X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

জামাতাকে উপদেষ্টা নিয়োগে বাধা নেই ট্রাম্পের: মার্কিন বিচার বিভাগ

বিদেশ ডেস্ক
২২ জানুয়ারি ২০১৭, ১৪:০৭আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০১৭, ১৪:০৯
image

কুশনার ও ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার জামাতা জ্যারেড কুশনারকে হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের স্বজনপ্রীতিবিরোধী আইন লঙ্ঘিত হবে না। শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০ জানুয়ারি লেখা একটি মতামতমূলক বিবৃতি শনিবার নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে বিচার বিভাগ। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। ওই বিবৃতিটি মার্কিন বিচার বিভাগের লিগ্যাল কাউন্সেল অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। আর এর আওতায় কোনও ফেডারেল সংস্থার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট যদি তার কোনও আত্মীয়কে নিয়োগ দেন তখন সেখানে আইনি বাধা প্রয়োগের সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, গত ৯ জানুয়ারি ট্রাম্প তার জামাতা জ্যারেড কুশনারকে হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বলা হয়, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে ট্রাম্পকে বিভিন্ন বিষয়ে উপদেশ দেবেন ৩৫ বছর বয়সী কুশনার। সেসময়, ট্রাম্পের মুখপাত্র কেলিঅ্যান কোনওয়ে এই খবরটি নিশ্চিত করেন। তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন,‘এটি আজকের দিনের সবচেয়ে ভালো খবর।’

আর এ খবর প্রকাশ্যে আসার পর সমালোচনার ঝড় ওঠে। স্বজনপ্রীতিবিরোধী আইনের তোয়াক্কা না করে ট্রাম্প তার জামাতাকে নিয়োগ দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে চূড়ান্ত মতামত জানতে বিচার বিভাগের শরণাপন্ন হয় হোয়াইট হাউস। আর এর প্রেক্ষিতে শনিবার বিচার বিভাগের ওয়েবসাইটে বলা হয়, বিশেষ ক্ষমতার আওতায় কুশনারকে উপদেষ্টা নিয়োগে ট্রাম্পের বাধা নেই।  

১৪ পৃষ্ঠার ওই মতামতে বলা হয়, ‘পরিবারের সদস্যদের সক্ষমতা অনুযায়ী তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেস বাধা দেয়নি এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে না। স্বজনপ্রীতিবিরোধী আইনের আওতায়ও যদি কোনও প্রেসিডেন্ট তার আত্মীয়কে হোয়াইট হাউসে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিতে না পারেন তারপরও বেসরকারি নাগরিক হিসেবে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারবেন।’

বিচার বিভাগের ওই মতামতে বলা হয়, ‘ট্রাম্প যদি কুশনারকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিযোগ দেন এবং হোয়াইট হাউসের কর্মীদেরকে যে সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়ে থাকে তা কুশনারকে দেন তবে স্বার্থের দ্বন্দ্বজনিত আইনগুলো প্রযোজ্য হতে পারে। এবং কুশনারকে তখন সে প্রতিবন্ধকতাগুলো মেনে চলতে হবে।’

কী আছে স্বজনপ্রীতিবিরোধী আইনে?

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে স্বজনপ্রীতিবিরোধী আইনটি পাস হয় ১৯৬৭ সালে। ১৯৬১ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি তার ভাই রবার্ট কেনেডিকে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পরই আইন-প্রণেতারা বিলটি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়ে থাকে।

স্বজনপ্রীতিবিরোধী আইন অনুযায়ী, ‘কোনও সরকারি কর্মকর্তা তার কোনও নিকটাত্মীয়কে এমন কোনও সংস্থায় বেসামরিক পদে নিয়োগ, কিংবা নিয়োগ ও পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করতে পারেন না যেখানে তিনি নিজে কর্মরত আছেন কিংবা সেখানে তার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। আইনটির আওতায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তার কোনও আত্মীয়কে মন্ত্রিপরিষদে চাকরি দিতে পারেন না। তবে, মন্ত্রিপরিষদের বাইরের পদগুলোর ক্ষেত্রে যেমন উপদেষ্টা পদের ক্ষেত্রে কী হবে তা এখনও পরীক্ষিত নয়।

স্বজনপ্রীতিবিরোধী আইনটি পাসের পরবর্তী বছরগুলোতে বেশ কয়েকজন শিক্ষাবিদ যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে সত্যিকার অর্থে প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে আইনটি প্রয়োগ করা হয় না। কেননা, সংবিধানের নিয়োগসংক্রান্ত ধারা অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের সরাসরি ক্ষমতা রয়েছে। অনুচ্ছেদ ২ এর ধারা ২ অনুযায়ী কিছু কিছু কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। আর অন্য অধস্তন কর্মকর্তাদেরকে প্রেসিডেন্ট সরাসরি নিয়োগ দিতে পারেন।

২০১২ সালে ইন্ডিয়ানা স্কুল অব ল-এর গবেষক জেরার্ড ম্যাগলিওকা দাবি করেছিলেন, স্বজনপ্রীতিবিরোধী আইনটি স্পষ্ট করে প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয় না। কনকারিং অপিনিয়ন’স-এ লেখা ব্লগে তিনি বলেন, ‘প্রথমত আমি বলতে পারি, রাজনৈতিক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের যে কর্তৃত্ব সেক্ষেত্রে একমাত্র সংবিধিবদ্ধ সীমাবদ্ধতা এটি। ক্ষমতা আলাদাকরণের মধ্য দিয়ে বোঝা যায় উপদেষ্টা বাছাইয়ের জন্য প্রেসিডেন্টের যে বিবেচনা তাতে কংগ্রেস স্পষ্টত অনধিকারপ্রবেশ করতে পারে না।’  

/এফইউ/

সম্পর্কিত
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পুরস্কার পেলেন কুবির চার শিক্ষার্থী
ন্যাটোর অংশীদার হতে আগ্রহী আর্জেন্টিনা
কানাডার ইতিহাসে বৃহত্তম স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার ৬
সর্বশেষ খবর
শেষ ম্যাচে জিতে সুপার লিগে গাজী গ্রুপ
শেষ ম্যাচে জিতে সুপার লিগে গাজী গ্রুপ
কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী
কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী
তিন নম্বরে থেকে সুপার লিগে মোহামেডান
তিন নম্বরে থেকে সুপার লিগে মোহামেডান
মুখ থুবড়ে পড়েছে ইউক্রেনের অস্ত্র খাত
মুখ থুবড়ে পড়েছে ইউক্রেনের অস্ত্র খাত
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?