদি তার স্ত্রীর কাছে যেতে তখন কখনও কখনও তার স্ত্রীও সেই সংকেত পেতে পারেন। ফোনে সে বার্তা চলে যায়।

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, জার্মানির বেশ কয়েকটি রাজ্য ইলেক্ট্রনিক ট্যাগ পরিহিত অভিযুক্ত অপরাধীদের মনিটরে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেছে। তবে, অপরাধীদের ওপর নজর রাখার যে ব্যবস্থা তা গতানুগতিক ধারার অ্যাংকেল ব্রেসলেটকে ছাড়িয়ে গেছে।  

/এফইউ/

সম্পর্কিত
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৫ অভিবাসী নিহত
ইউরোপে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তাপমাত্রা বাড়ছে
রুশ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউক্রেনের হামলা, ৫০টি ড্রোন ভূপাতিতের দাবি মস্কোর
সর্বশেষ খবর
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা