X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের শরণার্থী ও মুসলিম ভীতির সত্যমিথ্যা

বিদেশ ডেস্ক
৩১ জানুয়ারি ২০১৭, ১৩:২৬আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০১৭, ১৩:৫২
image

ট্রাম্পের শরণার্থীবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জাতীয় নিরাপত্তাকেই সাত মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে সাময়িক নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে উপস্থাপন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, জঙ্গিবাদের ভীতি কাজ করছে দেশজুড়ে। তাই ওইসব দেশ থেকে কারও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রেসাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ এবং মুসলমানদের নিয়ে সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি কতোটুকু বাস্তব? মার্কিন ইতিহাসে নজর ফিরিয়ে তার পরিসংখ্যানিক বিশ্লেষণ হাজির করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। বাংলা ট্রিবিউনের পাঠকের জন্য সিএনএন-এর সেই বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হলো।

৪০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে হামলা করেনি নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত দেশের নাগরিকরা

ইউরোস্ট্যাটের হিসেব অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সাড়ে তিন লাখ সিরীয় নাগরিক ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে আশ্রয় পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। সিএটিও ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা সাতটি দেশের একজন নাগরিকও গত ৪০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে কাউকে হত্যা করেনি। এরমধ্যে শরণার্থীরাও আছেন। এ সময়ের মধ্যে কেবল এসব দেশের ১৭ জন নাগরিক সমন্বিতভাবে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায়ে অভিযুক্ত।
বিশ্বের সন্ত্রাসবাদ পুরোপুরিভাবে আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। অনেক নেতাই এ ব্যাপারে একমত যে এ বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে। 

বিদেশি হামলায় প্রতি ৩৬ লাখে এক আমেরিকানের মৃত্যুর শঙ্কা, শরণার্থীদের ক্ষেত্রে আরও কম

সিএটিও ইনস্টিটিউটের হিসেব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে কোনও বিদেশির চালানো সন্ত্রাসী হামলায় কোনও আমেরিকানের মৃত্যুর আশঙ্কা প্রতি ৩৬ লাখে একজন। ৪১ বছর ধরে বিভিন্ন হামলা এবং ভয়াবহ নাইন ইলেভেনের হামলার ক্ষয়ক্ষতিকেও এ হিসেবের আওতায় রাখা হয়েছে। নাইন ইলেভেনের হামলায় ৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। তবে বিদেশি হামলাকারীর বদলে যদি শরণার্থী আর অবৈধ অভিবাসী দিয়ে হিসেবটা করা হয় তবে সে হুমকির মাত্রা আরও কমে যাবে।

অভিবাসনই আমেরিকা যাতায়াতের একমাত্র কারণ নয়

লাখ লাখ মানুষ প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে আসা-যাওয়া করে। এদের বড় অংশটাই অভিবাসী নয়। পর্যটক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, আাত্মীয়স্বজনরা আসা যাওয়া করেন যুক্তরাষ্ট্রে। তাদেরকেও এইচ ওয়ানবি ভিসা দেওয়া হয়। সাধারণত মেক্সিকো, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জাপান ও চীনের নাগরিকেরা এই ধরনের ভিসার মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ পেশায় কাজ করার সুযোগ পান । মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতরের সবশেষ হিসেব বলছে; অভিবাসী নয়, এমন ৭৭ লাখ মানুষ ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসা-যাওয়া করেছিলেন।

একের পর এক নির্বাহী আদেশ দিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের মধ্যে মুসলিম শরণার্থীর নাগরিকত্ব দুর্লভ

কঠোর নাগরিকত্ব প্রদান প্রক্রিয়া অতিক্রম করার পর পুরোপুরি মার্কিন নাগরিকের স্বীকৃতি পাওয়াই রাষ্ট্রের নাগরিক অধিকারপ্রাপ্তি। ২০১৫ সালে সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়াদের তালিকায় সবার শীর্ষে রয়েছে মেক্সিকো। এরপরই রয়েছে ভারত ও ফিলিপাইন। পিউ রিসার্স সেন্টারের হিসেব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে আসা অভিবাসীদের মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা মাত্র ১০ ভাগ। ইসলাম চর্চাকারী আছেন ৩৩ লাখ।

ইসলামে ধর্মান্তরিত মানুষ, আর ইসলাম থেকে বিচ্যুত মানুষের সংখ্যা সমান

ইসলামে ধর্মান্তরিত মানুষ, আর ইসলাম থেকে বিচ্যুত হয়ে অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত মানুষের সংখ্যা প্রায় সমান। পিউ রিসার্স সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়া আমেরিকানদের সংখ্যা আর ইসলাম থেকে অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত বা ইসলামের সঙ্গে আর সংযোগ না থাকা মুসলিম আমেরিকানদের সংখ্যা সমান।  

সর্বোচ্চ সিরীয় শরণার্থী গ্রহণের পরিমাণ ১৩ হাজারও ছাড়ায়নি

২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ সংখ্যক অর্থাৎ ১২,৫৮৭ সিরীয় শরণার্থীকে গ্রহণ করা হয়েছে যা মোট গ্রহণ করা শরণার্থীর ১৪ ভাগ। গত ছয় বছরে সর্বমোট যতসংখ্যক শরণার্থী দেশ ছেড়ে পালিয়েছে তার তুলনায় এ সংখ্যা নগণ্য। কেননা গত ছয় বছরে প্রায় ১১ মিলিয়ন শরণার্থী দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।

অবশ্য, পরিসংখ্যান আরসব সামাজিক সমস্যাগুলোর মতো করেই শরণার্থী সমস্যার সামগ্রিক একটা চিত্র হাজির করতে সক্ষম নয়। এই যেমন ক’দিন আগে  অরল্যান্ডোর নাইটক্লাবে বন্দুকধারীর হামলায় ৪৯  জন নিহত হওয়ায় সামগ্রিক বছরেই যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের হার বেড়ে গিয়েছিল। একইভাবে বন্দুক হামলার মধ্য দিয়ে  সংঘটিত সহিংসতার ক্ষেত্রেও পরিসংখ্যান সামগ্রিক চিত্র আঁকতে ব্যর্থ হয়। কেননা বন্দুকজনিত সহিংসতার পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনাগুলোকে অন্তর্ভূক্ত করা হয় না। এ ধরনের আত্মহত্যার সংখ্যা বছরে প্রায় ২০ হাজার কিংবা এর উপরে ঘোরাফেরা করে। সেক্ষেত্রে ২০ হাজার মৃত্যু আমলেই নেয় না পরিসংখ্যান।  

/এফইউ/বিএ/

 

 

সম্পর্কিত
যুক্তরাষ্ট্র বড় শক্তি, তাদের পরোয়া করতে হয়: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
ঘুষ মামলায় আদালতের আদেশ লঙ্ঘন, ট্রাম্পের শাস্তি চান প্রসিকিউটররা
যুক্তরাষ্ট্র থেকে পার্সেলে তরুণদের কাছে আসছে কোটি টাকার মাদক
সর্বশেষ খবর
চেলসিকে গুঁড়িয়ে দিলো আর্সেনাল
চেলসিকে গুঁড়িয়ে দিলো আর্সেনাল
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী