X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বতন্ত্র ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মার্কিন নীতি থেকে সরে আসার আভাস ট্রাম্পের

বিদেশ ডেস্ক
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৩:৩০আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১১:১৬

সংবাদ সম্মেলনে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট প্রসঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই স্বতন্ত্র দুইটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নীতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিল আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেই নীতি থেকে সরে আসলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বললেন, কেবল পৃথক দুইটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পেলেই এই সংকটের সমাধান হবে না। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের এমন অবস্থানের কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। ওই সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে একটি ‘অসাধারণ’ শান্তিচুক্তির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তবে এর জন্য ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন— দুই পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে বলে জানান তারা।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের মধ্যে ওই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পরে এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন এই দুই নেতা। এ খবর দিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
খবরে বলা হয়, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই ফিলিস্তিনের দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম এলাকায় নতুন বসতি স্থাপনে নতুন করে অনুমোদন দিয়েছিল ইসরায়েল। সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ওই বসতি স্থাপন ‘কিছু সময়ে’র জন্য ‘বন্ধ’ রাখার আহ্বানও জানান।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বা নেতানিয়াহু— কেউই ভবিষ্যতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমথর্ন জানালেও সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন ট্রাম্প। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি দুই রাষ্ট্র ও একক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বিবেচনা করছি। এবং তারা (ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন) যেটা পছন্দ করবে সেটাই আমার পছন্দ। সত্যি বলতে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিরা যে সমাধানে খুশি হবে, আমি সেটাকেই সবচেয়ে বেশি পছন্দ করব; সেটা এক রাষ্ট্রই হোক আর দুই রাষ্ট্রই হোক।’ এ বিষয়ে শেষ পর্যন্ত বিবদমান দুই পক্ষকেই শান্তিচুক্তিতে উপনীত হতে হবে বলেও জানান তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করবেন। সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘দূতাবাসটি জেরুজালেমে স্থানান্তরিত হওয়াটাই পছন্দ করব আমি। আমরা এটাই চাই। আমরা এটা নিয়ে অত্যন্ত যত্ন নিয়ে কাজ করছি। দেখা যাক কী হয়।’
দুই রাষ্ট্র সমাধান প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ‘মোড়ক’ নয়, তিনি ‘মূল বিষয়’ নিয়েই মনোযোগী থাকতে চান। তিনি বলেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দুইটি পূর্বশর্ত রয়েছে। প্রথমত, ফিলিস্তিনিদের অবশ্যই ইহুদি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, যেকোনও শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রেই ইসরায়েলকে জর্ডান নদীর পশ্চিমাঞ্চলে নিরাপত্তার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলকে ফিরিয়ে দিতে হবে ‘
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর নেতানিয়াহুর সঙ্গে এটাই তার প্রথম বৈঠক। সেই বৈঠকের পরপরই ট্রাম্প দুই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা বললেন। অথচ দীর্ঘদিন ধরে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট সরকার নির্বিশেষে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান হিসেবে পৃথক দুই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষেই কথা বলে এসেছে। ট্রাম্পের নতুন এই অবস্থানের পর তাই শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ফিলিস্তিনিরা। তারা বলছেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থেকে হোয়াইট হাউসের সরে দাঁড়ানো ঠিক হবে না।
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের জ্যেষ্ঠ্য একজন সদস্য হানান আশরায়ি বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন যদি এই নীতিকে (স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা) প্রত্যাখ্যান করে, তবে তা শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগকে নস্যাৎ করবে এবং তা বিশ্বজুড়ে আমেরিকার স্বার্থ, অবস্থান ও গ্রহণযোগ্যতাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলবে।’

আরও পড়ুন-

সমুদ্রের পানিতে কমছে অক্সিজেন



গাজায় হামাসের নতুন নেতৃত্ব, ইসরায়েলবিরোধী প্রতিরোধের বার্তা

/টিআর/বিএ/

সম্পর্কিত
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিমার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য রয়েছে
মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে জাতিসংঘের ভোটে রাশিয়ার ভেটো
বাংলাদেশকে ‘সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ দেশ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
সর্বশেষ খবর
বিদ্যুৎ ও গ্যাস কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া ঋণ মিলবে না
বিদ্যুৎ ও গ্যাস কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া ঋণ মিলবে না
ওমরা পালনে সৌদি গেলেন পাটমন্ত্রী
ওমরা পালনে সৌদি গেলেন পাটমন্ত্রী
গাজায় আবিষ্কৃত গণকবরের স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র
গাজায় আবিষ্কৃত গণকবরের স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র
খুলনায় এ যাবতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এ যাবতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা