পাকিস্তানে আবারও ব্লাসফেমি তথা ধর্ম অবমাননার গুজবে উত্তেজিত জনতার হামলার শিকার হলেন এক ব্যক্তি। উত্তরাঞ্চলীয় একটি শহরে শুক্রবার (২১ এপ্রিল) জুমার নামাজ চলার সময় তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয় এবং গণপিটুনির মুখে পড়েন তিনি। অবশ্য শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রাণে বেঁচে যান ওই ব্যক্তি। সেসময় ছয় পুলিশ সদস্যও আহত হন। পুলিশের ধারণা, গনপিটুনির শিকার ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন। এ নিয়ে পাকিস্তানে এক মাসে তিনটি ধর্ম অবমাননার অভিযোগ সংক্রান্ত হামলার ঘটনা ঘটলো। ধর্ম অবমাননার গুজবে চলতি মাসেই গণপিটুনিতে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও গুলিবিদ্ধ হয়ে এক শিয়া ধর্মীয় নেতা নিহত হন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, শুক্রবার রশীদ আহমেদ নামের ওই ব্যক্তি চিত্রালের স্থানীয় একটি মসজিদে প্রবেশ করেন এবং একটি বড় ঘোষণা দেবেন বলে জানান। এরপর তিনি নিজেকে একজন ত্রাণকর্তা হিসেবে ঘোষণা দেন এবং বলেন নিজের অনুসারীদের নেতৃত্ব দিয়ে স্বর্গে নিয়ে যাবেন। এর পর পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যেই তা সহিংসতায় রূপ নেয়। গণপিটুনির মুখে পড়েন রশীদ আহমেদ। বিক্ষুব্ধদের লক্ষ্য করে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা কাঁদানে গ্যাস, ফাঁকা গুলি ছুড়তে থাকেন। সে সময় ৮ বিক্ষোভকারী নিহত হয়। বিক্ষুব্ধরা স্থানীয় পুলিশ সদর দফতরেও হামলা চালান। রশীদ আহমেদকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, আগে রশীদ আহমেদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্সা করা হবে। যদি তিনি মানসিকভাবে সুস্থ হন তবে তাকে ব্লাসফেমি আইনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে ব্লাসফেমি বেশ স্পর্শকাতর ইস্যু। এর বিরুদ্ধে কঠোর সাজার বিধান রয়েছে। তবে প্রায়সময় ব্লাসফেমির অভিযোগ এন বিচারবহির্বুত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। আল জাজিরার হিসেব অনুযায়ী, ১৯৯০ সাল থেকে পাকিস্তানে ব্লাসফেমির অভিযোগে প্রায় ৭০ জনকে হত্যা করা হয়েছে।
/এফইউ/