অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে সমর্থ হলো সদ্যজাত সেই ইরানি শিশুটি। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের এক খবরে বলা হয়েছে, এরইমধ্যে চিকিৎসা সেবা নিতে শুর করেছে শিশুটি।
সাত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরও বিশেষ বিবেচনায় এক ইরানি শিশুকে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হয়। মুসলিম নিষেধাজ্ঞা কিংবা তা নিয়ে চলমান আইনি জটিলতার মধ্যে পড়তে হয়নি তাকে। মানবিক প্যারলে বিশেষ ভিসা পাওয়ার মধ্য দিয়ে চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত হয়েছে তার।
চার বছরের ওই ইরানি শিশুর নাম ফাতেমা রেশাদ। মারাত্মক হৃদরোগ এবং সম্ভাব্য ফুসফুসের সমস্যায় আক্রান্ত শিশুটির জন্য এর আগে একবার যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার আবেদন করা হলে তা প্রত্যাখ্যাত হয়। পরে চিকিৎসার জন্য আবেদন করলে মানবিক প্যারলে বিশেষ ভিসা পায় শিশুটি। পোর্টল্যান্ডে অবস্থিত দোয়েরবেকার চিলড্রেন’স হসপিটালে তার চিকিৎসা চলছে। এখন অরিগনের স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত ওই হাসপাতালের ডাক্তাররা আশাবাদী, সফল অস্ত্রপচারের মধ্য দিয়ে, সুস্থ হয়ে উঠবে ফাতেমা।
এরআগে হাসপাতালটির প্রধান চিকিৎসক ডানা ব্র্যানার বলেন, ‘আমাদের সাধ্য অনুযায়ী আমরা সকল শিশুকে চিকিৎসা সেবা দিতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইরানি ওই শিশুকে চিকিৎসা দিতে পেরে আমরা রোমাঞ্চিত।’
ওরেগনের সিনেটর জেফ মারকলি ওই ইরানি পরিবারটিকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভিসা পেতে সহযোগিতা করেছেন। এতে নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো এবং অভিবাসন আইনজীবীরাও সহযোগিতা করেছেন। এ প্রসঙ্গে অ্যান্ড্রু কুয়োমো বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে, ফেডারেল সরকার ফাতেমা রেশাদ এবং তার পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে আসার অনুমতি দিয়েছে।’ একটি আইন প্রতিষ্ঠান তাদের যুক্তরাষ্ট্র অর্থায়ন করছে।
হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ লরি আর্মসবি বলেন, ‘ফাতেমা এক জটিল হৃদরোগ নিয়েই জন্মেছে। এই বিরল রোগে প্রতি দশ হাজারের মধ্যে মাত্র দু’জন আক্রান্ত হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘হৃদযন্ত্রে সমস্যার ফলে তার ফুসফুসও আক্রান্ত হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। তবে তাকে সঠিক সময়েই আমাদের কাছে নিয়ে আসা হয়েছে।’ ‘সার্জারিতে আমাদের ফলাফল বেশ ভালো। আর আশা করি আমরা তাকেও একটি সুন্দর ও কর্মক্ষম জীবন দিতে পারব।’
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো এক বিবৃতিতে কুমো বলেন, ‘এ সন্ধ্যায় আমরা আনন্দিত বোধ করছি যে ফেডারেল সরকার ফাতেমা রেশাদ ও তার পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের কাগজপত্র দিয়েছে।’ তিনি আরও জানান, নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞদের একটি দল ফাতেমা রেশাদকে চিকিৎসা সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে। আর একটি আইনি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফাতেমা ও তার পরিবারের ভ্রমণ খরচ যোগানো হচ্ছে।
/এসএ/বিএ/