X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘ব্রিটিশ নাগরিক বিয়ে করলেই যুক্তরাজ্যে প্রবেশাধিকার নয়’

অদিতি খান্না, যুক্তরাজ্য
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২১:০০আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২৩:১২

‘ব্রিটিশ নাগরিক বিয়ে করলেই যুক্তরাজ্যে প্রবেশাধিকার নয়’ যুক্তরাজ্যের অনেক নাগরিকের স্বামী বা স্ত্রী অন্য দেশে বসবাস করেন। এসব নাগরিক চাইলে তাদের স্বামী বা স্ত্রীকে স্থায়ীভাবে ব্রিটেনে নিয়ে যেতে পারেন। তবে ব্রিটিশ সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, এক্ষেত্রে তাদের একটি ন্যূনতম আয়সীমা থাকতে হবে। ২২ ফেব্রুয়ারি বুধবার এক রায়ে সরকার নির্ধারিত এ ন্যূনতম আয়সীমা বহাল রেখেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, অন্য কোনও দেশ থেকে স্বামী বা স্ত্রীকে ব্রিটেনে নিয়ে আসতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বছরে ১৮ হাজার ৬০০ পাউন্ডের বেশি আয় করতে হবে। ওই দম্পতির যদি এমন সন্তান থাকে যার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নেই, তাহলে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২২ হাজার ৪০০ পাউন্ড। পরবর্তী প্রতি সন্তানের জন্য বাড়তি দুই হাজার ৪০০ পাউন্ড করে যোগ হবে।

ইউরোপিয়ান ইকোনমিক এরিয়া (ইইএ)-ভুক্ত দেশগুলো এর আওতার বাইরে থাকবে। তবে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর ক্ষেত্রে এ নিয়ম কার্যকর হবে। বিদেশি দম্পতিদের যুক্তরাজ্যের করদাতাদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠা ঠেকাতে ২০১২ সালে এ নিয়ম চালু করা হয়। বুধবার এর আইনি বৈধতা দিলো যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট।

শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ব্যক্তিদের ওপরও সর্বনিম্ন এই আয়সীমা নির্ধারণের প্রভাব পড়বে।

সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারক সরকারের ২০১২ সালের ওই নির্দেশনাকে বৈধ বলে রায় দেন। একই সঙ্গে তারা এটাও স্বীকার করেন যে, এই নীতি যুক্তরাজ্যের বিপুল সংখ্যক পরিবারের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ফলে এ সংক্রান্ত নীতিতে সংশোধনী আনার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন তারা।

সরকারের এ সংক্রান্ত নীতি আদালত বহাল রাখায় ঠিক কী পরিমাণ মানুষের ওপর এর প্রভাব পড়বে, সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে অনেক বাংলাদেশির ওপর এর প্রভাব পড়বে। তারাও যুক্তরাজ্যে বসবাসের জন্য বছরে অন্তত ১৮ হাজার ৬০০ পাউন্ড আয়ের বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়বেন।

ব্রিটিশ সরকারের এ নীতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া একদল দম্পতি বিষয়টি নিয়ে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয়েছিল। এর মধ্যে দু’জন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকও রয়েছেন, যারা পাকিস্তান থেকে তাদের দাম্পত্য সঙ্গীকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যেতে পারেননি।

এ দুই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক হচ্ছেন আবদুল মাজিদ এবং শাবান জাভেদ। তারা একজন লেবানিজ শরণার্থীর সঙ্গে যোগ দেন যিনি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাজ্যে ভালো চাকরি পাচ্ছিলেন না। দেশ থেকে নিজের স্ত্রীকেও যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসতে পারছিলেন না তিনি। তাদের সঙ্গে যুক্ত হন ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো থেকে আসা আরেক শরণার্থী। তার স্ত্রীর যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।  

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র জানান, করদাতাদের ওপর বোঝা কমাতে পরিবারের অভিবাসী সদস্যদের যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসতে আয়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আদালত এ ব্যাপারে আমাদের পদ্ধতিকে সমর্থন জানিয়েছেন। অভিবাসী পরিবারগুলোকে তাদের কমিউনিটিতে সুসংহত হওয়ার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থে একটি ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কেন্দ্রীয়ভাবে কাজ করা হচ্ছে।

এ মুখপাত্র বলেন, ‘বিদ্যমান নিয়ম এখনও পর্যন্ত বহাল রয়েছে। তবে অস্বাভাবিক বা ব্যতিক্রমী ব্যাপারগুলোতে আদালত কী বলেছেন, সে বিষয়টি আমরা ভালোভাবে বিবেচনা করছি। বিশেষ করে যখন এক্ষেত্রে একটি শিশু থাকে।’

সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের শাসনামলে এ নীতি চালু হয়। ওই সময়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।

২০১৫ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়, এভাবে আয়সীমা নির্ধারণের ফলে ‘স্কাইপি পরিবার’ তৈরি হবে। একজন ব্যক্তি তার ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন।

‘ফ্যামিলি ফ্রেন্ডলি?’-শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্ধারিত আয়সীমা অনেক বেশি এবং এটা বৈষম্যমূলক। এর মধ্য দিয়ে যেসব ব্রিটিশ নাগরিক দেশের বাইরে বসবাস করেন, সেখানে কাজ করেন এবং দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক তৈরি করেন, বিশেষভাবে তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। ফলে তাদের জন্য যুক্তরাজ্যে ফিরে যাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।

/এমপি/এএআর/

সম্পর্কিত
ইউক্রেনকে ৬২ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৫ অভিবাসী নিহত
ইউরোপে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তাপমাত্রা বাড়ছে
সর্বশেষ খবর
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক