X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলা নিয়ে জাতিসংঘের তদন্তে ভেটো রাশিয়ার

বিদেশ ডেস্ক
১৩ এপ্রিল ২০১৭, ১১:৩৪আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০১৭, ১১:৪৩

সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলা নিয়ে জাতিসংঘের তদন্তে ভেটো রাশিয়ার সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত একটি খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের পক্ষ থেকে ওই প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল। প্রস্তাবে গত সপ্তাহে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশের খান শেইখুন শহরে রাসায়নিক হামলার নিন্দা জানানো হয়। এছাড়া এ হামলার তদন্তকাজে আসাদ সরকারেরও সহায়তা কামনা করা হয়েছিল। তবে রাশিয়া এতে ভেটো দেওয়ায় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।

নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১০টি দেশ। প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয় দুই সদস্য দেশ রাশিয়া ও বলিভিয়া। অন্য তিন সদস্য দেশ চীন, ইথিওপিয়া ও কাজাখস্তান এ সংক্রান্ত ভোটাভুটি থেকে বিরত ছিল।

এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কোনও ব্যবস্থা গ্রহণের হাত থেকে আসাদ’কে সুরক্ষা দিলো রাশিয়া। রাশিয়ার এমন ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের প্রতিনিধিরা।

জাতিসংঘ তদন্তে রাশিয়ার ভেটো প্রদানের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি। রাশিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা নিজেরাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন। আসাদ  বাহিনীর একেকটি বিমানের অবতরণ মানে বেসামরিক মানুষের ওপর আরেকটি নতুন ব্যারেল বোমা নিক্ষেপ। সে সবসময়ই অন্য সম্প্রদায়ের মানুষকে না খাইয়ের মারার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে।

৪ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে বিদ্রোহী অধ্যুষিত খান শেইখুন শহরে চালানো ওই রাসায়নিক হামলায় নিহত হন অন্তত ৮০ জন। এ হামলার জন্য আসাদ সরকারকে দায়ী করে সিরিয়ার বিমান ঘাঁটিতে হামলার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। সে অনুযায়ী ৭ এপ্রিল স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে হোমস প্রদেশের আল-শায়রাত বিমানঘাঁটিতে আছড়ে পড়ে ৫৯টি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র। তবে ওই বিমানঘাঁটিতে বিপুল পরিমাণ রুশ সেনার উপস্থিতি থাকলেও হতাহতের মধ্যে কোনও রুশ সেনা ছিল না। আবার হতাহতের সংখ্যার সঙ্গে হামলার ব্যাপকতাও সাজুয্যপূর্ণ মনে হয়নি। ৫৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় নিহত হন ছয় সিরীয় সেনা।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস বলেছেন, রাসায়নিক গ্যাস হামলার স্বাধীন তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে, আসাদ সরকারই এ হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হামলার জন্য তারাই দায়ী। তবে সিরিয়া ও তার মিত্র রাশিয়ার পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দুনিয়ার বক্তব্য নাকচ করে দেওয়া হয়।

এদিকে বুধবার হোয়াইট হাউসে ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ-এর সঙ্গে ট্রাম্পের যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে আসাদ বাহিনীর কেমিক্যাল হামলার বিষয়ে ট্রাম্পের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিবিসি’র সাংবাদিক জন সোপেল। তিনি ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি মনে করেন; রাশিয়ার অজ্ঞাতসারে সিরীয় বাহিনী এ ধরনের হামলা চালিয়েছে? উত্তরে ট্রাম্প বলেন, আমার মনে হয় এটা অবশ্যই সম্ভব। তবে বাস্তবে এমনটা ঘটার সম্ভাবনা কম। তবে আমি মনে করতে চাই, তারা এটি জানতো না।

জেন্স স্টোলটেনবার্গ-এর সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে ন্যাটোর প্রতিও নিজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, পশ্চিমা দুনিয়ার সামরিক জোট ন্যাটো আর অচল নয়। অনেক আগে আমি এ সংস্থাটি নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলাম। সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এখন তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তখন আমি বলেছিলাম ন্যাটো অচল। তবে এখন আর এটি অচল নয়। সন্ত্রাসবাদের হুমকি ন্যাটোর গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা আরও কী করতে পারে; সে ব্যাপারে সংস্থাটির মহাসচিবের সঙ্গে আমার গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। তবে ইরাক এবং আফগানিস্তানে আমাদের অংশীদারদের জন্য ন্যাটোর আরও করণীয় রয়েছে।

নিজের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্রদের অস্বস্তি কাটাতেই ট্রাম্প এমন বক্তব্য দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ন্যাটোভুক্ত অনেক দেশের আশঙ্কা, রুশ ঘনিষ্ঠ ট্রাম্প প্রশাসন ইউরোপকে উপেক্ষা করে শুধু মার্কিন স্বার্থ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবে।

নির্বাচনি প্রচারণায় ইসলামবিদ্বেষ ও অভিবাসীবিদ্বেষের পাশাপাশি ন্যাটোরও কঠোর সমালোচনা করেন ট্রাম্প। সে সময় তিনি ন্যাটোকে পুরনো ধাঁচের ও অকার্যকর সংগঠন বলেও মন্তব্য করেছিলেন। তবে বুধবার ন্যাটো মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাতে দৃশ্যত আগের অবস্থান থেকে সরে এলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ন্যাটোর সবচেয়ে বড় তহবিল যোগানদাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এর ব্যয়ের ৭০ শতাংশই বহন করে দেশটি। নির্বাচনি প্রচারণায় এর কঠোর সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেছিলেন, ন্যাটো যদি তার ব্যয় বাবদ মার্কিন নির্ভরতা কমিয়ে না আনে, তাহলে তাদের দিক থেকে ওয়াশিংটনের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে ভাবার সুযোগ রয়েছে। বুধবারের সংবাদ সম্মেলনেও তিনি ন্যাটোর প্রয়োজনীয় তহবিলের যোগান দিতে সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সূত্র: বিবিসি, সিএনএন।

/এমপি/

সম্পর্কিত
বিরল সূর্যগ্রহণ দেখতে নায়াগ্রা জলপ্রপাতে জড়ো হবেন ১০ লাখ দর্শনার্থী
ক্রিমিয়া উপকূলে রুশ সামরিক উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত
হোয়াইট হাউজের বিড়াল নিয়ে বই প্রকাশ করবেন মার্কিন ফার্স্টলেডি
সর্বশেষ খবর
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!