X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের অভিশংসন চায় না ডেমোক্র্যাটিক পার্টি!

বিদেশ ডেস্ক
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৯:৫০আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১০:২৮

ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রিপাবলিকান পার্টির টিকিটে নির্বাচিত আলোচিত-সমালোচিত এই ধনকুবেরের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে ইমপিচমেন্টের কথা উঠেছে। ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যেই তার অভিশংসনের দাবি জানিয়েছেন খোদ রিপাবলিকান পার্টি সমর্থক সাবেক একজন বিচারপতি। অভিশংসন প্রক্রিয়ায় সহায়তাও প্রস্তাব দেন ওহাইও কোর্ট অব আপিলস-এর সাবেক বিচারপতি মার্ক পি পেইন্টার। স্বাভাবিকভাবে এমন আলোচনা লুফে নেওয়ারই কথা ছিল ডেমোক্র্যাট শিবিবের। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ট্রাম্পের রুশ সংযোগ। তৃণমূল পর্যায়ে ট্রাম্পের অভিশংসন নিয়ে লোকজনের আগ্রহ থাকলেও শেষ পর্যন্ত এ অভিশংসন সংক্রান্ত আলোচনার রাশ টেনে ধরতে চাইছে ডেমোক্র্যাট শিবির। কারণ, পুরো বিষয়টিকে একটা ফাঁদ হিসেবেই দেখছেন তারা।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতারা বলছেন, এ ধরনের অপরিপক্ক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সেটা উল্টো পরিকল্পনাকারীকেই বিপদে ফেলতে পারে। এটা সমাজে একটা নেতিবাচক বার্তা দেবে। এতে প্রতীয়মান হবে যে, ট্রাম্পের ব্যাপারে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ব্যাপক মাত্রায় ঈর্ষান্বিত। এছাড়া এ ধরনের পরিকল্পনায় জড়ালে তাতে আদতে ট্রাম্পই লাভবান হবেন। এর দোহাই দিয়ে তিনি বিরাট অংকের তহবিল সংগ্রহ করবেন। নিজ দলে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবেন। এক পর্যায়ে যখন তিনি দেখবেন যে, তার অভিশংসন সুদূর পরাহত তখন তিনি এই প্রচেষ্টাকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান পার্টির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এরিক সলওয়েল। গোয়েন্দা কার্যক্রম সংক্রান্ত হাউস পার্মানেন্ট সিলেক্ট কমিটির একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তিনি বলেন, “সবগুলো ফ্যাক্টকে আমাদের একত্রিত করা দরকার। এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত নানা বিষয় নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন রয়েছে। নির্বাচনের আগে রাশিয়ার সঙ্গে তার অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বন্ধন নিয়েও প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে। এমন রাশিয়ার সঙ্গে এমন সংযোগে নিশ্চয়তার ব্যপারও ছিল। ইমপিচমেন্টের জন্য ‘আই’ বর্ণটি ব্যবহারের আগে আগে সবগুলো ফ্যাক্ট আপনার হাতে থাকতে হবে।

পেনসিলভানিয়া’র রিপাবলিকান সদস্য ব্রেনডান বয়লি অবশ্য মনে করেন, গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে ইমপিচমেন্টের বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত।

রিপাবলিকান পার্টির কিছু সদস্যের এমন অবস্থান থেকে অবশ্য কিছুটা নিরপদ দূরত্বেই থাকতে চায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ন্যান্সি পেলোসি। তার ভাষায়, “তিনি (ট্রাম্প) যদি আইন ভঙ্গ করেন; তাহলে সেটা তখন দেখা যাবে। এটি এখনকার আলোচনার বিষয়বস্তু নয়।”

দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরমধ্যে সবচেয়ে আলোচিত মুসলিম নিষেধাজ্ঞা অন্তত তিন দফায় আদালত স্থগিত করে দেওয়ায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে ট্রাম্পের রিপাবলিকান শিবির। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় শহরগুলোতে অনুষ্ঠিত ট্রাম্পবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ।

ট্রাম্পের অভিশংসন চায় না ডেমোক্র্যাটিক পার্টি!

নির্বাহী আদেশে নেওয়া ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ ও অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়নের ক্ষেত্রে কংগ্রেস কর্তৃক অনুমোদিত তহবিলের প্রয়োজন হবে। আর এখন অবস্থাটা এমন যে, রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি আঁচ করাটাই এখন মুশকিল হয়ে পড়েছে।

প্রশ্ন উঠছে, যদি দেশটির কংগ্রেস ট্রাম্পকে সমর্থন না জানায় তাহলে কি হবে? ইতোপূর্বে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের রিপাবলিকানরা ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছেন এবং তারা মামলা জিতেছেন। যদিও এসব নিয়ে এখনই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন রিপাবলিকানরা।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ দেওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডেমোক্র্যাট রিপ্রেজেন্টেটিভ ন্যান্সি পেলোসি। একইভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রিপাবলিকান ইলিয়ানা রোজ-লেহথিনেন। তিনি বলেন, আমরা ওবামার এই কাজটি পছন্দ করিনি, এখন কেন তা মেনে নেব?

রিপাবলিকান সিনেটর মাইক লি হাউস ও সিনেটের বিলুপ্ত কয়েকটি ক্ষমতা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছেন। ফলে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের যে অর্থ প্রয়োজন তা হাউস অনুমোদন দেবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। এ অর্থ অনুমোদন দেয় প্রতিনিধি পরিষদ, হোয়াইট হাউস নয়।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট (মার্কিন) তার ইচ্ছানুযায়ী যে কোনও পরিকল্পনা ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ কিংবা গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধ করার মতো কোনও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন লাগে। যদি কংগ্রেস অনুমোদন না দেয় তাহলে তা বাস্তবায়নের কোনও সুযোগ থাকে না।

২০০৯ সালে গুয়ানতানামো বে বন্ধে ওবামার নির্বাহী আদেশ নিয়ে ওই সময় এক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা বলেছিলেন, এটা একটা নির্বাহী আদেশ যা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরবর্তী। ট্রাম্পের অনেক নির্বাহী আদেশ তাই ওবামার মতো আদেশ হয়েই থাকতে পারে। যেমন, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ওবামার বিল আটকে দিয়েছিল কংগ্রেস। তবে সাংবিধানিকভাবে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা থাকছেই। আর নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের জন্য যে পরিমাণ তথ্য উপাত্ত থাকা প্রয়োজন সেটা সংগ্রহ করা যে খুব সহজ নয়; এটা ডেমোক্র্যাটরাও খুব ভালো করেই জানে। ফলে বহুমুখী ফাঁদের আশঙ্কায় এ সংক্রান্ত আলোচনার রাশ টেনে ধরতেই আগ্রহী ডেমোক্র্যাট শিবির। সূত্র: পলিটিকো, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।

/এমপি/

সম্পর্কিত
ন্যাটোর অংশীদার হতে আগ্রহী আর্জেন্টিনা
কানাডার ইতিহাসে বৃহত্তম স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার ৬
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
সর্বশেষ খবর
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন