X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাসায়নিক হামলায় ইদলিব যেন এক মৃত্যু উপত্যকা

বিদেশ ডেস্ক
০৯ এপ্রিল ২০১৭, ২১:৫৮আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০১৭, ২২:২৮

এখানেই আঘাত করে বিস্ফোরিত সারিন গ্যাসবাহী মিসাইল খান শেইখুন একটি ভুতুড়ে শহর। দুই দিন আগে সংঘটিত নারকীয় হত্যাযজ্ঞের পর শোকে শহরটির রাস্তাগুলো জনশূন্য ও নীরব। কী ঘটেছে সেটার একমাত্র প্রমাণটি একেবারে ক্ষুদ্র এবং শহরের উত্তর অংশে অবস্থিত। এখানে একটি রকেট ভূপাতিত হয়ে বিষাক্ত সারিন গ্যাস ছড়িয়ে দেয়। এতে নিহত হয় শিশুসহ অন্তত ৮৬ জন বেসামরিক নাগরিক। ছয় বছরের গৃহযুদ্ধে সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মধ্যে এটি একটি।

হামলার দুই দিন পর প্রথম কোনও পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম হিসেবে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান ঘটনাস্থলে নিজেদের একজন প্রতিবেদককে পাঠিয়েছে। ওই প্রতিবেদকের পাঠানো সরেজমিন প্রতিবেদনটি রবিবার প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি। প্রতিবেদনে, সিরীয় রাসায়নিক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ও স্বজন হারানো মানুষের কথা তুলে ধরা হয়েছে।

রাসায়নিক হামলায় নিহতদের দাফন

স্থানীয়রা জানান, যেখানে রাসায়নিক অস্ত্র বিষাক্ত সারিন গ্যাসবাহী রকেট আঘাত হানে তা ছয় মাস আগে একটি বিমানহামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেখানে থাকা একটি সিলো এরপর আর ব্যবহার করা হয়নি। এক ব্যক্তি জানান, চাইলেই তা দেখতে পারেন। পশুর মল ও কিছু খাদ্যশস্য ছাড়া কিছুই নেই। এমনকি বিষাক্ত সারিন গ্যাসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া কোনও ছাগলও দেখতে পাবেন না। স্থানীয়দের প্রশ্ন, সম্প্রতি বা গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কোনও ভবনে হামলা না হলেও কেন হঠাৎ করে সারিন গ্যাস ব্যবহার করে হামলা হলো।

হামলার ঘটনাস্থলের রাস্তাগুলো থেকে দুই পাশের বাড়িঘর দেখলে তা অক্ষতই দেখা যায়। কোনও ভবনের কাছেই বিষাক্ত অঞ্চল হিসেবে সতর্কতা নেই। যদিও পুরো রাস্তাজুড়েই ছড়িয়ে পড়েছিল বিষাক্ত গ্যাস। গার্ডিয়ানের পক্ষ থেকে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলা হয়। প্রথম ব্যক্তি জানান, হামলার পর এক স্বজনকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন। হামিদ খুটাইনি নামের ওই ব্যক্তি বলেন, মনে হচ্ছিল কেয়ামত নেমে এসেছে।

হামলায় নিহতদের সমাধি

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে হামলা শুরু হয়। শহরে চারটি বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। প্রথমে সবার সাধারণ বিমান হামলায় বোমা নিক্ষেপের ঘটনা বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু তাদের সামনে এক ব্যক্তি এসেই লুটিয়ে পড়ার পরই সবার সচকিত হয়।

খুটাইনি বলেন, হামলায় আহতরা আমাদের এসে বলে যে ‘আমরা নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছি।’ তারা কী বলতে চাচ্ছিল সে সম্পর্কে আমাদের কোনও ধারণাই ছিল না। তখন তারা বলে, আমাদের বাঁচাও, আমরা হাঁটতে পারছি না। ফলে পরে উদ্ধারে যারা গিয়েছিল তারা মুখে কাপড় বেঁধে যায়। ৫০০ মিটার দূর থেকে আমরা শুধু গন্ধ পাচ্ছিলাম।

স্থানীয়রা জানান, হামলার বিষয়ে সচকিত হওয়ার পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক শুরু হয়। লোকজন দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে লুটিয়ে পড়ছিল। মুখ দিয়ে তাদের ফেনা বের হতে শুরু করে, ঠোঁট নীল রঙ ধারণ করে এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিল।

আবু আল-বারা নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমি শিশুদের মাটিতে পড়ে থাকতে দেখি, শেষ নিঃশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছে। ঠোঁটগুলো নীল হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, ঘরের ছাদে, বেজমেন্টেও মানুষকে পড়ে থাকতে দেখি। যেদিকে চোখ যাচ্ছিলো খালি মৃত মানুষ। সূত্র: গার্ডিয়ান।

/এএ/

সম্পর্কিত
ইরানের ওপর কোনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি: ইরানি কর্মকর্তা  
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
সর্বশেষ খবর
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ