X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ

বিদেশ ডেস্ক
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১১:৩৫আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১১:৪৮
image

মাইকেল ফ্লিন রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংযোগ থাকা নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্কের জের ধরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন পদত্যাগ করেছেন। হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে তার পদত্যাগের খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ফ্লিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওবামা আমলে রাশিয়ার ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা সরানোর বিষয়ে রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তিনি ট্রাম্পের দায়িত্বগ্রহণের আগেই আলোচনা করেছিলেন। ফ্লিন তা করে থাকলে তবে তা হবে আইনের লঙ্ঘন। কেননা আইন অনুযায়ী, বেসরকারি নাগরিকদের পররাষ্ট্র নীতিমালাসংক্রান্ত কাজে জড়িত হওয়া নিষিদ্ধ।

পদত্যাগপত্রে ফ্লিন বলেন, তিনি অসাবধানতাবশতঃ তৎকালীন নির্বাচিত ভাইস-প্রেসিডেন্টকে আংশিকভাবে রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তার কথোপকথন সম্পর্কে জানিয়েছিলেন।

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে অন্তর্বর্তীকালীন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোসেফ কিথ কেলোগকে।  

এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্লিনের সঙ্গে রুশ রাষ্ট্রদূতের ওই সংযোগ সম্পর্কে কয়েক সপ্তাহ আগেই মার্কিন বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে হোয়াইট হাউসকে অবগত করা হয়েছিল। তবে সরকার ও ফ্লিনের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ সম্পর্কে কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি।

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল স্যালি ইয়েটস হোয়াইট হাউসকে জানিয়েছিলেন, তাদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করছেন। সেই সঙ্গে ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে বিভ্রান্ত করছেন।

ট্রাম্পের পাশে ফ্লিন

গত মাসে ট্রাম্পের আরোপ করা সাত মুসলিম-প্রধান দেশের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিরোধের জেরে ইয়েটসকে পদচ্যুত করা হয়।

উল্লেখ্য, আগের একটি বিতর্ক নতুন করে সামনে আসার পর তুমুল চাপের মুখে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন। রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফ্লিনের যোগাযোগ থাকা নিয়েই চলছে ওই বিতর্ক। ডিসেম্বরে রুশ দূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন ফ্লিন।

কয়েকদিন ধরে হোয়াইট হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তারা রাশিয়ার দূতের সঙ্গে ফ্লিনের যোগাযোগ সংক্রান্ত অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করছেন। ট্রাম্পের দায়িত্বগ্রহণের পর রাশিয়ার ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে ফ্লিন আলোচনা করেছেন কিনা তা খতিয়ে দেখছেন তারা। ফ্লিন যদি তা করে থাকেন তবে তা হবে আইনের লঙ্ঘন। কেননা আইন অনুযায়ী, বেসরকারি নাগরিকদের পররাষ্ট্র নীতিমালাসংক্রান্ত কাজে জড়িত হওয়া নিষিদ্ধ।

সোমবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। ভাইস-প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফ্লিনের কোন বিষয়ে কথা হয়েছে, সে সম্পর্কে জানতে তিনি ভাইস-প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও সম্পর্কে কথা বলছেন। এখানে তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে।’

এর আগে হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা কেলিঅ্যান কোনওয়ে জানান, ‘প্রেসিডেন্টের ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে ফ্লিনের।’

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এমএসএনবিসি-কে কোনওয়ে বলেন, ‘এটি জেনারেল ফ্লিনের জন্য এক বিশাল সপ্তাহ। বেশ কয়েকটি বিদেশ সফরে তিনিই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।’

জানা গেছে, ফ্লিন রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য ভাইস-প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন।

মিলার-ব্যানন-ফ্লিন-কুশনার-প্রিয়েবাস

এদিকে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার সাংবাদিকদের জানান, ফ্লিন এবং কিসলিয়াক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনও আলোচনা করেননি।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো সূত্রে জানা গেছে,ফ্লিনের জায়গায় নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়ার কথা আলোচনা করছেন ট্রাম্পের জামাতা জেয়ার্ড কুশনার।

যুক্তরাষ্ট্রের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মাইকেল ফ্লিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার একজন সাবেক পরিচালক। শুরু থেকেই ট্রাম্পকে সমর্থন করে যাওয়া ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কোন্নয়নের স্বপক্ষের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি।

গত ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের শপথগ্রহণের কয়েক সপ্তাহ আগে রুশ দূতের সঙ্গে ফ্লিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে শুরুতে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন ফ্লিন। কিন্তু বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন পোস্টে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর। ৯ সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয় প্রকৃতপক্ষে ফ্লিন নিষেধাজ্ঞা প্রশ্নে আলোচনা করেছেন। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের একদিনেরও বেশি সময় পর ট্রাম্পও এ ব্যাপারে কিছু না জানার কথা বলেন। ট্রাম্প জানান, তিনি এ ব্যাপারে খতিয়ে দেখবেন। ডেমোক্র্যাট দলের শীর্ষ নেতা ও মার্কিন গোয়েন্দাদের কেউ কেউ এ ব্যাপারে এফবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানোর আহ্বান জানান।

সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান।

/এসএ/

সম্পর্কিত
ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে: ম্যাক্রোঁ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিমার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য রয়েছে
মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে জাতিসংঘের ভোটে রাশিয়ার ভেটো
সর্বশেষ খবর
ন্যাপ বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলোর প্রতি পর্যাপ্ত সহায়তার আহ্বান
ন্যাপ বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলোর প্রতি পর্যাপ্ত সহায়তার আহ্বান
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
মীনা বাজার এখন মিরপুর-১২ নম্বরে
মীনা বাজার এখন মিরপুর-১২ নম্বরে
কুবিতে উপাচার্য-ট্রেজারার-প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, ৩ দফতরে তালা
কুবিতে উপাচার্য-ট্রেজারার-প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, ৩ দফতরে তালা
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা